বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
ভান্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি :
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা হাসপাতালের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চলছে না সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় । নির্ধারিত ভাড়ার কয়েকগুণ বেশি টাকা রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো আদায় করেন অ্যাম্বুলেন্স চালক মনিরুল ইসলাম। অস্বস্তিতে রোগীর স্বজনরা।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে প্রাইভেট এম্বুলেন্স ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময় ব্যস্ততা দেখিয়ে রোগীদেরকে বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে বাধ্য করেন তিনি। এমন কি তার বাড়ি পিরোজপুর জেলায় হওয়ায় আধিপত্য বিস্তার করে সরকারি এ্যাম্বুলেন্স না চালিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টি.এইচ.ও) এর অস্থায়ী আউটসোর্সিং ড্রাইভার টগর চন্দ্র শীলকে দিয়ে সরকারি এ্যাম্বুলেন্স পরিচালনা করান। দীর্ঘদিনের অভিযোগের বিষয়টি সদ্য প্রকাশ্যে হলেও স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা দেখেও না দেখার ভান করছেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের ১৪৭ নং নয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ৫ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে প্রতিকার চেয়ে ভান্ডারিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামাল হোসেন মুফতির নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া পৌর শহরের মধ্যে ৩০০ টাকা, পৌরশহরের বাইরে গেলে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ১০ টাকা। সে হিসাবে ভান্ডারিয়া থেকে বরিশাল ৫০ কি. মি, যা সরকারি নির্ধারিত ভাড়া ১০০০ টাকা এবং খুলনা ১০০ কি. মি. নির্ধারিত ভাড়া ২০০০ টাকা। তবে নির্ধারিত ভাড়ার তোয়াক্কা না করে পৌর শহরের ম্যধ্যে ৫০০-৬০০ টাকা, বরিশাল গেলে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা এবং খুলনা গেলে ৪ হাজার টাকা আদায় করেন রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে। এদিকে হাসপাতালে একটি লাইফ সাপোর্ট এ্যাম্বুলেন্স সহ সরকারি এ্যাম্বুলেন্স থাকার পরেও প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্স মালিকদের সাথে যোগসাযোসে আর্থিক লাভের জন্য সরকারি এ্যাম্বুলেন্স দুরে আছে বা রোগী নিয়ে বরিশাল গেছে এ ধরনের নানা বাহানা করে বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারে পরামর্শ দেয়ার বিস্তর অভিযোগ আছে। অন্যদিকে এ্যাম্বুলেন্সের মতো জরুরি পরিবহন পরিসেবা নিয়ে এভাবেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ভান্ডারিয়া সহ পার্শবর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে সেবা নিতে এ হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজনরা। প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, রাস্তায় পড়ে থাকা দূর্ঘটনা কবলিত অসহায় এক রোগিকে ভান্ডারিয়া হাসপাতালে নিয়ে আসলে তার অবস্থা আশংঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বরিশালে রেফার করেন। রোগী অত্যন্ত গরিব হওয়ায় টি.এইচ.এ এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া ফ্রি করে দিলেও রোগীর কাছ থেকে ১০০০ টাকা নেয়া হয়। এ বিষয়ে একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সাজেদা আক্তার জানান, কিছুদিন আগে তার নানী শাশুড়ি অসুস্থ্য হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে বরিশাল নিয়েগেলে নির্ধারিত ভাড়ার তোয়াক্কা না করে অ্যাম্বুলেন্স চালক ২৫০০ টাকা নেয়। এ বিষয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক মনির হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গাড়ির তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়া সঙ্গে আরও অনেক খরচ হয়। তবু কোনো রোগীকে চাপ দিয়ে ভাড়া নেওয়া হয় না। রোগীর কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়া নেয়া হয়।
এ বিষয়ে ভান্ডারিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টি.এইচ.ও) ডাঃ কামাল হোসেন মুফতি বলেন, আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি ভাড়ায় এ্যাম্বুলেন্স চলবে। তবে তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তা কি ভাবে সমন্বয় করা যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মো. ইউসুফ জাকি এর সাথে গতকাল বুধবার দুপুরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই মুহুর্তে আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রীর মিটিংএ আছি কথা বলা যাবেনা। পরে কথা বলব।