রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নিজস্ব সংবাদদাতা, রাজশাহী :
রাজশাহী মহানগরীর আদালত চত্বরে দু’পক্ষের মারামারি ঘটনায় এক পক্ষের মামলা নিয়েছেন রাজপাড়া থানার ওসি। তবে অপর এক পক্ষের এজাহার কপি রিসিভ করলেও মামলা রুজু না করে বাদীকে ঘুরাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে রাজপাড়া থানার ওসির বিরুদ্ধে।
মামলার বাদী মোঃ কামাল শেখ, (সাধারণ সদস্য রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রæপ) তিনি মহানগরীর মতিহার থানার কাজহলা এলাকারমোঃ ঈসা শেখের ছেলে।
থানায় জমাকৃত এজাহারের বরাত দিয়ে জানা যায়, রাজশাহী বাস মালিক সমিতি’র উদ্দ্যোগে গত (১৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসক ভবনের নীচতলায় রাজশাহী বাস মালিক সমিতি এবং মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন সমিতির রিসিভার নিয়োগের দাবীতে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধ করছিলেন। ওই সময় পূর্ব শত্রæতার জের ধরে জনৈক মোঃ নজরুল ইসলাম হেলাল, মোঃ হাবিবুর রহমান বাবু , মোঃ মজিবর রহমান ট্যাঙ্গা , মোঃ জিল্লুর রহমান, মোঃ রফিক আলী পাখি, মোঃ কাকু, মোঃ জনি, মোঃ জাসদ, সহ অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মানববন্ধনের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। মানববন্ধনে অংশগ্রণ কারীরা প্রতিবাদ করলে তারা মারমুখী আচরন করে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা এজাহারের বাদী মোঃ কামাল শেখ-সহ মানবন্ধনে অংশগ্রহণ কারীদের কিলঘুষি এবং চড়-থাপ্পর মারে। ফলে বাদীসহ সাক্ষীগণ আহত হয়। পরে প্রশাসনের (পুলিশ) হস্তক্ষেপে বাদীসহ সাক্ষীগণ হামলাকারীদের কবল থেকে রক্ষা পায়। পরে হামলা কারীরা বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এর আগে গত (৯ আগস্ট) বিকাল ৫টায় রাজশাহী বাস মালিক সমিতি এবং মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন সমিতি হামলাকারীরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাদীসহ সাক্ষীগণকে মারধর করে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে বাস মালিক সমিতির অফিস থেকে বের করে দেয়। পরে সন্ত্রাসী কায়দায় জোরপূর্বক অবৈধভাবে সমিতির নিয়ন্ত্রণ (দখল) গ্রহণ করে। এর ধারাবাহিকতায় বাদীসহ সাক্ষীগণ এবং সমিতির অন্যান্য সদস্যগণ গত ১৬/১০/২০২৪ দুপরের ১২ থেকে ১২টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসক ভবনের নীচতলায় রাজশাহী বাস মালিক সমিতি এবং মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন সমিতির রিসিভার নিয়োগের দাবীতে শান্তিপ‚র্নভাবে মানববন্ধন করিতে গেলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এনিয়ে শুক্রবার রাতে রাজশাহী মহানগর বিএনপি কয়েকজন নেতা ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতা-কর্মীরা থানায় যান। এ সময় থানার ওসি তাদের রাতসোয়া ১০টা থেকেপৌনে ১২টা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে বসিয়ে রাখেন। মামলা রুজু করতে নানা ধরনের তালবাহানা করেন। এক পর্যায়ে মামলা রুজুর দাবিতে শ্রমিদের মুঠো ফোনে ডাকলে থানায় নেতা-কর্মীদের রেখে অফিস থেকে বেরিয়ে যান ওসি। পরে থানায় ফিরে ওসি উপস্থিত বিএনপি নেতা-কর্মীদের জানান পুলিশ কমিশনার স্যার বললে আমি মামলা নিব। নইলে মামলা নিতে পারবো না।
এ ব্যপারে মহানগর বিএনপি নেতা ও ১৩ নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর রবিউল আলম মিলু গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে হামলাকারীদের দেয়া মামলা রুজু করেছেন ওসি। সেই মামলায় আসামীরা বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। আর যারা হামলা চালিয়ে ব্যনার ছিঁড়েছে, মারপিট করেছে, তাদের বিরুদ্ধে এজাহার দেয়া হয়েছে একই দিনে। তারপরও আজ আবদি রহস্যজনক কারনে ওসি মামলা রুজু করছেন না। ভুক্তভোগীরা বৈষ্যমের শিকার হচ্ছেন। এটা মানা যায় না। তিনি আরও বলেন, রাজপাড়া থানার ওসির আচারণ ও কার্যক্রম মোটেই সন্তোষজনক না। ওসির কাছে হামলাকারীরাই ফেরেশতা, তা না হলে দু’পক্ষের এজাহার দাখিল এক পক্ষের মামলা অপর পক্ষকে হয়রানী! কিভাবে সম্ভব? আমরা আরএমপি পুলিশ কমিশনার এর কাছে যাব বলেও জানান এই নেতা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ১২ নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন দিলদার, মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাখেস-সহ স্থানীয় বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপি ও শ্রমিক নেতা-কর্মীবৃন্দ।
এ ব্যপারে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), মোঃ আশরাফুল আলম জানান, মামলার বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা চলছে। তবে মামলা রুজুর করবেন কি না? প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান তিনি।