মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৭ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
আজ সোমবার (১ মে) মহান মে দিবস। সারা বিশ্বের ন্যায় নানা আয়োজনে বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে দিবসটি। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এ দিনটি সারা বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপ‚র্ণ। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটিকে পালন করা হয়, এ দিবসটি সম্পকে তারাই জানেন না।
রাজশাহী মহানগরীর অধিকাংশ শ্রমিক বলছেন, আজে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত তারা। অনেকে জানেই না মহান মে দিবস কবে। তারা বলছেন, বছরের অন্যান্য দিনের মতো আজকের দিনেও রাস্তায় প্রখর রোদে লেবারের কাজ, লেদ মিস্ত্রির কাজ, মোটর গ্যারেজের কাজ করতে হচ্ছে। শ্রমিকদের ভাষায় গরিবের আবার ‘দিবস কি? দিবস মানলে পেটে ভাত জুটবে কি ভাবে ? মহানগরী ঘুরে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানকার অধিকাংশ শ্রমিক মে দিবসটি সম্পর্কে জানে না। কাজলা অক্ট্রয় মোড় মহাসড়ক সংলগ্ন দিনমজুর রেজাউল, খেজাউল, বলেন, সারাবছরই সকাল থেকে সন্ধ্যা আমাদের কাজ করতে হয়। াামাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষের দিবস মানলে বৌ, বাচ্চা না খেয়ে থাকবে। প্রখর রৌদ্রে আমাদের কাজ তো এসি অফিস থেকে বেরিয়ে কেউ করবে না। থাই শ্রমিক নাজমুল বলেন, আমাদের তো কেউ কখনো খোঁজও নেয় না। মে দিবস দিয়ে কি হবে। সারাদিন কাজ করি টাকা পাই তা দিয়ে সংসার চালাই। বালু বহনকারী রিক্সা শ্রমিক কালাম বলেন, নগরীর বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ইমারত নির্মান কাজ চলছে। মহাজনের অর্ডার অনুযায়ী সেইসব স্থানে ভ্যানে করে (প্রখর রোদ্রে) সারাদিন বালি বহন করি। দিন শেষে ৫/৬শত টাকা আয় হয়। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের সংসার আমার। সেই আয়ের টাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কাজ না করলে পরিবারের লোকজন না খেয়ে মরবে। তো আমি মে দিবস দিয়ে কি করবো। নগরীর মতিহার থানার কাজে কাজলা এলাকার নির্মাণ শ্রমিক মোঃ রনি বলেন, আমাদের কাজের মজুরি বাড়ে না, কাজের সময়ও কমে না। মে দিবস প্রতিবছর আসে আর যায়। শ্রমিকদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়না। যেমন ছিলাম তেমনি আছি। ঘটা করে একটি দিন কাজ বন্ধ রাখলে আমার তো কোন উপকার হবে না। তাই আমি দিবসে বিশ্বাস করিনা। গরিবের ভাগ্যে পরিবর্তণ কেউ করে দেবে না।
উল্লেখ্য, ১৮৮৬ সালের এ দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজ, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম ও ৮ ঘণ্টা বিনোদনের দাবিতে রাজপথে নেমেছিলেন। সে আন্দোলনে শ্রমিকরা জীবনও উৎসর্গ করেছিলেন। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এই দিনকে তখন থেকেই সারা বিশ্বে মে দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।