বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪২ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা:
বিক্রেতাদের দাবী পশুর দাম কম বলছে, আর ক্রেতার দাবি পশুর দাম বেশি চাচ্ছে। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ নিয়ে এবারে পাবনার কোরবানীর হাটে চলছে বেচা-কেনা।
পাবনায় কোরবানীর হাটে প্রচুর গরু-ছাগল আমদানি হলেও ক্রেতা নেই বললেই চলে। খামারী-ব্যপারীদের অভিযোগ এবারে কোরবানি পশু ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। যেসব লোকজন হাটে আসছে বেশিরভাগ ক্রেতা দাম শুনে চলে যাচ্ছে। হাট ইজারাদারদের তথ্যে জানা যায়, ইতিপুর্বে ঈদের ১৫/২০দিন আগে থেকেই বিভিন্ন জেলার ব্যাপারীদের আনাগোনা থাকলেও এবারে একেবারেই নগন্য। পরিস্থিতি এমন চলতে থাকলে পাবনায় প্রচুর কোরবানির পশু অবিক্রিত থেকে যাবে। পাবনার বেশ কয়েকটি হাট ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে। পাবনায় ২৪ হাজার খামারে ৬ লাখ পশু কোরবানির জন্য প্রস্তত করা হয়েছে। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। পাবনার হাটগুলোতে প্রচুর পরিমানে কোরবানীর পশু উঠতে শুরু করেছে। যে পরিমান পশু হাটে বিক্রির জন্য আনা হয়েছে, তার অর্ধেক পরিমানের ক্রেতার দেখা মিলছে না। তারপরেও যে সব ক্রেতারা দর-দাম জিজ্ঞাসা করছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ পশু না কিনে ফিরে যাচ্ছে। বিক্রেতারা বলছে হাটে ব্যাপারী বা ক্রেতা নেই বললেই চলে। এ কারনে পশু বিক্রি হচ্ছে না। এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ গত বছরের চেয়ে এবারে গরুর দাম মন প্রতি ৫/৭ হাজার টাকা বেশি। তাদের বাজেট ঘাটতির কারনে বিকল্প চিন্তা করতে হচ্ছে। গো-খাদ্যের দাম ব্যাপক বৃদ্ধির কারনে পশুর দাম আগের চেয়ে বেশি নিতে হচ্ছে, বলছেন খামারীরা। এদিকে বড় গরুর ক্রেতা নেই বললেই চলে। তবে মাঝারি ও ছোট সাইজের গরুর চাহিদা রয়েছে। পাবনার বিভিন্ন খামারসহ বাসা বাড়িতে একটি দুটি করে গরু মোটা তাজা করন করা হয়। এক একটি গরুর ওজন ১৫ থেকে ৩০মন হয়ে থাকে। এসব গরুর চাহিদা এ বছরে একেবারেই কম। তাই বড় গরুর মালিকদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। এবারে বড় গরু গুলো বিক্রি করতে না পারলে আগামীতে গরু মোটাতাজা করন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। শুধু তাই না, ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এ অবস্থা চলতে থাকলে অর্ধেক পশু অবিক্রিত থেকে যাবে। এদিকে গো খাদ্যের দাম ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় পশুর দামও অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেছে। এবারে কোরবানীতে পশু বিক্রি করতে না পারলে অনেকেই খামার বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে।
পাবনা জেলা প্রানী সম্পদ বিভাগ ক্রেতা-বিক্রেতাদের সহায়তা ও পশুর চিকিৎসা সেবা দিতে প্রতিটি হাটে তাদের মেডিকেল টিম কাজ করছে। এদিকে পাবনার তফশীলি ব্যাংকগুলো জাল নোট সনাক্ত করা ও ব্যবসায়ীদের যে কোন সমস্য সমাধানের জন্য তাদের লোকবল কাজ করছে।
হাটের ইজারাদারগন বলছেন, ব্যাপারীদের সুবিধা দিতে তারা সরকার নির্ধারিত মুল্যের চেয়ে কম মুল্যে খাজনা আদায় করছেন। তারা আরো জানান, ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দামের পার্থক্য থাকায় বেঁচা-কেনা কম হচ্ছে।
প্রাণীসম্পদ দপ্তর জেলা ট্রেনিং কর্মকর্তা, ডাঃ কৃষ্ণ মোহল হালাদার জানান, পাবনায় ২৪ হাজার খামারে দেশীয় পদ্ধতিতে ৬ লাখ পশু কোরবানির জন্য প্রস্তত করা হয়েছে। জেলার চাহিদা পুরন করে ৩ লাখ পশু বিভিন্ন জেলায় চলে যাবে বলে প্রানী সম্পদ বিভাগের ধারনা।
খামারীরা মনে করেন, কোরবানীর জন্য প্রস্তত করা পশু এবারে যদি অবিক্রিত থেকে যায়, তাহলে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। অন্যদিকে এসব পশু খাদ্য ক্রয় করতে গিয়ে নতুন করে দেনার দায়ে জর্জরিত হবেন। পথে বসতে হবে অনেক খামারীকে। এতে করে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাবে এবং দেশের অন্যতম বৃহত্তম পশু সম্পদ সমৃদ্ধ এলাকা পশু পালনে থেকে বিরত থাকবে। সরকারী সহায়তা পেলে ও পশু খাদ্যের দাম কমানো হলে পাবনার খামারীরা ক্ষতি পুষিয়ে আবারও তারা পশু পালনে ব্যস্ত হয়ে উঠবেন প্রত্যাশা অভিজ্ঞ মহলের।