বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন

News Headline :
ডিমের মূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে মধ্যস্বত্ব ভোগীরা বড় সমস্যা- মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টা কুষ্টিয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এর ১৩৪তম তিরোধান দিবস ২০২৪ উদযাপনের আজদ্বিতীয় দিন ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে তোপের মুখে ছাত্রলীগ নেতা কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে লালন মেলা হতে চুরি হওয়া ১৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার ন্যায় বিচার পেলে আওয়ামী লীগের জীবনের স্বাদ মিটে যাবে-নওগাঁ জামায়াত আমির রাবি’তে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগের ২ নেতা গ্রেফতার ফুলবাড়ীতে বিএনপি‘র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২ পাবনার ঈশ্বরদীতে সন্ত্রাসীদের গুলি ল্যাংড়া বিপু গুলিবিদ্ধ পাবনায় স্বপনের অফিস ভাংচুর করলেন শিমুল সমর্থক হামলা-পাল্টা হামলা পাবনা র‌্যাবের অভিযানে পর্নগ্রাফি মামলার পলাতক আসামী গ্রেফতার

কয়রায় কোটি টাকার প্রকল্পে অনিয়ম ও অর্থ লোপাট

Reading Time: 2 minutes

নিজস্ব সংবাদদাতা, কয়রা খুলনা:
খুলনার কয়রা উপজেলায় ২০২১-২০২২ ও চলতি অর্থবছরে স্থানীয় সরকার উন্নয়ন প্রকল্প-৩ বাস্তবায়ন, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারসহ সরকারি- বেসরকারি কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে কয়রায় ৩৬৫ টি প্রকল্পের প্রায় ৪ কোটি টাকা এবং ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে সদর ইউনিয়নে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের ১৮ লক্ষ টাকা কাগজ-কলমে নামমাত্র কাজ দেখিয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির বিরুদ্ধে। কয়রা সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর কয়রা স্লুইসগেট সংলগ্ন রাস্তা মাটি ভরাট বাবদ এবং লঞ্চঘাট থেকে স্লুইসগেট অভিমুখে রাস্তা সংস্কারে ইটের সলিং বাবদ দুটি প্রকল্পে আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের দবি, স্লুইসগেটের রাস্তাটি তারা স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি ভরাট করে এবং লঞ্চঘাটের রাস্তায় পুরানো ইট তুলে সেখানে কর্মসৃজনের শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হয়েছে। প্রকল্প কমিটির সভাপতি থাকার কথা কয়রা সদর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য লুৎফর রহমানের। তবে তিনি ওই প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।  ওই একই ইউনিয়নের ৬ং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান কোহিনুর জাপান সংস্থার অর্থায়নে ও জেজেএস প্রকল্পের সাড়ে ৪ লক্ষাধিক টাকার গণ শৌচাগারটি নিজ বাড়িতে নির্মাণ করেছেন। শৌচাগারটি কয়রা বাজারের ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও জন সাধারণের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ হলেও ওই ইউপি সদস্য পারিবারিকভাবে ব্যবহার করছেন।  জানা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার বাবদ কাবিখা, কাবিটা ও টিআর কর্মসূচীর আওতায় ৩৬৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩ কোটি ৮৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, ৩৩৭ টন চাল ও ২০৭ টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়৷ সরজমিনে বেশ কয়েকটি প্রকল্প এলাকা ঘুরে কিছু স্থানে কাজের অস্তিত্বই নেই। কয়েকটি প্রকল্পে কিছু কাজ হলেও বেশির ভাগই নামমাত্র কাজে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। উপজেলার আমাদি ইউনিয়নে ‘খাজরা খেয়াঘাট থেকে আমাদি আবাসন অভিমুখে সড়ক পাকাকরণ’ প্রকল্পে বরাদ্দ ২ লাখ টাকা কাজ না করে তুলে নেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার খেয়ার মাঝি আবু মুছা জানান, রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় ঘাটে দীর্ঘদিন যাতায়াতকারীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।  বাগালি ইউনিয়নের ৮ লাখ টাকা বরাদ্দের শ্রীফলতলা ওলি সানার বাড়ি থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি মাটি দিয়ে যেনতেনভাবে করা হয়েছে। গ্রামের মোসলেম সানা, আবদুল ওহাব, শামসুর গাজীসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে দায়সারাভাবে রাস্তাটির কাজ করা হয়েছে।
এদিকে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে মুজিব শতবর্ষে নির্মিত ৯০টি গৃহের অধিকাংশে যাতায়াতের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। পার্শ্ববর্তী উপজেলা পাইকগাছায় সুবিধাভোগীদের রাস্তা নির্মিত হলেও কয়রায় উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের গাফলতির কারণে মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার গৃহে রাস্তার বেহাল দশা রয়ে গেছে। এছাড়াও কয়রা সদর ইউনিয়নে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পে ১৮ লক্ষাধিক টাকার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও বাস্তবায়ন হয়নি গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রাস্তা নির্মাণ। কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম ও সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দীন বলেন, কাগজে-কলমে প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখিয়ে বেশির ভাগ প্রকল্পের টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। কোথাও কাজ হয়েছে নামমাত্র। জনপ্রতিনিধি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির যোগসাজশে বরাদ্দ লোপাট হয়েছে। অথচ এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এলাকার মানুষ সুফল পেত।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জি. এম. সাইফুল ইসলাম জানান, আমি উপজেলায় নতুন এসেছি। শুনেছি, কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় বরাদ্দ ছাড়া হয়নি।  ইউএনও মো: মমিনুর রহমান বলেন, কয়রায় আমার যোগদানের আগে এসব প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবো।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com