রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৭ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
আবুল হাশেম,রাজশাহীঃ
রাজশাহীর বাঘায় পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া (পচানো) নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পাট চাষিরা। পাট কাটার মৌসুম শুরু হলেও পানির অভাবে পাট কাটতে পারছেন না তারা। আবার পাট কেটে জাগ দেওয়ার জায়গা না থাকায়। জমিতেই নষ্ট হচ্ছে পাট। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাড়ির পুকুরেও জাগ দেওয়া হচ্ছে পাট তবে সেখানেও নেই পর্যাপ্ত পানি।এ ছাড়াও নদ-নদীর পানিতেও দেওয়া হচ্ছে পাটের জাগ। কেউ পুকুর বা জলাশয় লিজ নিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন। আবার কেউ পাট কেটে নছিমন বা ভ্যানে করে গর্তে বা নালায় শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি জমিয়ে পাট জাগ দেওয়া শুরু করেছেন। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ার পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে সময়।বাঘায় কয়েকজন চাষির কথা বলেলে তারা জানান , পাটের ফলন ভালো হলেও পানি সংকটে পাট জাগ দিতে পারছেন না। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এবং নদ-নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় খাল-বিলসহ জলাশয় অনেকটাই পানিশূন্য। ফলে পাট জাগ দেওয়া যাচ্ছে না। জমি থেকে দূর-দূরান্তের জলাশয়ে নিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে।ফলে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে অনেক।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় পাটের চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৩৪৯০৩ হেক্টর জমি তবে এ বছর পাচ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়। উপজেলার পাকুড়িয়া এলাকার আব্দুর রহমান নামের এক পাট চাষি বলেন, ‘পানির অভাবে আমরা পাট কাটা শুরু করতে পারছি না। পাট কাটার সময় চলে আসায় কিছু কিছু কাটা শুরু করেছি। অনেক দূর থেকে পাট কেটে বাড়ির কাছে নিয়ে এসেছি।এখানে আমাদের একটি নালা/গর্ত আছে, সেখানে সেচ মেশিন দিয়ে পানি জমিয়ে পাট জাগ দিচ্ছি। এতে অনেক খরচ বেশি হবে। এখন দাম কেমন পাব এটাই দেখার বিষয়।’পাট চাষি রফিক উদ্দীন বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। তবে এ বছর বৃষ্টি খুবই কম হয়েছে। তাই এলাকার খাল-বিল, জলাশয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পানি নেই। এ কারণে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে যেসব স্থানে ছোট ছোট নালা বা গর্ত রয়েছে সেখানে মেশিনের সাহায্যে পানি জমিয়ে পাট জাগ দেওয়া লাগছে। এবার শুরুতেই যদি তিন হাজার টাকার নিচে পাটের দাম থাকে তাহলে আমাদের অনেক লোকসান হবে।’
উপজেলার সড়ক- ঘাট এলাকার কৃষক আফসার আলী বলেন, ‘তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। জমির আশপাশের নালায় কোনো পানি নেই। তাই ভ্যানগাড়িতে করে পাট নিয়ে দূরের একটি পুকুর দুই হাজার ৫০০ টাকায় লিজ নিয়েছি, সেখানে জাগ দিতে যাচ্ছি। এতে সময় ও টাকা অনেক বেশি খরচ হচ্ছে। আবার নির্দিষ্ট সময়ে পাট কাটতে নষ্ট হওয়ারও সম্ভাবনা দেখছি।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, এ বছর তুলনামূলক বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। তবে আশা করা যাচ্ছে বৃষ্টিপাত হবে। আর পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত হলে পাট জাগ দেওয়ার সমস্যা কেটে যাবে। এ ছাড়া তিনি পাট চাষিদের আধুনিক প্রযুক্তি রিবন রেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে পাট জাগ করার আহ্বান জানায়।