কামরুল হাসান, ময়মনসিংহ :
“টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে উদযাপিত হয় “আন্তর্জাতিক নারী দিবস – ২০২৩”। অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন নারীর জয়ে সবার জয় নেটওয়ার্ক ও মাল্টিপার্টি এডভোকেসি ফোরাম। ৬ মার্চ ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ সোমবার বিকাল ৩ টায় ময়মনসিংহ মহানগরীর গ্রীণ পয়েন্ট কনভেনশন সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ডিআই নারীর জয়ে সবার জয় নেটওয়ার্কের সদস্য আওয়ামী লীগ মনোনীত ডিআই মাস্টার ট্রেইনার মনিরা সুলতানা মনি। দুটি পর্বে অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হয়। ফাল্গুনের পড়ন্ত বিকেলে নবীন-প্রবীণ সাহসী সংগ্রামী নারীদের আনন্দ প্রেরণায় প্রাণপ্রাচুর্যে ভরে উঠেছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র রিজিউনাল ম্যানেজার নার্গিস আক্তার অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন ডিআই ফেলো ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ফারিয়া তাসনিম তিথি ও ডিআই ফেলো জেলা যুব মহিলা লীগের সদস্য মাহমুদা সাহাব জিতু।প্রথম পর্বে ” এডভান্সিং ওমেন লিডারশীপ ইন ইলেকশন ” শীর্ষক আলোচনা, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী ক্যাম্পেইন ম্যানেজারের ভূমিকা, ক্যাম্পেইন ম্যানেজারের জন্য ফান্ড ম্যানেজমেন্ট, মূল দলের নারীদের অধিক হারে অন্তর্ভূক্তি, সাধারণ আসনে সরাসরি নির্বাচনে নারীদের মনোনয়ন বৃদ্ধি সহ নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বিষয়ক গ্রুপ ডিসকাশন, প্যানেলিস্ট ও অতিথিদের সন্মুখে উপস্থাপন, আমন্ত্রিত অতিথি ও প্যানেলিস্টদের বক্তব্য এবং দ্বিতীয় পর্বে নারী দিবসের কেক কেটে সেলিব্রেশন করা হয়। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাদের বাদ দিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারীর পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের পূর্বশর্ত রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন শুধু নারীর জন্য নয়। এটা পুরো সমাজের জন্য। একটি দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে পেছনে ফেলে কখনই রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এখনও নারীকে পুরুষের তুলনায় দুর্বল, হীন করে দেখার মন মানসিকতা তেমন বদলায়নি। সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রেও প্রত্যাশিত পরিবর্তন আসেনি। তবে, আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে নারী নিজের আবদ্ধ ঘরের চৌহদ্দি পেরিয়ে অপমান বঞ্চনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, নিপীড়ন নির্যাতনকে তুচ্ছ করে, হাজারো বাঁধা নিষেধের দেয়াল টপকে, ঝড় ঝঞ্ঝা পাড়ি দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে নারীরা অদম্য শক্তি নিয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সক্ষমতার প্রমাণ দিতে সক্ষম হয়েছে। নারীদের আরো এগিয়ে আসতে হবে। ন্যাযতা, যুক্তি ও মেধার ভিত্তিতে আরো চ্যালেঞ্জও নিতে হবে। গণতান্ত্রিক মূ্ল্যবোধের চর্চা বাড়াতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মুল করে, পশ্চাদপদ ধ্যান ধারনা ত্যাগ করে, নারী –পুরুষের বৈষম্য কমিয়ে পরিবার ও সমাজে নারীর সন্মান জনক অবস্থান সুদৃঢ় করে নারীর মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডিআই সিনিয়র ফেলো অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম এ কু্দ্দুছ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবু সাঈদ দ্বীন ইসলাম ফখরুল, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক শুক্কুর মাহমুদ, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি ও ডিআই সিনিয়র ফেলো ফরিদা ইয়াসমিন পারভীন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ডিআই সিনিয়র ফেলো অধ্যাপক দিলরুবা শারমীন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও ডিআই সিনিয়র ফেলো আনোয়ারা খাতুন, জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-আহবায়ক ও ডিআই মাস্টার ট্রেইনার ওয়াহিদুজজামান আরজু সহ মাল্টি-পার্টি এডভোকেসি ফোরামের নেতৃবৃন্দ, নারীর জয়ে সবার জয়ে নেটওয়ার্ক এর নেতৃবৃন্দ, ডিআই ফেলো,মাস্টার ট্ইনার,আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র নারী নেত্রীবৃন্দ প্রমুখ।অনুষ্ঠানের সভাপতি তার সমাপনী ভাষণে বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে “নারীর জয়ে সবার জয়”। তাই আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই এবং নারীদের সহিংসতা প্রতিরোধ আরও সোচ্চার হই যেন এই দিবসটির বিলুপ্তি ঘটে। আর যেন এই দিবসটি উদযাপন করতে না হয়। অতঃপর তিনি ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ।