admin
- ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ / ১২১ Time View
Reading Time: 2 minutes
সাইফুল ইসলাম, হিলি দিনাজপুর :
দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলিতে বায়নানামা (বন্দকি) বেশি জমি চাষকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মেফতাহুল জান্নাত (মেফতাকে) পিটালেন গ্রাম পুলিশ সুদীপ চন্দ্র। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারী) সকালে উপজেলার ২ নং বোয়ালদাড় ইউনিয়নের কাঁকড়াবালি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, বোয়ালদাড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেফতাহুল জান্নাত মেফতার পৌনে দুই বিঘা জমি বায়নানামা (বন্দকি) নিয়ে চাষ আবাদ করে আসছেন গ্রাম পুলিশ (দফাদার) সুদ্রীপ চন্দ্র।
স্থানীয়রা আরও জানান, পৌনে দুই বিঘার পরিবর্তে গোপনে সে পৌনে তিন বিঘা জমি চাষাবাদ করছেন। চেয়ারম্যান সঠিক ভাবে জমি মাপার জন্য আমিন ও গ্রাম পুলিশকে সাথে নিয়ে ঘটনা স্হলে (জমিতে) আসেন। জমি মাপ দিয়ে দেখা যায়, আসলেই পৌনে দুই বিঘার পরিবর্তে পৌনে তিন বিঘা ফসলি জমি ভোগ দখল করে আসছে গ্রাম পুলিশ সুদীপ চন্দ্র। মাপ যোগের এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে তাদের মাধ্য এই বিষয় নিয়ে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে গ্রাম পুলিশ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মেফতা কিছু বুঝে উঠার আগেই অতর্কিত ভাবে কিলঘুষি মারতে থাকে। এছাড়াও ধাক্কা দিয়ে চেয়ারম্যানকে সরিষা ক্ষেতে ফেলে দেয়। এতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের চোখে এবং মাথায় ক্ষত হয়। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় চেয়ারম্যনকে উদ্ধার করে হাকিমপুর হাসপাতালে ভর্তি করান। বোয়ালদাড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেফতাহুল জান্নাত মেফতা মুঠোফোনে জানান, সুদ্রীপ চন্দ্রের নিকট আমার ছোট ভাই পৌনে দুই বিঘা এবং আমার এক বিঘা (মোট পৌনে তিন বিঘা) জমি বায়নানামা (বন্দকি) রাখি। আমাদের জানামতে ওই জমি গ্রাম পুলিশ ভোগ দখল করে আসছে। গত আমন মৌসুমের আগে তাকে এক বিঘা জমির টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তার কাছে পৌনে দুই বিঘা জমি বন্দক রয়েছে। কিন্তু সে গোপনে আমার অজান্তে পৌনে তিন বিঘা জমি ভোগ দখল করে আসছে। বিষয়টি আমি গভীর নলকূপ মালিকের নিকট জানতে পেরে গ্রাম পুলিশকে খবর দেয় সোমবার দিন আমার বন্দক রাখা জমি আমিন দিয়ে মাপযোগ করবো এবং তুমি উপস্থিত থাকবে। সেই মোতাবেক আজকে আমিন ও গ্রাম পুলিশকে সাথে নিয়ে ঘটনা স্হলে জমি মাপযোগ করতে যায়। জমি মাপযোগ করে দেখা যায় আসলে সে এক বিঘা জমি বেশি ভোগ দখল করে আসছে। তার নিকট পৌনে দুই বিঘা আবাদি জমি বন্দক রাখা আছে অথচ সে পৌনে তিন বিঘা জমি কেন গোপনে দখল করে আসছে এই বিষয়ে তার নিকট জানতে চেয়েছি এবং এক পর্যায়ে তার সাথে আমার বাকবিতন্ডা হয়। আমি কোন কিছু বুঝ উঠার আগেই সে আমাকে আঘাত করতে থাকে। আমি এবিষয়ে থানার ওসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানে মোবাইল ফোনে মৌখিক জানিয়েছি। সুস্থ হয়ে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করবো। এবিষয়ে গ্রাম পুলিশ সুদ্রীপ চন্দ্র বলেন, আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে মারধর করিনি। তার সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। এতে তিনি সরিষার ক্ষেতে পড়ে আহত হন। পরে জানতে পারলাম তিনি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আমি বিষয়টি আমার ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি। বোয়ালদাড় ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ছদরুল ইসলাম জানান, গ্রাম পুলিশ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে মারপিট করেছে বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। ঘটনাটি খুবি দুঃখজনক! আমি আমার ওই গ্রামপুলিশকে মৌখিক শাসন করেছি। সে একজন সাবেক চেয়ারম্যান তার গায়ে আঘাত করা মোটেও ঠিক হয়নি। আমার কাছে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মেফতা বিচার চাইলে আমি তদন্ত সাপেক্ষে এর সঠিক বিচার করবো।তবে এখন পর্যন্ত আমার নিকট লিখিত কোন অভিযোগ আসেনি। হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর- এ আলম জানান, আমাকে গতকাল সাবেক চেয়ারম্যান মেফতাউল জান্নাত মেফতা আমকে জানান গ্রাম পুলিশ জমিজমা বিষয়ের তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। আমি বিষয়টি দেখতে চেয়েছি। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম চেয়ারম্যানকে মারপিট করা হয়েছে। গ্রাম পুলিশ হোক আর কেউ হোক মারপিট এর বিষয়টা মোটেই ঠিক করে নাই। চেয়ারম্যান সুস্থ হয়ে উঠুক বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সায়েম মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি এখনও অবগত হয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।