বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৬ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
শাহরিয়ার মিল্টন,শেরপুর :
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কোচ উপজাতি অধ্যুষিত পোড়াগাঁও ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ১১১২ মেইন সীমান্ত পিলার সংলগ্ন খলচান্দা গ্রামে বর্ডার হাট স্থাপনের স্থান নির্ধারন করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রায় এক বছর অতিবাহিত হতে চলেছে এখনো এর কোন কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। প্রস্তাবিত এই বর্ডার হাটটি স্থাপন করা হলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাই দ্রæত বর্ডার স্থাপনের জোড় দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসা বাণিজ্য প্রসার ও স্থানীয় দুই দেশের অধিবাসীদের সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষে নালিতাবাড়ী উপজেলার খলচান্দা গ্রামের আন্তর্জাাতিক সীমানা পিলার ১১১২ টু এস ও ১১১২ থ্রী এস এলাকায় দুই দেশের জেলা প্রশাসন পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অংশ গ্রহনে গত বছরের ৫ এপ্রিল প্রস্তাবিত বর্ডার হাটের স্থানটি পরিদর্শন করা হয়। এরপর থেকেই ওই গ্রামের কোচ উপজাতিসহ স্থানীয়রা স্বপ্ন বুনছেন নতুন কর্মসংস্থানের। এখানে ব্যবসা পরিচালনা করে তারা আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতা পাবেন। এই গ্রামটি সীমান্তবর্তী পাহাড়ঘেরা হওয়ায় অনেকটা জনবিচ্ছিন্ন। এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষের নেই কোন স্থায়ী কর্মসংস্থান। দুই দেশের কর্মকর্তাদের প্রস্তাবিত ওই বর্ডার হাটের স্থান পরিদর্শনের পর তারা জানতে পারেন সরকারী উদ্যোগে এই গ্রামে ভারত-বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের যৌথ অংশ গ্রহনের বর্ডার স্থাপন করা হচ্ছে। এতেই শুরু হয়েছে তাদের স্বপ্ন বুননের কাজ। তারা নতুন করে ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। কিন্তু প্রস্তাবনার প্রায় এক বছর সময় অতিবাহিত হতে চলেছে এখনো ওই এলাকায় বর্ডার হাট স্থাপনের কোন কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। এজন্য তারা দ্রæত বর্ডার হাট স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করার জোড় দাবি জানান। তাছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তে বেশ কয়েকটি বর্ডার হাট স্থাপন করা হলেও ময়মনসিংহ বিভাগের সীমান্তে এখনো কোনো বর্ডার হাট স্থাপন করা হয়নি।ওই গ্রামের বাসিন্দা কৃষক পরিমল কোচ বলেন, আমাদের খলচান্দা গ্রামটি একদম ভারত সীমান্তঘেঁষা। এখানে কোনো কর্মসংস্থান নেই। বছরের বেশির ভাগ সময় গ্রামের মানুষদের বেকার বসে থাকতে হয়। এখানে বর্ডার হাট স্থাপন করা হলে আমাদের স্থায়ী কর্মসংস্থান তৈরি হবে। একইসাথে এই গ্রামের রাস্তাঘাটেরও উন্নয়ন হবে। ওই গ্রামের গৃহীনি বিরতি কোচনী বলেন, খলচান্দা গ্রামে বর্ডার হাট বসলে আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। ভারত বাংলাদেশের লোকজন কেনাকাটা করতে এখানে আসবেন। এতে আমরা ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা ও কাজকর্ম করে সংসার চালাতে পারবো। অপর বাসিন্দা শ্রী বাধন কোচ বলেন, আমাদের অনেক আত্মীয় স্বজন ভারতে বসবাস করেন। আমরা গরীব মানুষ পাসপোর্ট ভিসা করে ভারতে গিয়ে তাদের সাথে দেখা করতে পারি না। এই গ্রামে বর্ডার হাট স্থাপন করা হলে ভারতীয়রা যখন কেনাকাটা করতে আসবেন তখন আমাদের আত্মীয় স্বজনদের সাথে আমরা দেখা করতে পারবো। এতে আমাদের দুই দেশের বাসিন্দারে মাঝে এক ভ্রাতৃত্বপুর্ণ সম্পর্ক তৈরি হবে। এমনকি এলাকায় কোনো প্রকার চোরাচালানিও থাকবে না। তাই আমরা সরকারে কাছে দ্রæত বর্ডার হাট স্থাপনের জন্য জোড় দাবি জানাই। বারমারী বাজারের মনোহারী ব্যবসায়ী উসমান আলী বলেন, খলচান্দা গ্রামে বর্ডার হাট স্থাপন করা হলে সেখানে কেনাকাটা ও ব্যবসা বাণিজ্য ছাড়াও দুরদুরান্ত থেকে প্রস্তাবিত বর্ডার হাটের পাশের গারো পাহাড়ের সৌর্ন্দয্য দেখতে পর্যটকরা ছুটে আসবেন। এতে এলাকার আশপাশের বাজারগুলোতেও বেচাকেনা বাড়বে। খলচান্দা গ্রামে বর্ডার হাট স্থাপন করা হলে এলাকার মানুষের সার্বিক উন্নয়ন হবে। এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলিশায় রিছিল বলেন, খলচান্দা গ্রামের প্রস্তাবিত বর্ডার হাটের স্থানটি বাংলাদেশ ও ভারতের জেলা প্রশাসন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যৌথ অংশ গ্রহনে পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসন থেকে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। একই সাথে ভারতীয় কর্মকর্তারাও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। দুই দেশের মন্ত্রনালয় থেকে অনুমোদন পেলেই বর্ডার হাট স্থাপনের কাজ শুরু করা হবে।