শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মোঃ হেলাল উদ্দিন সরকার , ধুনট বগুড়া :
ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী গ্রামের ইছামতি নদীতে একাধিক ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে নদীর গভীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে।এতে ঐ গ্রামের নদীর তীরবর্তী শতাধিক হেক্টর ফসলী জমি ও নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে।এসব বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী। তবে স্থানীয়দের দাবি অভিযোগ করার পর নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরেজমিন পরিদর্শন করলেও কোন ব্যবস্থা নেননি। জানা গেছে, ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের চৌকিবাড়ী গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ইছামতি নদী। এই নদীর নাব্যতা ফেরাতে গত তিন মাস আগে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়নে ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী গ্রামে ইক্সেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে ইছামতি নদী খনন ও তীর বেধে দেওয়া হয়। কিন্তু এর কিছু দিন পরই স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি ঐ নদীতে পাশাপাশি ৭টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর গভীর তলদেশ থেকে পাইপের সাহায্যে বালু উত্তোলন করছে। নদী থেকে বালু উত্তোলন করে চৌকিবাড়ী পূর্ব নয়াপাড়া ফসলী মাঠে ও চৌকিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জমা করে সেখান থেকে বিক্রি করা হচ্ছে। এদিকে নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১০ দিন আগে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানে আলম সেখানে পরিদর্শন করলেও নদীর ভিতর সেই অবৈধ ড্রেজার মেশিনগুলো জব্দ বা বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি। সেই দিন নদীর কিছু দূরে অবস্থিত ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থেকে বালু উত্তোলনের কারনে সনি নামে এক ড্রেজার মালিকের মেশিন জব্দ করেন ইউএনও পরবর্তীতে বালু উত্তোলনের দায়ে তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অতিরিক্ত আরো ১০ হাজার টাকা আদায় করা হয়। সরকারি আইন অনুযায়ি বালু উত্তোলনের সর্বনিম্ন জরিমানা ৫০ হাজার টাকা হলেও তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে ওই নদীতে পাশাপাশি ৭টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হলেও ইউএনও কোন ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা।বালু উত্তোলনের বিষয়ে চৌকিবাড়ী গ্রামের ভূমি মালিক আদম জানান, দীর্ঘদিন ধরে ছোট্ট এই নদীতে প্রায় ৭/৮টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর গভীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলনের কারনে কৃষকের শতাধিক হেক্টর ফসলী জমি এখন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া সরকারিভাবে নদী খনন ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্প ধ্বসে যাচ্ছে। তবে স্থানীয়দের ধারনা বিশেষ কোনো মহলকে ম্যানেজ করেই এই বালু ব্যবসা চালানো হচ্ছে। চৌকিবাড়ী গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান,এই বালু উত্তোলনের বিষয়ে ইউএনও কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় আমরা গত বুধবার এমপি হাবিবর রহমানের ছেলে ধুনট উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল সনি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকনের মাধ্যমে আবারো ইউএনও জানে আলমকে বিষয়টি জানাই। কিন্তু এরপরও ইউএনও কোন ব্যবস্থা নেননি। পরে আমরা গ্রামবাসী জানতে পারি ইউএনও জানে আলমকে সন্তুষ্ট করেই তারা প্রকাশ্যে এই বালুর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এতে এদিকে যেমন নদীর তীরবর্তী শতাধিক হেক্টর ফসলী জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে, তেমনি নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজও ধ্বসে যাচ্ছে।এ বিষয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানে আলম বলেন, ওই গ্রামে একবার পরিদর্শণ করা হয়েছে। কিন্তু ব্যস্ততার কারনে অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি।