শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৯ অপরাহ্ন

News Headline :
কুষ্টিয়ার নিখোজ ২ এএসআই এর লাশ পদ্মা নদী থেকে উদ্ধার এবার প্রকাশ্যে এলেন ইবি শিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারি গোদাগাড়ীতে বিপুল পরিমান গাঁজা-সহ গ্রেফতার মাদক কারবারী ডালিম আমরণ অনশনে রাবি আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা পুলিশ কর্মকর্তা বিজয়-উৎপলকে ধরলেই মিলবে কাজেম হত্যার উত্তর: দাবি চিকিৎসকদের সিরাজগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে  বিক্ষোভ ও মানববন্ধন  দেশদ্রোহী খুনি হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করতে হবে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে–আহসান হাবিব লিংকন রংপুরে জমি লিখে না দেয়া মাকে বেধড়ক পেঠালো ছেলে ও ছেলের বউরা শ্রীবরদীতে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এতিম ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ মান্দায় মসজিদ উন্নয়ন প্রকল্পের সাড়ে ৩শো গাছ উপড়ে ও ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ

পাবনায় যুবলীগ কর্মীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা। হত্যাকান্ডের আড়ালে কে ?

Reading Time: 3 minutes

নিজস্ব সংবাদদাতা :
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পাবনা শহরের রাধানগর এলাকায় রনি হোসেন ওরফে ভাস্তে রনি(৩২) নামের এক যুবলীগ কর্মীকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা।
বৃহস্পতিবার (২০মে) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে রাধানগর ডিগ্রি কলেজ বটতলা মোড়ে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত রনি পৌর সদরের নারায়নপুর মহল্লার মৃত জালাল হোসেনের ছেলে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নারায়নপুর এলাকার জালাল হোসেনের ছেলে রনি ওরফে ভাস্তে রনি এবং একই এলাকার রেজাউল ইসলামের ছেলে মিরাজুল ইসলাম গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাধানগর ডিগ্রি কলেজ বটতলা মোড়ে একটি দোকানে রেসান ও শিমুলসহ বসেছিলেন রনি। এ সময় মিরাজুলের নেতৃত্বে দু’টি মোটর সাইকেলযোগে ৬ জন যুবক এসে রনি ও তার সাথে থাকা যুবকদের উপর হামলা করে। এ সময় রনিকে এলোপাথারী ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা রনিকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আরো জানান, ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের ও অভিযুক্তদের আটকের অভিযান চলছে।
কে এই রনি ওরফে ভাস্তে রনি। পাবনা নারায়পুর এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে। ছোটকাল থেকেই এলাকা ভিত্তিক রাজনীতির সাথে জড়িত। নারায়নপুরে সম্প্রতি যুবলীগের মধ্যে দুটি গ্রুপ হয়। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দেন মিরাজুল ইসলাম। মিরাজুল ইসলাম যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক শিবলির রাজনীতির সাথে জড়িত। অন্যদিকে ভাস্তে রনি যুবলীগ নেতা রাধানগরে একক নেতৃত্বদানকারী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে রাজনীতি করে থাকে। আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে, শিবলীর দীর্ঘদির গ্রুপিং চলে আসছে। গ্রুপিং এর জের ধরে আওয়ামীলীগ নেতা ও পরিবহন মালিক মামুন গ্রুপের আব্দুস সাত্তারকে গত বছরের গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে প্রতিপক্ষরা। এই গুলি করে হত্যা চেষ্টার আসামী মিরাজুল ইসলাম। সম্প্রতি এক শিল্পপতির মধ্যস্থতায় সাবেক মেয়রের নেতৃত্বে মামুন-শিবলী ঈদের পর দ্বন্দ মিটে এক সাথে রাজনীতি করার প্রত্যায় ব্যাক্ত করেন। এই দ্বন্দ নিরসনের পর ফটোসেশন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ব্যাপক ভাইরালও হয়।
মিরাজুল, সে ওই এলাকার রেজাউল ইসলামের ছেলে। দুধর্ষ মিরাজুল প্রায় একযুগ পুর্বে পলিটেকনিকের ভিতরে মাছ চাষ নিয়ে মীর্জা নামে একজনকে দিনে দুপুরে কুপিয়ে খুন করে। এরপর রাধানগরের কালে ফরিদ ও দিনে দুপুরে পৈলানপুরে অরিন হত্যাকান্ডে নেতৃত্ব দেন এই মিরাজুল। মানুষ হত্যা তার কাছে যেন নেশায় পরিনত হয়েছে। সর্বশেষ দিনের আলোয় বিকেল পৌনে ৫টায় রনিকে হত্যা করা হয়। ৩টি হত্যা মামলার আসামী হলেও জেলে থাকার ইতিহাস একবারেই কম। হত্যা ছাড়াও তার নামে রয়েছে একাধিক মামলা। কথিত আছে তার অপরাধের ক্ষিপ্রতা দেখে নিজেকে শক্তিশালী করতে কতিপয় প্রভাবশালী তাকে আশ্রয় প্রশয় দিয়ে থাকে। এজন্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারিবাহিনীর নজরদারির বাইরে থেকে হরহামেশা অপরাধ করে থাকে মিরাজুল। রনিকে হত্যার ঠিক আগ মুহুর্তে মিরাজুল কোন এক নেতার কাছে মোবাইলে হত্যার অনুমতি নিয়ে মিশনে নেমে পড়ে। এরপর রনিকে চাকুদিয়ে খুচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। রনিকে হত্যার সময় তার সাথে থাকা দুইজনকেও একই কায়দায় ছুরিকাঘাত করতে গেলে তারা প্রানভয়ে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়া দুই জনের বক্তব্য অনুযায়ী হত্যার আগে মিরাজুল কার সাথে কথা বলেছিল, তার ফোন কল লিষ্ট তুললেই আদেশদাতার নাম বেরিয়ে আসবে। তবে পাবনায় এ পর্যন্ত যতগুলো হত্যাকান্ড হয়েছে, এরমধ্যে পুলিশি তদন্তে আদেশ দাতা ও অর্থদাতারা সব সময় থেকে গেছে ধরা ছোয়ার বাইরে। এ জন্য পাবনা শহরের একাধিক চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের আসামীরা প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে।
রনি হত্যাকান্ডে কার লাভ কার ক্ষতি ? দুই মেরুর দুই সিংহ এক ঘাটে জল খেলেও কেন রনির প্রান গেল প্রশ্ন স্থাণীয় রাজনৈতিক নেতাদের। যখন দুই নেতার দ্বন্দ চরমে, তখন রনিকে হত্যা করার সাহস দেখাতে পারে নাই। অথচ দুই নেতার মিল হওয়ার পর রনিকে হত্যার পরিকল্পনা, স্থানীয় রাজনীতিবীদরা কোনভাবেই হিসাব মিলাতে পারছে না। স্থানীয় অনেকেই মনে করেন, এই হত্যাকান্ডের পিছনে কোন এক সুক্ষ ষড়যন্ত্র কাজ করছে। এ হত্যাকান্ডে রনির পরিবারের অপুরনিয় ক্ষতি হয়ে গেল, সেই সাথে আব্দুল্লাহ আল মামুনের প্রতি তার কর্মীরা একটুু হলেও আস্থাহীনতায় পড়বে। তাহলে লাভ হবে কার? বর্তমান সময়ে মামুনের খুব আস্থাভাজন ছিল নিহত রনি। তবে স্থানীয়রা মিরাজুলের একের পর এক হত্যাকান্ড কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছে না। স্থাণীয়রা মিরাজুলসহ তার আশ্রয়দাতাকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দাবি করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com