admin
- ৩১ অক্টোবর, ২০২২ / ১৯৯ Time View
Reading Time: 2 minutes
আব্দুল্লাহ আল মামুন, খাগড়াছড়ি:
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়িতে ভাগিনার প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে নিজ বসতভিটা থেকে বিতাড়িত। মনোয়ারা বেগম(৫৫) নামের এক অসহায় গৃহবধূ দিশেহারা অবস্থায় ন্যায় বিচারের আশায় দিনের পর দিন বিভিন্ন মহলে ধরণা দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রতারণার শিকার হয়ে উপজেলার ফাতেমা নগর গ্রামের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম একই এলাকার ভাগিনা মো. জাহাঙ্গীর আলম(অন্তর) এর বিরুদ্ধে জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন দপ্তরে দাখিলকৃত আবেদন সুত্রে জানা গেছে, মৃত খোকন মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম সম্পর্কে জাহাঙ্গীরের মামী। দীর্ঘ দিন একই বাড়িতে বসবাস করার সুবাদে সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রায় এক বছর পূর্বে মৃত মামার নামীয় বানিজ্যিক প্লট মামীর নামে নাম পরিবর্তন করে দেয়ার কথা বলে কৌশলে নিজ নামে নাদাবীনামা করে নেয় জাহাঙ্গীর। সোমবার(৩১ অক্টোবর) সরেজমিনে পানছড়ির ফাতেমা নগরে মনোয়ারা বেগমের মেয়ে হাছিনা বেগমের বাসায় অবস্থানকালে বলেন, আমার স্বামী মোঃ খোকন মিয়া বিগত ০৭/১১/২০২০ইং মৃত্যু বরণ করার ৪০দিন পর ঘরজামাই ভাগিনা জাহাঙ্গীর আলম(৪৫) পিতা-মৃত বদিউল আলম, পানছড়ি মোল্লা পাড়া তার শশুরবাড়িতে আমাকে বেড়াতে নিয়ে আসে। আমার দেখাশোনা করার মতো কোনো ছেলে-সন্তান না থাকায় আমি ভাগিনাকে আমার বাসায় থাকতে বলি। তখন থেকে আমরা একত্রে বসবাস করে আসছি। কিছুদিন পর আমার স্বামীর নামে পানছড়ি বাজারে ৯৮নং বাজার প্লটটি যা আমার স্বামী প্রায় ১০বৎসর আগে শফিকুর রহমানের নিকট ভাড়া দিয়ে আসছে। বর্তমানে ০৯/০১/২০২১ইং পূণরায় নতুন করে আমার সাথে ১লক্ষ টাকা জামানতে ৩হাজার টাকা মাসিক ভাড়ায় ৫বৎসরের জন্য চুক্তিনামা সম্পাদন করা হয়েছে। এ প্লটটি আমার স্বামীর নাম থেকে আমার নামে নাম পরিবর্তন করে দেয়ার কথা বলে ভাগিনা জাহাঙ্গীর প্রথমে ২লাখ টাকা ও পরে আরোও ৪লাখ টাকা নিয়ে নিজের নামে বন্দোবস্তী করে নেয় ও আমাকে আমার স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমি বর্তমানে ঘর-বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। বর্তমানে আমি সুবিচারের আশায় দ্বারেদ্বারে ঘুরছি।
বিভিন্ন সংস্থায় বিচার দাবি করলে গ্রাম্য শালিসি বৈঠকে বিচারকগণের সম্মুখে জাহাঙ্গীর স্বীকার করে আমি মামীর অজান্তে স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নিয়ে দানপত্র হলফনামা সম্পাদন করি। এরপর গত ১৬/০৬/২০২২ইং জাহাঙ্গীর হলফনামামূলে তার নামে সৃজিত কবুলিয়ত বাতিল করে ২৯২নং(পুরাতন-৯৮) দোকান প্লটটি মূল মালিক মামী মনোয়ারা বেগমকে ফেরত প্রদানক্রমে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়ার অঙ্গীকার করে। মনোয়ারা বেগমের মেয়ে হাছিনা বেগম বলেন, আমার পিতার মৃত্যুর পর আমার মায়ের দেখাশোনার জন্য ঘরজামাই হয়ে থাকা আমার ফুপাত ভাই জাহাঙ্গীর আলম শশুর বাড়ী থেকে আমার বাবার বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে থাকে। একপর্যায়ে আমার সহজ-সরল মাকে ফুসলিয়ে আমার মৃত পিতার নামীয় বানিজ্যিক প্লট মা’র নামে পরিবর্তন করে দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ও কৌশলে আমার পিতার নামের দোকান প্লটটি নিজের নামে লিখে নিয়ে আমার মাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে। আমি আমার পিতার একজন ওয়ারিশ হিসেবে আমাদের সম্পদ ফেরত চাই। এ ব্যাপারে এলাকার গণ্যমান্য ও প্রশাসনের নিকট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক সুবিচার কামনা করছি।
দোকান প্লটের ভাড়াটিয়া মোঃ শফিকুর রহমান জানান, প্রায় গত ১০বৎসর যাবত মো. খোকন মিয়ার নিকট হতে ৯৮নং দোকান প্লটটি ভাড়া নিয়েছি। বর্তমানে তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের নিকট হতে পূণরায় ভাড়াটিয়া চুক্তিনামা করেছি। এ বিষয়ে মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের (অন্তর)সাথে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার মামী মনোয়ারা বেগমকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হয় নি। বর্তমানে আমরা একই বাড়িতে বসবাস করছি। তিনি নিজ ইচ্ছায় দোকান প্লটটি আমাকে নাদাবীনামামূলে হস্তান্তর করেন। কিন্তু পরে অন্যদের উস্কানীতে ভূল স্বীকারক্তি দিয়েছি মর্মে আমার নামে মিথ্যা হলফনামা সৃজন করা হয়েছে।