বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২২ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নিজস্ব প্রতিবেদক
আরমান হোসেন ডলার বিশেষ প্রতিনিধি
বাংলাদেশ স্বাস্থ্যে ১৮০০ জনকে নিয়োগ।
‘এখন এক কোটি দেব, পরে আরও পাবেন’
সুদীর্ঘ ১২ বছর পর স্বাস্থ্য খাতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পদে নিয়োগ হয়েছে। এবং এটা নিয়ে লিখিত পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু লিখিত পরীক্ষা হওয়ার পরে অনেক পরীক্ষার্থী রাজপথে নেমে ছিল আন্দোলনের জন্য পরীক্ষা অনিয়ম হয়েছে এই পরীক্ষায় দুর্নীতি এবং অনিয়ম হয়েছে।
কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সে আন্দোলনকে কোন গুরুত্ব বা পাত্তা না দিয়ে তারপর ভাইবা পরীক্ষা হয়ে যায়। এখন শোনা যাচ্ছে ভাইভা পরীক্ষায় মোটা অংকের টাকা বাণিজ্য (১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা) একেকটা টেকনোলজিস্ট পদে নিয়োগ বাণিজ্যে হয়েছে।
সচিবকে চিঠি দিয়ে জনপ্রতি ১৫-২০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ নিয়োগ কমিটির দুই সদস্যের। ‘ঘুষ সাধেন’ এক উপসচিবও।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বড় একটি নিয়োগে বড় অঙ্কের ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ করেছেন নিয়োগ কমিটিরই দুজন সদস্য। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়ে তাঁরা দাবি করেছেন, এই নিয়োগে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রার্থীদের একটি অংশের কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।
লিখিত পরীক্ষায় অনিয়মের সন্দেহ হয় মৌখিক পরীক্ষা নিতে গিয়ে। নিয়োগ কমিটির সদস্যরা বলছেন, লিখিত পরীক্ষায় যেসব প্রার্থী ৮০ নম্বরের মধ্যে ৬০ থেকে ৭৯ পেয়েছেন, তাঁরা মৌখিক পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। বরং ভালো করেন লিখিত পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা।
—লিখিত পরীক্ষায় অস্বাভাবিক ভালো নম্বর। মৌখিক পরীক্ষায় কিছুই পারেননি প্রার্থীরা।
—মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থী পদের অর্ধেকের কম।
মৌখিক পরীক্ষায় পাস করিয়ে দিতে নিয়োগ বোর্ডের এক সদস্যকে ঘুষ ও পদোন্নতির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। এ প্রস্তাব দিয়েছিলেন আরেক মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে দেওয়া চিঠিতে নিয়োগ কমিটির এক সদস্য অভিযোগ করেন, তাঁকে নগদ এক কোটি টাকা এবং পরে আরও টাকা ও পদোন্নতি দেওয়ার লোভ দেখানো হয়।
করোনাকালে সরকারি হাসপাতালে কারিগরি জনবল ঘাটতি মেটাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছিল। এ জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় গত বছরের ২৯ জুন। ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় ২ হাজার ৫২১ জন উত্তীর্ণ হন, যা মোট পরীক্ষার্থীর ৫ শতাংশের মতো। তবে যাঁরা উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁদের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ খুব ভালো নম্বর পান, যা থেকেই সন্দেহ তৈরি হয়। পরে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয় খুব কড়াকড়িভাবে।
লিখিত পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই নিয়োগসংক্রান্ত কমিটির দুজন সদস্যকে সরিয়ে দিয়েছে। অধিদপ্তর বলছে, পুরো পরীক্ষা বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য মৌখিক পরীক্ষায় ২০ নম্বরের মধ্যে ১০ পাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা সব পদের বিপরীতে মৌখিক পরীক্ষায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায়নি। এ জন্য ৮০০ জনের মতো প্রার্থীকে নিয়োগের চিন্তা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ও নিয়োগ কমিটির প্রধান শেখ মো. হাসান ইমাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমিটির সদস্যরা যেসব অভিযোগ করেছেন, তা আমি স্বাস্থ্যসেবা সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানিয়েছি। আমার কাছে এর সকল প্রমাণ আছে।’ তিনি বলেন, ‘৮০ নম্বরের মধ্যে যখন একাধিক পরীক্ষার্থী ৭৯ পায়, তখন সেটা ভাবনার বিষয়।