শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন

News Headline :
রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাতটি থানার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা যানজট নিরসন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে আরএমপি’র মতবিনিময় সভা শ্যামনগরে এবার কৃষকরা আমন ধানের আশানুরুপ ফলন পেয়েছে পাবনায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ১জন আহত শাজাহানপুরে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত মান্দায় বিল উন্মুক্তের দাবিতে জেলেদের সংবাদ সম্মেলন সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির হাবিপ্রবিতে আবাসন সংকট-হলে থেকেও অনাবাসিক অনেক ছাত্র রাজশাহী মহানগরীতে নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ গ্রেফতার ১৪ রাজশাহীতে অর্ধশত বোতল ফেনসিডিল-সহ মাদক কারবারী গ্রেফতার

সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির

সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির

Reading Time: 3 minutes

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা :
ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ৫ মাস অতিবাহিত হলেও এর দোষররা এখনও গুরুত্বপুর্ন আসন দখল করে অনায়াসে সকল অপকর্ম করে যাচ্ছে। তেমনি একটি পাবনা সমন্বয় পরিষদ শহর সমাজ সেবা কার্যালয়। এর সভাপতি হলেন, পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য আব্দুল মতিন খান। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে লুটপাট, দখল বাণিজ্য, সরকারী বিভিন্ন দফতরে কর্তৃত্ব বজায় রেখে অবৈধ সুযোগ সুবিধা নিয়ে বিপুল পরিমান সম্পদের মালিক বনে গেছেন আব্দুল মতিন খান এবং ধ্বংস বা সংকুচিত করেছেন বিভিন্ন অফিস বা দফতরের কার্যক্রম। তেমনি পাবনা সমন্বয় পরিষদ শহর সমাজ সেবা কার্যালয়। সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
পাবনা সমন্বয় পরিষদ শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের আজিবন সদস্য হলেন, সভাপতি আব্দুল মতিন খানের আপন ভাইরা সাংবাদিক রবিউল ইসলাম রবি, তার ভাইরার স্ত্রী, ভাইরার ছেলেসহ তার আত্মিয়স্বজন। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পর দলীয় প্রভাব বিস্তার করে আব্দুল মতিন খান পাবনা সমন্বয় পরিষদ শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন করেন। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানকে কুক্ষিগত করতে আজিবন সদস্য ফি ২ হাজার থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ হাজার টাকা করা হয়। এত পরিমান টাকা জমা দিয়ে কেউ যেন আজিবন সদস্য হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ না করে। এজন্য ২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা ফি নির্ধারন করা হয়। যদি কেউ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে সদস্য হওয়ার ইচ্ছা পোষন করতেন, নানা অজুহাতে তাকে আজিবন সদস্য করা হতো না। ৩০ হাজার টাকা ফি বৃদ্ধি করার পুর্বে তার আত্মিয় স্বজনদের আজিবন সদস্য করে নেন, নতুন আজিবন সদস্য অন্তভুক্ত বন্ধ করে দেন। এভাবেই সে নিজেদের লোকজনের ভোটে বার বার সভাপতি নির্বাচিত হয়ে পাবনা সমন্বয় পরিষদ শহর সমাজ সেবা কার্যালয় দুনীতির আখড়া বানিয়ে ফেলেন। সে সভাপতি হয়ে প্রথম থেকে নিয়মবিহভুর্ত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। পদাধিকার বলে ওই অফিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাধারণ সম্পাদক হলেও দলীয় প্রভাববিস্তার করে সকল সিদ্ধান্ত সভাপতি আব্দুল মতিল খান এককভাবে নিয়ে থাকেন। শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞাপনসহ অন্যান্য বিজ্ঞাপন আব্দুল মতিন খানের নিজ পত্রিকা আন্ডারগ্রাউন্ডখ্যাত দৈনিক জোড় বাংলায় ছাপানো হতো এবং উচ্চহারে বিজ্ঞাপন মুল্য ধরা হয়। অন্নদা গোবিন্দা পাবলিক লাইব্রেরীর নামে প্রতিবছর লাখ টাকা বরাদ্ধ নেয়া হলেও তা লাইব্রেরীর একাউন্টে জমা করা হতো না। একটি সুত্র জানায় অন্নদা গোবিন্দা পাবলিক লাইব্রেরীর নামে যে টাকা অনুদান হিসাবে নেওয়া হতো, সেই টাকা অন্নদা পাবলিক লাইব্রেরীর একাউন্টে জমা না করে, মতিন খান নিজেই আত্মসাত করতেন। যা অন্নদা পাবলিক লাইব্রেরীর অডিট পর্যবেক্ষন করা হলে সত্যতা বের হয়ে আসবে। শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের প্রচার-প্রচারনার জন্য ছাপাখানা অফসেট প্রিন্টসহ সকল প্রকার কাজ আব্দুল মতিন খান নিজ আয়ত্বে¡ করতেন এবং উচ্চমুল্যে সে সব খরচ বা বিল অফিসে জমা দিয়ে পাস করে নিতেন। এছাড়া সমন্বয় পরিষদ শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের একটি ২৫ লাখ টাকার এফডিআর করা হয়। এই এফডিআর মতিন খান ব্যাক্তিগত সুবিধা নিয়ে মিউচ্যুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংকে একাউন্ট খোলেন। সুত্রমতে এই এফডিআরের ২৫ লাখ টাকা অন্য ব্যাংকে রাখা হলে লাভের অংশ অনেক বেশি পাওয়া যেত। আত্মিয়করন হিসাবে ওই প্রতিষ্ঠানে আব্দুল মতিন খানের ভাইরার ছেলে শহিদুল ইসলাম তার নাতনী জাকিয়া জামিনকে কম্পিউটার প্রশিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করেন এবং অতিরিক্ত সুবিধা দিয়ে থাকেন। অভিযোগ রয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার প্রশিক্ষক হাসনাত জাহান ঝর্না ২০১১ সাল থেকে চাকুরী করলেও মতিন খানের ভাইরার ছেলে গত ১ বছর পুর্বে একই পদে চাকুরীতে যোগদান করে সমপরিমান বেতন ও সুবিধা গ্রহন করে থাকেন। এ ছাড়া পাবনা সমন্বয় পরিষদ শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রমের প্রসাররোধে তিনি স্বৈরাচারী নিয়ম-কানুন চালু করেছেন। অন্য সদস্যরা আব্দুল মতিন খানের বিভিন্ন অপকর্মের বাধা প্রদান করতে গেলে দলীয় প্রভাব ও পাবনা প্রেসক্লাবের সদস্য হওয়ায় ভয়ভীতি প্রদর্শন করে থাকেন। পাশর্^বর্তি জেলা কুষ্টিয়া সমন্বয় পরিষদ শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের অধিনে প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী-প্রশিক্ষনার্থী রয়েছে। আব্দুল মতিন খানের স্বৈরাচারী আচরন ও প্রতিষ্ঠানটি আত্মিয় করন করার কারনে বৃহত্তর জেলা হিসাবে পাবনা জেলার, পাবনা সমন্বয় পরিষদ শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের অধিনে ১৮০ জন প্রশিক্ষনার্থী বা শিক্ষার্থী রয়েছে। কারন হিসাবে আরো জানা যায়, আব্দুল মতিন খান স্কয়ার গ্রæপের অনিতা ফাউন্ডেশনের সদস্য। পাবনা সমন্বয় পরিষদ শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের স্বৈরাচারী নিয়ম কানুন করার ফলে সেখানকার প্রশিক্ষনার্থীদেরকে অনিতা চৌধুরী ফাউন্ডেশনে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এদিকে পাবনা সমন্বয় পরিষদ শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের প্রশিক্ষনার্থীদেরকে ভর্তি করতে সরকারী ২৪৫০ টাকার বাইরে অতিরিক্ত ফি আদায় করে থাকেন মর্মে অনেক অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি পোষ্টার ও লিফলেট ছাপানোর কাজে বাজার মুল্যের চেয়ে দ্বিগুন মুল্যে সংযোজন করে টাকা আত্মসাত করার প্রমান পাওয়া গেছে। আব্দুল মতিন খানের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য ইতিপুর্বে আব্দুল মতিন খান ১বারের জন্য তার আপন ভাইরা সাংবাদিক রবিউল ইসলাম রবিকে সভাপতি বানিয়েছিলেন। এভাবেই আত্মিয়করন ও স্বজনপ্রিতির মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানে আর্থিক অনিয়মসহ প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। এদিকে সেখানে কর্মরত তার আত্মিয়-স্বজন দাম্ভিকতার সঙ্গে বলেন আমার খালুর অনেক ক্ষমতা। আওয়ামীলীগ-বিএনপি’র সকল নেতা আমাদের আয়ত্বে। আপনি রিপোর্ট করে আমার খালুর কিছুই করতে পারবেন না। তার নাতনী জাকিয়া জমিন দাম্ভিকতার সাথে বলেন, কোন সাংবাদিকের সাথে আমরা কথা বলবো না। যা জানার বা শোনার ইচ্ছা আব্দুল মতিন খানের কাছে যান। দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতির অভিযোগ জানতে আব্দুল মতিন খানের মোবাইলে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
পাবনা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রাসেদ কবির বলেন, উনি নির্বাচিত প্রতিনিধি উনাকে সড়ানোর ক্ষমতা আমার নেই। তবে অভিযোগ পেলে পরিবর্তি কি ব্যবস্থা গ্রহন করা যায়, তা খতিয়ে দেখবো।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com