শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
চলছে কঠোর লকডাউন। তারপরও সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউন’ উপেক্ষা করে প্রায় দেড় থেকে দুইশত লোকের আড়ম্বড়পূর্ণ জনসামগমে অনুষ্ঠিত হয় বিয়ে অনুষ্ঠান। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলেও তারা এবিষয়ে ছিলেন উদাসীন।
গত শুক্রবার (৩০ জুলাই) দুপুরে উপশহর ৩ নম্বর সেক্টরের ১৮৮ নম্বরের রাজশাহী রেসিডেন্সিয়াল ইন লি: নামের একটি আবাসিক হোটেলে এই বিয়ের অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়েছে।
মো. আহসান কবীর নামের এক স্থানীয় বলেন, শুক্রবার (৩০ জুলাই) সকাল থেকেই আবাসিক হোটেলটিতে চলছিল বিয়ের রান্না-বান্নার আয়োজন। ‘কঠোর লকডাউন’ উপেক্ষা করেও একে একে আসছিলেন বিয়ে বাড়ির লোকজন। স্থানীয়দের বারণ সত্ত্বেও হোটেলটির মালিক আবু ইউসুফ মাসুদ নিজে গেটে উপস্থিত থেকে অতি সর্তকতার সাথে বিয়ে বাড়ির লোকেদের হোটেলে প্রবেশ করান। প্রইভেট কার, মাইক্রো, মোটরসাইকেল ছাড়াও অটোরিকশা যোগেও অতিথিদের আসতে দেখা গেছে। প্রায় শতাধিক লোকের আয়োজন চলছিল হোটেলটিতে।
তিনি বলেন, এবিষয়ে জানানো হয়েছিল উপশহরে অবস্থিত পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এসআই শাহিনুরকে। তারপরও তিনি কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উল্টো ভেতর থেকে ঘুরে এসে তিনি সাংবাদকিসহ স্থানীয়দের জানান, ‘বিয়ে নয়, কয়েকজন বসে এমনি গল্প ও খাওয়া-দাওয়া করছেন।’
বিধিনিষেধ অমান্য করেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান দৈনিক সময়ের কাগজ পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মো. ফয়সাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করেই শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠানের খবর পেয়ে রাজশাহী ইন রেসিডেন্সিয়াল লি: হোটেলে যায়। কিন্তু হোটেলের গেটে অবস্থানরত মালিক আমিসহ উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিককে পুলিশের উপস্থিতিতেই তথ্য ও ছবি-ভিডিও নিতে আপত্তি করেন। এমনকি গালিগালাজ করে চাঁদাবাজির মামলা প্রদান করা হবে বলেও হুমকি প্রদান করেন। এতো কিছুর পরও উপশহর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ শাহিনুর কোনো পদক্ষেপ নেননি।
এবিষয়ে উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘এখানে ২০ থেকে ২৫ জন লোক নিয়ে তারা গল্প করছিলেন। বিয়ের কোনো অনুষ্ঠান সেখানে হচ্ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিসি (বোয়ালিয়া থানা জোন) স্যার আমাকে যা বলতে বলেছে আমি তাই হোটেলের ভিতর থেকে বলে বেড়িয়ে এসেছি।’
পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের ডিসি কি বলেছেন জানতে চাইলে তিনি সাংবাদকিকে জানান, ‘আপনাকে সেটা বলা যাবে না।’
এ ব্যপারে গত শুক্রবার দুপুর দুইটার দিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিলকে অবগত করা হয়। তিনি বলেন, কঠোর লকডাউন’ উপেক্ষা করে কোন ধরনের অনুষ্ঠানের সুযোগ নেই। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন তিনি।
এই বিষয়টি জানানো হয়েছিল রাজশাহী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল হককে। এব্যাপারে তিনি বলেন, এই বিষয়টি দেখেন জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) মো. আবু আসলাম। আমি ডিসি স্যারসহ এডিএম কে বিষয়টি অবগত করছি। তারা এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’
পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) মো. আবু আসলাম বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় বিষয়টি অবগত করেছিলাম। কিন্তু তারা এবিষয়ে কোনো প্রকারের কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি, তা আগামীকাল অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।