রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
হারুন উর রশিদ সোহেল,রংপুর:
আগামী ২ রা আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রংপুরে আগমনকে স্বাগত জানিয়ে মাদরাসা অধিদপ্তর কর্তৃক ডাটাবেইজ ভুক্ত মাদ্রাসা সমুহ নীতিমালা-২০১৮ এর আলোকে এমপিও ভুক্ত/ জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকরা। এই দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।গতকাল সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান মো: শামসুল আলমের নির্দেশনায় রংপুর বিভাগ ও রংপুর জেলা শাখার উদ্যাগে রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবরে স্বারকলিপি দেয়া হয়। এর আগে নগরীর কাচারী বাজারস্থ রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সংগঠনের রংপুর জেলার প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মরহুম মাও: নুরুল আবছার দুলাল সহ প্রয়াত সকল শিক্ষকদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্য পরিষদ রংপুর বিভাগীয় ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাও: সাহেবুল ইসলাম মজনু মন্ডলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগীয় কমিটির সভাপতি ও কুড়িগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক মাও: নুর নবী আলী, বিভাগীয় কমিটির সহ-সভাপতি একরামুল হক, রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি মাও: মোজাম্মেল হক, জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও তারাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মাও: আব্দুস সালাম, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মাও: আব্দুল লতিফ, মিঠাপুকুর উপজেলার শিক্ষক নেতা মাও: মোখলেছার রহমান, মাও: আব্দুল কাফী, জাভেদ আলী, মতিয়ার রহমান, শাহাদত হোসেন, মোকছেদ আলী, রোকনুজ্জামান রোকন, সাইফুল ইসলাম, রাজিয়া সুলতানা, রংপুর সদর উপজেলার একরামুল হক, আব্দুল লতিফ, নুর নাহার আক্তার, মাও: মাহফুজার রহমান, আব্দুল কাশেম, শাহজাহান, মাও: সিরাজুল ইসলাম, বদরগঞ্জের ক্বারী আনওয়ারুল ইসলাম, জামিল হোসেন, গঙ্গাচড়ার মাও: ছাইয়েদুর রহমান, মাহবুবার রহমান, মতিয়ার রহমান প্রমুখ। এসময় রংপুর জেলা ও বিভাগের বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলার শতাধিক শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।স্বারকলিপিতে বলা হয়, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক মঞ্জুরি নিয়ে দেশে প্রায় ১৮ হাজার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা হয়। সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে প্রায় অর্ধেকের বেশি মাদ্রাসা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে সরকারি হিসাবে মাদরাসা অধিদপ্তর কর্তৃক ডাটাবেইজ ভুক্ত ৭৪৫৩টি মাদ্রাসা চালু আছে। এর মধ্যে মাত্র ১৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা সরকারি অনুদানভুক্ত। তারা ৩ মাস পর প্রধান শিক্ষক মাত্র ২ হাজার ৫০০ ও সহকারী শিক্ষক মাত্র ২ হাজার ৩০০ টাকার ভাতা পান। অথচ এসব ইবতেদায়ি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার বয়স ৪০ বছর পূর্ণ হয়েছে। এরপরও বেতন-ভাতা বঞ্চিত। এ সময়ের মধ্যে হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা বিনা বেতনে চাকরি করে মারা গেছেন। অনেকে বিনা বেতনে চাকরি করে শূন্য হাতে অবসরে গেছেন। এসব শিক্ষক পরিবারের দুই লাখ মানুষের জীবনযাত্রা থমকে আছে।অথচ ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জনবল বেতন কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা জারি করা হলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। ইতোমধ্যেই প্রায় চার বছর পেরিয়ে গেছে। নীতিমালা অনুযায়ী সরকার অনুমোদিত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের তিন মাস পরপরের পরিবর্তে প্রতি মাসে এমপিও ছাড় করার কথা। কিন্তু এসব মাদ্রাসার শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। ইবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রধানদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সমান বেতন স্কেল তথা ১১তম গ্রেড নির্ধারণ করা হয়। আর ইবতেদায়ি সহকারী ও কারিদের বেতন ১৬তম গ্রেড নির্ধারণ করা হয়। অথচ তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে করে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোয় কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকা মানববেতর জীবনযাপন করছেন। অবিলম্বে বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ নীতিমালার আলোকে এমপিও ভুক্তি/জাতীয়করণসহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় সকল সুযোগ সুবিধা প্রদানের দাবি জানান।