বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর ব্যুরো:
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বৃহত্তর রংপুরের ২২ আসনসহ ১০০ আসন এবং ১০ জন মন্ত্রী ছাড়া জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে মহাজোট করে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। শনিবার বেলা আড়াইটায় নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির জরুরী যৌথসভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন। সভাশেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য, রংপুর মহানগর সভাপতি ও জেলার আহবায়ক, রংপুর সিটি মেয়র মোস্তফা বলেন, ‘বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত দলের চেয়ারম্যানের কাছে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রথমত: আমাদের সিদ্ধান্ত এই প্রহসনের নির্বাচনে না করার। আর যদি পরবর্তী স্টেজে দল মনে করে মহাজোটের ব্যানারে এই অবস্থায়ও নির্বাচনে যাবে, তাহলে মিনিমাম আমাদের ১০০ আসন আওয়ামীলীগের সাথে মহাজোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করি তাহলে রংপুর অঞ্চলের ২২ আসনসহ ১০০ আসন, ১০ টি মন্ত্রী আমাদের দিতে হবে। পাশাপাশি বৃহত্তর রংপুরের ২২ টি আসনে কোন ছাড় নয়। যেহেতু এইসব আসনের প্রত্যেকটিতে আমাদের লক্ষাধিক ভোট আছে, এইসব জায়গায় আমরা ছাড়বো কেন। এই জায়গায় ছাড় দেয়ার সুযোগ নাই। এটাকে রেখে যদি সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আমরা কনসিডার করবো নির্বাচনে যাওয়া যায় কিনা। মোস্তফা আরও বলেন, ‘ যতক্ষন পর্যন্ত আমাদের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা মাঠ পর্যায়ে কোন কর্মসূচি দিতে পারছি না। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মাঠ পর্যায়ে ইমপ্লিমেন্ট করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত করতেই জরুরী সভা। এছাড়াও সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের আলোকেই নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রাখারও সিদ্ধান্ত হয়। রওশন এরশাদ প্রসঙ্গে মোস্তফা বলেন, ‘ রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির দলীয় সিদ্ধান্ত দেয়ার কেউ নন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উনি জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তার কার্যক্ষমতা বলতে কিছু নাই। জাস্ট এটা অলংকারিক পদ। সিদ্ধান্ত দলের রেজিষ্ট্রেশন অনুযায়ী চেয়ারম্যান, মহাসচিবের। সব কিছু গঠনতন্ত্রে মেইনশন করা আছে। উনি যদি ইলেকশন করে করতে পারে, তাহলে ওনাকে কাস্তে মার্কা, বা বেলুন মার্কা বা ফুটবলর্মাকা নিয়ে ইলেকশন করতে হবে। আর যদি লাঙ্গল নিয়ে ইলেকশন করতে চান। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে লাঙ্গল মার্কা নিয় করার কোন সুযোগ নাই। এর আগে সকাল ১১ টায় শুরু হওয়া যৌথ সভা চলে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় ভাইস ভাইস চেয়ারম্যান ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসিরের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর সিনিয়র সহ সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জেলা যুব সংহতি সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মহানগর যুব সংহতি সভাপতি শাহিন হোসেন জাকির, সাধারণ সম্পাদক শান্তি কাদেরী, মহানগর ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত আসিফ, সভাপতি আমিনুল ইসলামি ছোট, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন জসিম, জেলা ছাত্রসমাজ আহবায়ক আরিফুল ইসলাম এছাড়াও আট উপজেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকৃবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।
কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ১৪ নভেম্বর ঢাকায় যৌথসভায় ৬৩ জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা চেয়ারম্যানকে জানিয়ে দিয়েছি, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা ভোটে যেতে চাই না। আমরা আর দালাল হিসেবে পুনরায় চিহ্নিত হতে চাই না। বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাংখা যেটা মানুষ চাচ্ছে, ৮০ ভাগ মানুষ চাচ্ছে যে, এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। রাতের অন্ধকারের ভোট এটা বাংলাদেশের মানুষ চাচ্ছে না। এই ধরণের ভোটে যেন জাতীয় পার্টি না যায়, আমরা সেই প্রত্যাশায় রাখতেছি, আজকের মিটিংয়ে প্রত্যেকটা বক্তাই সেই কথা জানিয়ে দিয়েছে যে, এই সরকারের অধীনে যেন জাতীয় পার্টি ভোটে না যায়। ‘আমরা চাই এককভাবে জাতীয় পার্টিকে প্রতিষ্ঠিত করে কিভাবে সুষ্ঠু এবং অবাধ নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাবো। জিএম কাদেরকে প্রধানমন্ত্রী বানাবো। যৌথসভায় রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠন এবং ৩৩ টি ওয়ার্ড, এবং জেলার আট উপজেলা, ৩ টি পৌরসভার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।