বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নিজস্ব সংবাদদাতা,রংপুর:
প্রায় ৩০ ফুটের মধ্যে পাশাপাশি দু’টি অগভীর নলকুপ। একটিতে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ খুঁটি স্থাপন করেছে। লাগানো হয়েছে মিটার। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। পাশেরটি কোন কার্যক্রম করেনি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। কিন্তু হঠাৎ ঘুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ কর্তৃপক্ষ বলছেন খুঁটিগুলো তারা স্থাপন করেনি। কোন অবৈধ পন্থায় খুঁটিগুলো স্থাপন হতে পারে বলে ধারনা করছেন। অগভীর নলকুপের সেচ সংযোগ নিয়ে এলাকায় দেখা দিয়েছে দু’পক্ষের উত্তেজনা। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও সমাধানে আসেনি কোন পক্ষই। ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটি ইউনিয়নের মারুয়াদহ গ্রামে।সমন্বিত ক্ষুদ্রসেচ নীতিমালা অনুয়ায়ী কোন অগভীর নলকুপ স্থাপনের জন্য একটি অগভীর নলকুপ হতে আরেকটির দুরত্ব হবে ৮০০ ফুট। দূরত্ব ও সম্ভাবতা যাচাই করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএসডিসি) অগভীর নলকুপ স্থাপনের লাইসেন্স প্রদান করে। কিন্তু সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মারুয়াদহ গ্রামে কৃষক আল-আমিন মিয়া ও আব্দুস সালামের ক্ষেত্রে এটি মানা হয়নি বলে ধারনা করছেন স্থানীয়রা। কারণ মাত্র ৩০ ফুটের মধ্যে ওই দুটি অগভীর নলকুপের লাইসেন্স প্রদান করেছেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএসডিসি) গাইবান্ধা ক্ষুদ্রসেচ জোনের সহকারী প্রকৌশলী’র কার্যালয়। প্রথমে কৃষক আল-আমিনকে লাইসেন্স প্রদান করলেও পরে আব্দুস সালামকে লাইসেন্স দেয় বিএডিসি। এরফলে মারুয়াদহ গ্রামের দু’গ্রæপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সেচ কমিটি প্রথমে সেচ সংযোগের লাইনেন্স প্রদান করে উত্তর মারুয়াদহ গ্রামের আল-আমিন মিয়াকে। যার দাগ নম্বর দেখানো হয়েছে ৪৭১৮। লাইসেন্স প্রাপ্তির পর রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এ বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণের আবেদন করেন আল-আমিন। এরকিছুদিন পরে ৩০ ফুট দুরত্বের মধ্যে আব্দুস সালামকে অগভীর নলকুপের আরেকটি লাইসেন্স দেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সেচ কমিটি ও গাইবান্ধা ক্ষুদ্রসেচ জোনের সহকারী প্রকৌশলী’র কার্যালয়। যার দাগ নম্বর দেখানো হয়েছে ৪৭১৮। জানা গেছে, ৪৭১৮দাগের জমিটি আব্দুস সালামের নয়। এছাড়াও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সেচ কমিটি রেজুলেশনে আব্দুস সালামের লাইসেন্সের দাগ নম্বর দেখানো হয়েছে ৪৯৬৬। এটিও আব্দুস সালমের জমি নয়। এভাবে নানা অসঙ্গতি দেখতে পেয়ে আব্দুস সালামের লাইসেন্সটি বাতিল করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সেচ কমিটি। তারপরও থেমে নেই আব্দুস সালাম। তিনি চলতি মাসের ৫ তারিখে অবৈধভাবে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করেছেন।স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কিছুদিন আগে পল্লী বিদ্যুতের কয়েকজন লোক এসে আব্দুস সালামকে অগভীর নলকুপের জন্য ২টি বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করে গেছে। এসময় পুলিশের বেসে কয়েকজন লোকও এসেছিল। কিন্তু রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সুন্দরগঞ্জ জোনাল কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আব্দুল বারী বলছেন সেখানে খুঁটি স্থাপন করা হয়নি। তিনি বলেন, সেখানে লাইন নির্মাণের প্রক্রিয়া হয়নি। তাই লাইন নির্মাণ প্রশ্নেই ওঠেনা। তবে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কোন একটি অসাধু চক্র এটি করতে পারে। কারণ অনেক ঠিকাদারের কাছে খুঁটি আছে, তারা কেউ স্থাপন করতে পারে। তিনি আরও কবলে, মারুয়াদহ গ্রামের আল-আমিন মিয়া ও আব্দুস সালামের অগভীর সেচ সংযোগ নিয়ে তুমুল গন্ডগোল চলছে। আমরা একবার আল-আমিন মিয়াকে সংযোগ প্রদান করতে গিয়েছিলাম। তখন আব্দুস সালাম ও তার লোকজন আমাদের উপর হামলা করেছিল। পরে থানায় সাধারন ডায়েরী করেছি। সেখানে বিষয়টি নিয়ে চরম উত্তেজনা চলছে। এটির সুযোগ কেউ নিয়ে খুঁটি স্থাপন করতে পারে।পাশাপাশি ৩০ মিটারের মধ্যে ২ জনকে অগভীর নলকুপের লাইসেন্স প্রদানের বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সেচ কমিটি ও গাইবান্ধা ক্ষুদ্রসেচ জোনের সহকারী প্রকৌশলী’র কার্যালয়ের কেউ কথা বলতে রাজি হননি। ওই কার্যালয়ে একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রথমে আল-আমিন মিয়া লাইসেন্স প্রদান করা হয়। কয়েক মাস পরে আব্দুস সালামকেও লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এখানে মোটা অংকের টাকার খেলা হয়েছে। একারণে বিষয়টি নিয়ে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে।আল-আমিন মিয়া বলেন, অবৈধভাবে খুঁটি স্থাপন করছে আব্দুস সালাম। এসময় তারা পুলিশের পোশাক পড়ে লোকজন নিয়ে এসেছিল। আমি বিষয়টি সুন্দরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে অবগতি করেছি। কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, ‘উপজেলা সেচ কমিটি আমাকে লাইসেন্স দিয়েছে। সেই অনুযায়ী পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের জন্য খুঁটি স্থাপন করেছে।’ তবে উপজেলা সেচ কমিটি আপনার লাইসেন্স বাতিল করেছে এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ বলছে তারা খুঁটি স্থাপন করেনি-এমন প্রশ্ন করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।