শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৭ অপরাহ্ন
Reading Time: < 1 minute
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
‘হরতাল-অবরোধ শুরু হয়েছে। কাজকামে টান ধরেছে। আসছি আর চলি (চলে) যাচ্ছি। কাম হচে (হচ্ছে) না।’ এমনভাবে আক্ষেপ করে কথা বলছিলেন শ্রমিক কামরুল ও চান মিয়ারা। তারা রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর ও পুঠিয়া উপজেলার বাসিন্দা। তাদের দাবি, এমনিতেই প্রতিদিন কাজ হয় না। তার পরে হরতাল-অবরোধ। আরো কাজ হারিয়ে গেছে। এই সবদিনে (হরতাল অবরোধ) মানুষ (মালিকরা) কাজ করাতে চান না। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকালে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা সেকেন্দার, বিচ্ছাদ আলী, গাফ্ফারদের নগরীর গোরহাঙ্গা রেলগেট এলাকায় সারিভাবে বসে থাকতে দেখা যায়। তারা প্রতিদিন ডালি, কোদালসহ কাজের বিভিন্ন হাতিয়ার নিয়ে আসেন নগরীতে। এই মানুষগুলো শ্রম বিক্রি করে নিজেদের সংসার চালায়। নির্মাণকাজ, রাজমিস্ত্রির সহযোগী, বস্তা টানা, মাটি কাটা থেকে শুরু করে নানা কাজ করেন তারা। একা অথবা দলবদ্ধ হয়ে তারা নগরীতে ছড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন কাজে।
শুধু গোরহাঙ্গায় নয়, নগরীর বিনোদপুর, কাটাখালী, তালাইমারীতে এমনভাবে অসংখ্য শ্রমিক জীবিকার তাগিদে ডালি কোদাল নিয়ে এসে বসে থাকেন। অবরোধের কারণে ঠিকঠাক তাদের কাজ হচ্ছে না। তাই বেশিরভাগ দিন তাদের শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। শ্রমিকরা বলেন, প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ শ্রমিক আসেন। সকাল ছয়টা থেকে শ্রমিকেরা জড়ো হতে শুরু করে এখানে। কোদাল, ডালি, খাবারের পোঁটলা নিয়ে শ্রমিকেরা অপেক্ষায় থাকেন। নিজেদের কাজ করাবেন এমন মালিকরা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরিভিত্তিতে শ্রমিকদের কাজে নেন। এখানে আসা শ্রমিকদের মধ্যে বেশিরভাগই প্রতিদিন কাজ পান। তবে অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে তাদের কাজে ভাটা পড়েছে। এখন অল্প কয়েক জনের কাজ হচ্ছে। বাকিরা বেকার।
কামরুল ইসলাম বলেন, সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, পণ্যের দামের কারণে। হরতাল-অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে কাজ নেই। এ অবস্থায় সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে উঠেছে। হরতাল-অবরোধ হলে বাড়ি থেকে দু-ভরসায় বের হই; কাজ হলেও হতে পারে বলে।
শ্রমিক খুজতে আসে শামসুজ্জামান। সড়ক থেকে তার নির্মাণাধীন বাড়িতে বালু নিয়ে আনাবেন তাই। তিনি বলে, ট্রাকে সকালে বালু ফেলে গেছে বাড়ির কিছু দূরের রাস্তায়। সেখান থেকে শ্রমিক দিয়ে বালু বাড়িতে নিয়ে আনতে হবে। তাই তিনজন শ্রমিক নিয়ে যাবো।