শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় ও পুলিশের ‘ন্যাক্কারজনক’ হামলার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) এক শিক্ষক। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস গ্রহণ থেকে বিরত থাকছেন তিনি। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত রাবি জোহা চত্বরে খালি পায়ে দাঁড়িয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তিনি। ওই শিক্ষকের নাম ফরিদ উদ্দিন খান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক। কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় সন্ত্রাসী ও পুলিশ যে ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে এর প্রতিবাদ আমি এখানে অবস্থান নিয়েছি। পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয়দের হামলা এবং পুলিশের গুলিতে বিশ^বিদ্যালয়ের এতো শিক্ষার্থী আহত হলো এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমি অভিভাবক হিসেবে দুঃখ প্রকাশ করছি কারণ আমরা তাদের নিরাপত্তা দিতে পারিনি। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের বিছানায় আমাদের শিক্ষার্থীরা এখনো ছটফট করছে। তাদের মাথার ব্যান্ডেজ খোলা হয়নি, সেলাই এখনো কাটা হয়নি। এই অবস্থায় তারা ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারে না। আমি তাদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ক্লাস বর্জন করেছি। হামলাকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শুরুতেই ঘটনাটি যে কারণেই ঘটুক না কেন পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাটি নিয়ন্ত্রণ করবার জন্য দীর্ঘ সময় পেয়েছে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে এবং এর পরিণতি হয়েছে চরম ভয়াবহ। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সঙ্গে যারা এই হামলার সাথে সম্পৃক্ত তাদের দৃষ্টান্তম‚লক শাস্তির আওতায় আনা হোক।
এর আগে গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাসের সুপারভাইজারের সাথে বাগবিতন্ডাকে কেন্দ্র করে একদল শিক্ষার্থী বিনোদপুর বাজারে বাস থামিয়ে বাসের চালককে বেধড়ক পোটায়। পরে স্থানীয় ও দোকানীরা তাদের থামাতে গেলে স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন রাবি শিক্ষার্থীরা। শুরু হয় দুইপক্ষের ইট নিক্ষেপ। একপর্যায়ে দোকানে পাটে আগুনদিয়ে পুড়িয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলে গভীর রাত পর্যন্ত। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদেরকে লক্ষ করে টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এতে আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
রাবি শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষ: কাজ শুরু করেছে তদন্ত কমিটি
শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় কাজ শুরু করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি। সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তারা। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া স্থান পরিদর্শন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কমিটির প্রধান রাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর, সদস্য সাবেক প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তারিকুল হাসান, সহকারী প্রক্টর আরিফুর রহমান, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুর রশিদ সরকার ও সিন্ডিকেট সদস্য মোঃ শফিকুজ্জামান জোয়াদ্দার। তদন্ত কমিটি জানায়, তারা ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ও আশপাশে ঘুরে দেখেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এর আগে সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে প্রথমে তিন সদস্য থাকলেও পরে আরও দুই সদস্য বাড়ানো হয়। এ নিয়ে সংঘর্ষে ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। প্রসঙ্গত, শনিবার (১১ মার্চ) রাবি সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে রাবির প্রায় আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়। সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক অজ্ঞাতনামা মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, মতিহার থানা পুলিশ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।