শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর ব্যুরো:
সাংস্কৃতিক ধারাবাহিকতায় দেশের হাজার বছরের ঐতিহ্য ধারণ করে মূকাভিনয়ের রূপ-রীতি ছড়িয়ে দেয়ার প্রয়াসে উত্তরের বিভাগীয় নগরী রংপুরে হয়ে গেলো মূকাভিনয় উৎসব। একদিনের এ উৎসবে দর্শক মাতিয়েছেন অংশগ্রহণকারী মূকাভিনয়শিল্পীরা। রোববার সন্ধ্যায় রংপুর টাউন হল মঞ্চে মূকাভিনয়শিল্পী মাহবুব আলমের ‘শব্দজট’ পরিবেশনার মধ্যদিয়ে উৎসবের উদ্বোধনী আয়োজন শুরু হয়। বাঙলা মূকাভিনয় গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত রংপুর বিভাগ বাঙলা মূকাভিনয় উৎসব-২০২৩ এর আলোচনা অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট রংপুর জেলা শাখার সভাপতি নাট্যজন বিপ্লব প্রসাদ, জোটের সাধারণ সম্পাদক গণসঙ্গীতশিল্পী মাজেদুর রহমান ঝন্টু, জাতীয় কবিতা পরিষদের রংপুর জেলা শাখার সভাপতি কবি মনজিল মুরাদ লাভলু, রংপুর পদাতিকের সভাপতি নাট্যজন বিজয় প্রসাদ তপু। সভাপতিত্ব করেন মাইম আইকন কাজী মশহুরুল হুদা। স্বাগত বক্তব্য দেন বাঙলা মূকাভিনয় গবেষণা কেন্দ্রের সম্পাদক ও পরিচালক রিজোয়ান রাজন। এসময় অতিথিরা বিভাগীয় পর্যায়ে মূকাভিনয় উৎসব আয়োজন করায় সংগঠকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আগামীতেও এর ধারাবাহিকত ধরে রাখার আহ্বান জানান। আলোচনা শেষে রংপুরের মুক্তবিহঙ্গ মূকাভিনয় সংগঠনের প্রধান রবিউল আলম রবিকে ‘বাঙলা মূকাভিনয় সংগঠক সম্মাননা’ স্মরক প্রদান করা হয়। এছাড়াও ১৭ ও ১৮ জুন অনুষ্ঠিত দুদিনের বাঙলা মূকাভিনয় কর্মশালা অংশ নেওয়া প্রশিক্ষণার্থীদের উৎসব মঞ্চে সনদ প্রদান করা হয়। উৎসবে প্যান্টোমাইম মুভমেন্ট পরিবেশন করে ‘নদী, মাছ ও একজন হরিশঙ্কর’। রংপুর পদাতিকের পরিবেশনায় ছিল ‘তোতা কাহিনী’ ও মুক্তবিহঙ্গের ‘ভাষণে অনুপ্রেরণা’। এছাড়া নন্দন মূকাভিনয় ও অভিনয় স্কুলের পরিবেশনায় ছিল ‘ছায়া মানব’ মূকাভিনয়। মিরর মাইম থিয়েটারের ‘একটি ঘুড়ির আকাশ’ এবং রংপুর পদাতিক ও মুক্তবিহঙ্গের যৌথ প্রযোজনায় ‘দুখীর ঈদ আনন্দ’ পরিবেশনা উপভোগ করেন দর্শকরা। দীর্ঘদিন পর মূকাভিনয় উৎসবে মূকাভিনয়শিল্পীদের পরিবেশনায় উচ্ছাস দেখা যায় দর্শক সারিতে থাকা সংস্কৃতিনুরাগী বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে। বাঙলা মূকাভিনয় গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক রিজোয়ান রাজন জানান, দেশে মূকাভিনয় নতুন করে সাড়া ফেলছে। সঙ্গে চর্চার পরিবেশও সৃষ্টি হয়েছে। সকলের সহযোগিতা পেলে আগামীতে এ ধরণের আয়োজন আরো ব্যাপকতা পাবে। রংপুরে এই উৎসব ও কর্মশালা আয়োজনে মুক্তবিহঙ্গ ও রংপুর পদাতিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন। পাশাপাশি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট রংপুর জেলা সার্বিক সহযোগিতা করেছে। তিনি আরও জানান, রংপুরে বাঙলা মূকাভিনয় গবেষণা কেন্দ্রের এটি ছিল দ্বিতীয় উৎসব। প্রথম উৎসব হয়েছে চট্টগ্রামে। বাঙলা মূকাভিনয় গবেষণা কেন্দ্র গত বছর ঢাকায় প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের মূকাভিনয়ের নিজস্বতা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের সাংস্কৃতিক ধারাবাহিকতায় হাজার বছরের ঐতিহ্য ধারণ করে মূকাভিনয়ের রূপ-রীতি নির্মাণের গুরু দায়িত্ব পালন করছে এই কেন্দ্রটি।