নুরুজ্জামান লিটন,নওগাঁ:
নওগাঁর বদলগাছীতে জাল সনদ ব্যবহার করে চাকরি করা এক শিক্ষিকা ফাতেমা বেগমের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল প্রমাণিত হয়েছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষিকা চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে—বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পার্থ কুমার তাকে ইস্তফা দিতে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন। সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ অক্টোবর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এক যাচাই প্রতিবেদনে জানায়, ফাতেমা বেগমের ২০০৬ সালের বাংলা বিষয়ে ২য় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার রোল নম্বর ২১০১০১১৭-এর প্রত্যয়নপত্রটি জাল ও ভুয়া। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, “দাখিলকৃত প্রত্যয়নপত্রটির সাথে সংরক্ষিত ফলাফলের মিল নেই, এটি জাল ও ভুয়া হিসেবে প্রতীয়মান।” ফাতেমা বেগম উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবু খালেক দুলুর স্ত্রী। অভিযোগ রয়েছে, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ২০০৮ সালে তিনি ওই জাল সনদ ব্যবহার করে চাকরি নেন এবং ২০২০ সালে উচ্চতর স্কেলও গ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে। এনটিআরসিএর প্রতিবেদনের পর গত ১৮ অক্টোবর তিনি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পার্থ কুমারের মাধ্যমে ইস্তফাপত্র জমা দেন। অভিযোগ আছে, প্রধান শিক্ষক পার্থ কুমার জাল সনদধারী শিক্ষিকাকে সহযোগিতা করতে ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট দেখিয়ে চাকরি ছাড়ার পথ সহজ করে দেন। এর আগে স্থানীয় এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তার সনদ যাচাইয়ের জন্য পাঠান। যাচাইয়ের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ায় জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়ালের হস্তক্ষেপে অবশেষে এনটিআরসিএ প্রতিবেদন দেয়। বিষয়টি জানতে চাইলে শিক্ষিকা ফাতেমা বেগম মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান এবং ফোন লাইন কেটে দেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পার্থ কুমারও ফোনে কথা বলতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। বিদ্যালয়ের সভাপতি অলি বলেন, “সে ইস্তফা দিয়েছে কিনা আমি জানি না। তবে তার সনদ জাল প্রমাণিত হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, “অফিসিয়ালি এখনো কোনো চিঠি হাতে পাইনি। চিঠি পেলে নির্দেশ মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”