শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২২ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নিজস্ব সংবাদদাতা:
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার কারনে নিজেই স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুনের পরিকল্পনা করেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। কক্সবাজারে কর্মরত অবস্থায় জনৈক গায়ত্রী অমর শিং নামে এক এনজিও কর্মীর সঙ্গে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহের একপর্যায়ে বাবুল আক্তার তার স্ত্র্রীকে খুনের পরিকল্পনা করে বলে পিবিআাই এর তদন্তে উঠে আসে
আর এই পরিকল্পনা থেকেই বাবুলের নির্দেশনা অনুযায়ী নৃশংসভাবে খুন করা হয় মিতুকে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তের ধারাবাহিকতায় বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বহুল আলোচিত মিতু হত্যাকাণ্ডের প্রায় পাঁচ বছর পর বুধবার (১২ মে) চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে আরো একটি হত্যা মামলা মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। ওই মামলায় বাবুল আক্তারকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই।মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালে বাবুল আক্তার কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন ইউএনএইচসিআরের এক ফিল্ড অফিসার (প্রটেকশন) গায়ত্রী অমর শিংয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে ওই নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বাবুল আক্তার, এর জেরে তার পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। পরকীয়ার বিষয়টি মিতু জেনে গেলে এর প্রতিবাদ করায় মিতুকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন বাবুল।২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত বাবুল আক্তার সুদানে জাতিসংঘ মিশনে কর্মরত ছিলেন। তখন তার মোবাইল রেখে যান বাসায়। গায়ত্রী ওই মোবাইল নম্বরে বিভিন্ন সময়ে ২৯টি মেসেজ পাঠান। মেসেজগুলো মিতু তার ব্যবহৃত একটি খাতায় লিখে রাখেন। হত্যাকাণ্ডের কয়েকমাস আগে বাবুল আক্তার চীনে যান প্রশিক্ষণের জন্য। তখন বাবুল আক্তারকে গায়ত্রীর উপহার দেওয়া ‘তালিবান’ ও ‘বেস্ট কেপ্ট সিক্রেট’ নামে দু’টি বই পান মিতু। সেই বই গুলোর বিভিন্ন পাতায় বাবুল আক্তার ও গায়ত্রী তাদের পরিচয় ও অন্তরঙ্গ মুহুর্ত ও বিভিন্ন স্থানে তাদের ভ্রমন ও রাত্রী যাপনের কথা লিখে রাখেন।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা শুরু থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন। পরে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া গেছে। আবার মুসা ছিলেন বাবুল আক্তারের সোর্স।
অথচ হত্যাকাণ্ডের পর তদন্তের পর্যায়ে বাবুল আক্তার দাবি করেছিলেন, মুসাকে তিনি চেনেন না। মুসা দীর্ঘদিনের পরিচিত হওয়া স্বত্ত্বেও সুকৌশলে তাকে শনাক্ত না করে জঙ্গিদের দ্বারা হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে দাবি করে মামলাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করেন বাবুল। এদিকে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার আসামি সাইদুল ইসলাম সিকদার প্রকাশ সাকু’র (৪৫) চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৩ মে) বিকেল পৌনে চারটার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। নিখোঁজ কামরুল সিকদার প্রকাশ মুছা’র বড় ভাই সাইদুল ইসলাম সিকদার প্রকাশ সাকুকে রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট এলাকা থেকে বুধবার (১২ মে) রাত ৮টার দিকে গ্রেফতার করে র্যাশব-৭। মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর সাইদুলকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।