শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মোঃ জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া:
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশব্যাপী চলছে কঠোর লকডাউন। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। এ অবস্থায় নিরাপদে বাড়ি ফেরা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে ক্যাম্পাসের আশপাশে অবস্থানরত কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে (বাস) বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কঠোর লকডাউনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের বিভিন্ন মেসে অবস্থান করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। এ দুই জেলায় করোনা সংক্রমের ঊর্ধ্বগতি ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে মেসে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। অনেক শিক্ষার্থী জ্বরসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে মেসে অবস্থান করছেন বলেও জানা গেছে। এতে অভিভাবকরাও সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। তাই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব পরিবহনযোগে বিভাগীয় শহরে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে গুগল ফর্মে শিক্ষার্থীদের তথ্য চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। সোমবার (১২ জুলাই) শিক্ষার্থীদের গুগল ফর্মে তথ্য পূরণের সময় শেষ হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থানরত বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মাঈদুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে কোরবানির ঈদের পর হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে আমি রংপুর থেকে চলে আসি। একইসাথে টিউশনি করাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের মেসগুলো শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক কম। ঈদের পরে এলে থাকার জায়গা পাওয়াটা মুশকিল হয়ে যাবে। সেটা ভেবে আমিসহ আমার বন্ধুবান্ধবরা মেসে চলে আসি। তাছাড়া বাড়ি থেকেও তেমন লেখাপড়া হয় না। কিন্তু হঠাৎ করে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউনের ঘোষণা চলে আসে। দিনে দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি।
দাওয়াহ বিভাগের আল মামুন নামে অপর এক শিক্ষার্থী আরটিভি নিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে করোনার উপসর্গ। যে কোনো সময় আমরা নিজেরাই আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারি। তাছাড়া শেখপাড়া এলাকায় বেশিরভাগ সময়ই প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যায় না। এ অবস্থায় এখানে অবস্থান করাটা আমাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সিদ্ধান্তই পারে আমাদের এ অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, প্রশাসন যেন নিজস্ব পরিবহনে আমাদের বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেয়।
এ বিষয়ে পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন আরটিভি নিউজকে বলেন, সোমবার বেলা ১২ টায় এ বিষয়ে মিটিং হবে। মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান আরটিভি নিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে এখনো পজিটিভ আছি। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সকাল ১১টায় শিক্ষার্থীদের গুগল ফরমে তথ্য পূরণের সময় শেষ হবে। এরপর এটা নিয়ে বসবো। শিক্ষার্থীদের তালিকা দেখে আমরা পরবর্তী পরিকল্পনা গ্রহণ করব। আগামী ১৪ তারিখ পর্যন্ত লকডাউন আছে। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে কী সিদ্ধান্ত হয়, সেটাও আমাদের দেখতে হবে।
জানা গেছে, গত ৭ জুন আটকে পড়া এসব শিক্ষার্থীর বাড়ি যাওয়ার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানিয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রমৈত্রী। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম শিক্ষার্থীদের তালিকা করে পরবর্তী পরিকল্পনা নেওয়ার কথা বলেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের তালিকা চেয়ে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) থেকে আগামী ১২ জুলাইয়ের মধ্যে গুগল ফরমে শিক্ষার্থীদের আবেদন করার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।