মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন

News Headline :
কুষ্টিয়ার নিখোজ ২ এএসআই এর লাশ পদ্মা নদী থেকে উদ্ধার এবার প্রকাশ্যে এলেন ইবি শিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারি গোদাগাড়ীতে বিপুল পরিমান গাঁজা-সহ গ্রেফতার মাদক কারবারী ডালিম আমরণ অনশনে রাবি আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা পুলিশ কর্মকর্তা বিজয়-উৎপলকে ধরলেই মিলবে কাজেম হত্যার উত্তর: দাবি চিকিৎসকদের সিরাজগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে  বিক্ষোভ ও মানববন্ধন  দেশদ্রোহী খুনি হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করতে হবে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে–আহসান হাবিব লিংকন রংপুরে জমি লিখে না দেয়া মাকে বেধড়ক পেঠালো ছেলে ও ছেলের বউরা শ্রীবরদীতে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এতিম ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ মান্দায় মসজিদ উন্নয়ন প্রকল্পের সাড়ে ৩শো গাছ উপড়ে ও ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ

মুসলিম সভ্যতার প্রাচীন নিদর্শন দেশের একমাত্র নারী মসজিদ ‘অবহেলায় ধ্বংসের পথে’

Reading Time: 2 minutes

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:

মুসলিম সভ্যতার প্রাচীন এক নিদর্শন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নারী মসজিদ। প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো এ মসজিদটি স্থাপত্যরীতিতে মোঘল ভাবধারার সুস্পষ্ট ছাপ রয়েছে। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদটি অন্যসব মসজিদের মতো ইট বালির তৈরি হলেও, স্থানীয়রা এই মসজিদকে ভিন্নভাবে চেনেন।
জেলার বাঘা উপজেলা সদরে হজরত শাহ মোয়াজ্জেম ওরফে শাহদৌলার রহ: ছেলে হজরত শাহ আব্দুর হামিদ দানিশ মন্দ রহ: মাজারসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত এই মসজিদটি। এই মসজিদটি দেখতে প্রায় সবসময় আসেন পর্যটক ও দর্শনার্থীরা। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মসজিদটি এখন বিলুপ্তির পথে। মোঘল আমলে নির্মিত এই নারী মসজিদে আর নামাজ আদায়ও করা হচ্ছে না। বর্তমানে মসজিদটি ‘অবহেলায় ও অযতেœ ধ্বংসের’ পথে। তবে এলাকাবাসীর দাবি সংস্কার করে মসজিদ চালু করা প্রয়োজন।
তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদের অবস্থান প্রায় ৩০ ফুট সুউচ্চ টিলার ওপর। বর্গাকার মসজিদটির দৈর্ঘ্য ২৭ ফুট, প্রস্থ ১৩ ফুট। চারপাশের দেয়াল ৩ ফুট ৬ ইঞ্চি চওড়া। উত্তর ও দক্ষিণ লম্বাকৃতির মসজিদের পূর্ব দিকে রয়েছে খিলান আকৃতির প্রবেশপথ। মসজিদের ইট ধূসর বর্ণের। এ ইটের দৈর্ঘ্য ১০ ইঞ্চি, প্রস্থ ৬ ইঞ্চি এবং চওড়া দেড় ইঞ্চি। বর্তমান যুগের ইটের চেয়ে এর আকৃতি একেবারেই আলাদা। দর্শনার্থী ও মুসল্লিদের ওঠানামার জন্য মসজিদের পূর্বদিকে রয়েছে প্রবেশপথ।
জানা গেছে, প্রায় ৫০০ বছর আগে ৫ জন সংগীতসহ সুদূর বাগদাদ থেকে ইসলাম প্রচারের জন্য বাঘায় এসেছিলেন হযরত শাহ মোয়াজ্জেম ওরফে শাহ দৌলা (রহ.)। তিনি বসবাস শুরু করেন পদ্মা নদীর কাছে কসবে বাঘা নামক স্থানে। আধ্যাত্মিক শক্তির বলে এ এলাকার জনগণের মধ্যে ইসলাম প্রচারের ব্যাপক সাফল্য লাভ করে। এ সময়ে শাহ দৌলার অনেক অলৌকিক কীর্তি দেখে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী তার কাছে ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নেন।
বাঘা ওয়াকফ এস্টেটের দেওয়া তথ্য মতে, হজরত শাহদৌলার (রহ.) পুত্র হযরত শাহ আবদুল হামিদ দানিশ মন্দর (রহ.) মৃত্যুর পর তার তৃতীয় পুত্র মাওলানা শাহ আবদুল ওয়াহাব (রহ.) বাঘার খানকার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ওই সময় দিল্লির সম্রাট শাজাহানের প্রেরিত শাহী ফরমানযোগে ৪২টি মৌজা মাদদ মাস স্বরূপ দান লাভ করেন (১০৩০ হিজরি)।
হযরত আব্দুল ওয়াহাবের মৃত্যুর পর তার দুই পুত্রের মধ্যে হযরত শাহ মোহম্মদ রফিক (রহ.) ১০২৮ হিজরি সনে ২০৩৭ আনা শালি আনার সম্পত্তি ওয়াকফ করেন। ওয়াকফ এস্টেটের মোতয়াল্লি (৬ষ্ঠ রইশ) সাইজুল ইসলামের আমলে রইশ পরিবারের ও বাইরের পর্দানশিন নারীদের জন্য মসজিদ নির্মাণ করেন। তারা এ মসজিদে নামাজ আদায় করতেন। ঐতিহ্যের সাক্ষী হিসেবে টিকে থাকা এই শৈল্পিক স্থাপনার শরীরজুড়ে এখন শুধুই অযত্ন আর অবহেলার ছাপ। মসজিদের দেয়ালের কিছু কিছু অংশের পলেস্তা ধসে পড়েছে। তবে বর্তমানে এ মসজিদে আর নামাজ আদায় হয় না।
পর্যটকসহ স্থানীয়রা বলেন, এ ধরনের মসজিদ দেশে আর আছে কিনা আমার জানা নেই। এটি প্রতœতত্ত¡ বিভাগ প্রাচীন নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ ও পুরনো নকশা অক্ষুন্ন রেখে সংস্কার প্রয়োজন।
জানতে চাইলে প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক আবির বিন কায়সার বলেন, প্রায় ৩০০ বছর আগে মসজিদটি নারীদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল বলে এলাকায় প্রচলিত। তাই সেটির নাম ‘নারী মসজিদ’ হিসেবেই ছড়িয়ে পড়েছে। সেটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পুরনো নকশা অক্ষুন্ন রেখেই মসজিদের সংস্কার করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com