আহসান হাবীব, সুবর্ণচর নোয়াখালী:
নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলা ১নং চরজব্বর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের চরজব্বর গ্রামের আক্কাছ মেম্বারের সমাজ গোলাম আলী সর্দার জামে মসজিদের ইমাম ও আবদুল্লাহ মিয়ার হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক (সহকারী শিক্ষক) রহমতুল্লাহ (৩৮) কে নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনায় মসজিদের ইমামতি থেকে চাকরিচ্যুত করেছে এলাকাবাসী। রহমতুল্লাহ চরজব্বর ইউনিয়নের একই এলাকার সফিক মেম্বার বাড়ির রফিকউল্লাহ’র ছেলে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এলাকাজুড়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ১১টার দিকে, অত্র মসজিদের ভিতরে। এ ঘটনার বিষয়ে ১নং চরজব্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আব্দুল্লাহ মিয়ার হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি, এডভোকেট ওমর ফারুক বলেন, শিক্ষক রহমতুল্লাহ’র নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা শুনেছি, এ বিষয়ে খোঁজ খবর, জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে স্কুল থেকে বহিষ্কার করবো। স্কুল প্রতিষ্ঠাতা ও চরজব্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ মিয়া জানান, শিক্ষক রহমতুল্লাহ’র সাথে দুলাল নামের একজন ট্রলিচালকের স্ত্রীর দীর্ঘদিনের অবৈধ পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে, এর আগেও উনি একাধিক নারী কেলেঙ্কারির ঘটনার সাথে জড়িত ছিলো। উনার চরিত্র তেমন ভালো না। উনার কারণে গোটা আলেম সমাজের বদনাম হলো, উনি আলেম নামের কলঙ্ক। উনাকে যারা হাতেনাতে ধরে মেম্বার চেয়ারম্যান বা প্রশাসনকে না জানিয়ে ছেড়ে দিলো তাদের ও বিচার হওয়া উচিত। আবদুল্লাহ মিয়ার হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াছিন আরাফাত জানান, শিক্ষক রহমতুল্লাহ’র নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা শুনে তাকে চারদিনের জন্য শোকজ করেছি, শোকজের সঠিক জবাব দিতে না পারলে কমিটির সাথে আলোচনা করে বহিষ্কার করা হবে। অটোরিকশা চালক লিটন জানান, বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) রাত আনুমানিক ১০ টার সময় আটকপালিয়া বাজারের পর্ব পাশে মেজর মন্নানের ফেক্টরীর সামনে রহমতুল্লাহ হুজুরের সাথে আমার দেখা হয়,উনি আক্কাছ মেম্বারে গো মসজিদে যাবেন বলে আমার রিকশায় উঠেন, রিক্সায় উঠে বলেন চরজব্বর হাসপাতাল আমার একজন রোগী আছে চলো নিয়ে আসি, হাসপাতালে যাওয়ার পথে কাকে ফোনে বলে আমি রিক্সা নিয়ে আসতেছি তুমি সামনে আগাও, হাসপাতাল গেইটে যাওয়ার পর একজন মহিলা এসে আমার রিক্সায় বসলো, তারা দুইজনে আমাকে নিয়ে আসলো আক্কাছ মেম্বার গো মসজিদের পাশে খালেক খোনারের বাড়ির দরজায়, তারা রিক্সা থেকে নেমে আমার বাড়া পরিশোধ করে মসজিদের দিকে চলে যাচ্ছে, তাদের আচরণ আমার কাছে সন্দেহ মনে হওয়াতে আমি পাশের বাড়ির নুরুল আমীনকে ডেকে আনি, নুরুল আমীন মসজিদের ভিতরে মহিলাকে পেয়ে ঐ এলাকার নুরুল হকের পুত্র মমিন মেস্তরী (৪০), খলিলের পুত্র রাসেল( ২৯) ও ডাক্তার নাছেরের পুত্র মামুন(৩০) কে ফোন করে ডেকে আনেন, তারা চারজনে মসজিদের ভিতরে ডুকেছে,আমি ছিলাম বাহিরে, রহমতুল্লাহ হুজুর ও মহিলাকে কি জিজ্ঞেস করছে বা কি কথা হয়েছে আমি শুনিনি, অনেক্ষণ পরে তারা সবাই মসজিদ থেকে বেরিয়ে আমাকে বলে এ মহিলাকে যেখান থেকে এনেছো সেখানে নামিয়ে দিয়ে আসো, আমি ঐ মহিলাকে আবার হাসপাতালের সামনে নামিয়ে দিয়ে আসি। প্রত্যক্ষদর্শী ডাক্তার নাছেরের পুত্র মামুন জানান, ঐ রাতে আমাকে একজন ফোন করে মসজিদে আসতে বলে, আমি গিয়ে দেখি ইমাম সাহেব মসজিদের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে, নুরুল আমীন, মমিন মেস্তরী, রাসেল, আর একজন মহিলাকে মসজিদে দেখতে পাই, কোন কথা বলিনি, ওরা ইমামকে ও মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেছে, ইমাম বলতেছে মহিলাকে নাকি উনি চিনে না, মহিলা পানিপড়া নিতে আসছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ইমাম রহমতুল্লাহ জানান, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার, ঐ মহিলাকে আমি চিনি না, আপনি কেন ষড়যন্ত্রের শিকার, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগের জুমাবারে আমি মসজিদের কারেন্ট বিল নিয়ে বয়ান করাতে কিছু মুসল্লির সন্মানে আঘাত লাগে, আমাকে ফাঁসাতে এ ঘটনা তারাই ঘটিয়েছে।