বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন

News Headline :
ঐতিহ্যবাহী পাবনা প্রেস ক্লাবের অনিয়ম রংপুরে হারাগাছে ভূয়া আত্মীয় পরিচয় দিয়ে মামলাকারীর মামলা প্রত্যাহার ও জড়িতকে গ্রেফতারের দাবি প্রবাসী যুবকের সাথে প্রতারণা করে অর্ধযুগের কষ্টার্জিত আয় আত্মসাতের অভিযোগ এক নারীর বিরুদ্ধে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো যমুনা রেলওয়ে সেতু পোষ্য কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে নয়-ছয়; রাবিতে ফের আন্দোলনের প্রস্তুতি রাজশাহীতে পারিবারিক পুষ্টি বাগানে স্বাবলম্বী হচ্ছে গ্রামীণ প্রান্তিক নারীরা পাবনা প্রেসক্লাবের অনিয়ম তদন্তে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কমিটি গঠন মহানগরীতে স্বর্ণের দোকানে চুরির অভিযোগে জনতার হাতে আটক নারীকে পুলিশে সোপর্দ পাঁচ শতাধিক নবীন শিক্ষার্থীকে বরণ করলো হাবিপ্রবি ছাত্রশিবির মানুষকে যারা কষ্ট দেয় তাদেরকে পরিহার করুন : এ.কে.এম. আমিনুল হক

মধুমতি নদীর ভাঙনের থাবা লোকালয়ে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি,ফসলি জমি

Reading Time: 2 minutes

কামরুল হাসান, মহম্মদপুর মাগুরা :
টানা বৃষ্টি এবং উজানা থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মধুমতি নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী ভাঙনের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফলে মহম্মদপুর উপজেলার মানচিত্র থেকে ক্রমাগত হারিয়ে যাচ্ছে চরপাচুড়িয়া, মহেষপুর, হরেকৃষ্ণপুর, আড়মাঝি, রায়পুর, রুইজানি ও ভোলানাথপুর গ্রাম। গত দুই বছরে বর্ষা মৌসুমে মধুমতির ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ৪৫ টি পরিবারে শতাধিক ঘর-বাড়ি। এ বছর ভাঙনের মুখে রয়েছে অসংখ্য দোকান-পাটসহ হাজার হাজার একর ফসলি জমি। চলতি বর্ষা মৌসুমে উপজেলার ৬টি গ্রামের ২-৩ কিঃমিঃ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এদিকে বসুরধুলজুড়ি কালী মন্দির থেকে রুইজানি বিশ^াস বাড়ি প্রর্যন্তু মধুমতি নদীর তীব্র ভাঙন রোধে এলাকাবাসী জিও ব্যাগ ফেলার আবেদন করলে মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান সুজন, উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু আব্দুল্লাহেল কাফী, ইউএনও রামানন্দ পাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাঙন কবলিত স্থান পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে আশ^স্থ করার তিনদিন পার হলেও কোন কার্যক্রম চোঁখে পড়ে নাই। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
সরজমিনে শনিবার সকালে রুইজানি এলাকা পরিদর্শনে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের ভাঙনে কাশিপুর গ্রামের ছোরন মিয়া, পান্নু মিয়া, ধনি মোল্যা, ইসলাম শেখ ও জাহাঙ্গীর মোল্যার বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তারা কেউ কেউ অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন আবার কেউ রাস্তার পাশে ছাপড়া পেতে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। অন্যদিকে পানি বৃদ্ধির কারনে নদী ভাঙন ক্রমাগত বেড়েই চলছে। ভাঙন ভয়াল আকার ধারণ করায় নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে চরম আতংক। এ ছাড়া উপজেলার চরপাচুড়িয়া, মহেষপুর, কাশিপুর, ভোলানাথপুর, আড়মাঝি, হরেকৃষ্ণপুর, চরপাচুড়িয়া ও রুইজানি নদী তীরবর্তী এসব এলাকার ভাঙনকবলিত অধিবাসীদের এখন দিন কাটছে চরম আতংকে। এসব গ্রামের মসজিদ,মন্দির, ইদগাহসহ হাজার হাজার একর ফসলি জমি ও বসত-বাড়ি এবছর বেশী ভাঙনের কবলে পড়েছে। এলাকাবাসীর দাবী মধুমতি নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে কার্যকারী পদক্ষেপের আকুতি থাকলেও ভূমিকা রাখছেন না স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক রিয়াজুর রহমান বলেন, নদী ভাঙন দেখতে দুরাগত এবং কাছের কৌতুহলি মানুষগুলো দেখতে ভীড় করলেও অসহায় মানুষের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি কেউ। ভাঙনের সম্মুখ দ্বারে জীবনের ঝুকি নিয়ে বসবাস করছেন, ছয় গ্রামের শরিফুল, আক্কাস আলী, জয়নাল আবেদীন, মাফুজার, হান্নান, জাহাঙ্গীর, আলমগীর, ফরিদ, হারুন, পংখি বেগম, আক্কাস, জিল্লু, রেজাউল, কাউসার মোল্যা, ওহিদুল, মঞ্জুর, শিমুল, মোক্তার মিয়া, জয়েন উদ্দিন, মোসলেম, হারান, বারিক মোল্যা, হানিফ মোল¬া, অলিয়ার, নওশের, মান্নান, নজির, মন্নু, নান্নু, জাফর, সাদেক মোল¬া, মোসলেম, মিজানুর, আলম,ওহাব, আয়েন উদ্দিন, জয়েন উদ্দিন, আক্কাস মোল¬া, চুন্নু মোল্যা, আনোয়ারুল হক, সবুর মিয়া, হানিফ মোল্যা, অলিয়ার, বাকী, রোকন উদ্দিন, আক্কাস মোল্যা, চুন্নু মোল্যাসহ শতাধিক পরিবারের অসংখ্য ঘরবাড়ি।
অন্যদিকে গোপালনগর থেকে পাল্লা পর্যন্তু প্রায় ৫ কিঃমিঃ নদীর মাঝ বরাবর জেঁগে উঠেছে বিশাল চর। চরের কারণে স্রোতপ্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়ে প্রবল বেগে নদী তীরে ঢেউ আঁচড়ে পড়ায় নদীর ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং উপজেলার নদী তীরবর্তী গ্রাম গুলো ক্রমেই ভাঙনের থাবায় নিশ্চিহ্ন হচ্ছে। এ ব্যাপারে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী রামানন্দ পাল বলেন, খবর পেয়ে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মধ্যে খাদ্য সহযোগিতা দেওয়ার ব্যাপারে আমরা তালিকা প্রনয়ন করে যাচ্ছি। মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বহী প্রকৌশলী সরোয়ার হোসেন সুজন জানান, নদী ভাঙন রোধে আমরা কাশিপুর এলাকায় প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ মিটার বাধ নির্মাণ কাজ ইতি মধ্যেই শেষ করেছি। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলানোর জন্য নতুন করে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। দুই এক দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। ভোলানাথপুর এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে বাধ নির্মান করতে আমরা পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। স্থানীয় এমপি ড. শ্রী বীরেন শিকদার বলেন, নদী ভাঙনরোধে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অবহিত করা হয়েছে। এবং প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর মধ্যে ত্রাণ সহযোগিতা ও সার্বিক খোঁজ-খবর নিতে নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com