বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ন

News Headline :
ডিমের মূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে মধ্যস্বত্ব ভোগীরা বড় সমস্যা- মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টা কুষ্টিয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এর ১৩৪তম তিরোধান দিবস ২০২৪ উদযাপনের আজদ্বিতীয় দিন ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে তোপের মুখে ছাত্রলীগ নেতা কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে লালন মেলা হতে চুরি হওয়া ১৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার ন্যায় বিচার পেলে আওয়ামী লীগের জীবনের স্বাদ মিটে যাবে-নওগাঁ জামায়াত আমির রাবি’তে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগের ২ নেতা গ্রেফতার ফুলবাড়ীতে বিএনপি‘র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২ পাবনার ঈশ্বরদীতে সন্ত্রাসীদের গুলি ল্যাংড়া বিপু গুলিবিদ্ধ পাবনায় স্বপনের অফিস ভাংচুর করলেন শিমুল সমর্থক হামলা-পাল্টা হামলা পাবনা র‌্যাবের অভিযানে পর্নগ্রাফি মামলার পলাতক আসামী গ্রেফতার

আগামীকাল শুক্রবার ভোর থেকে কঠোর ‘লকডাউন’ শুরু হচ্ছে

Reading Time: 3 minutes

ডেক্স সংবাদ:
কোরবানির ঈদের জন্য ৯ দিন লকডাউন শিথিলের পর শুক্রবার থেকে পুনরায় বিধি-নিষেধগুলো আরোপ হবে বলে সরকার আগেই সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল।
ঢাকায় ফিরতে যাত্রীদের মধ্যে এক ধরনের তাড়াহুড়া লক্ষ্য করা গেছে। ঢাকামুখী অধিকাংশ যাত্রীরাই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আরও দুই/একদিন পর থেকে লকডাউন দিতে পারতো সরকার। ঈদের পরের দিনই ছুটতে হচ্ছে ঢাকায়। শুক্রবার খোলা থাকলেও ধীরে-সুস্থ্যে যাওয়া যেতো। ’
বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় শুরু হয়েছে। আজ দুপুরের পর থেকেই বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ঢাকামুখি মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। লঞ্চে যাত্রী এবং ফেরিতে যাত্রীবাহী ছোট যানবাহনের চাপ রয়েছে।
তবে ঈদের পর বিধি-নিষেধ আরোপ পিছিয়ে যেতে পারে বলে গুঞ্জন চললেও বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন জানান “পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আমরা আগামীকাল থেকে বিধিনিষেধ পালন করা শুরু করব। এ বিধিনিষেধে কোনো পরিবর্তন আসবে না।”
যারা ঈদে ঢাকার বাইরে গেছে, তাদের ফিরে আসার কোনো সুযোগ থাকবে কি না- প্রশ্নের জাবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “যারা গেছে তারা আগামী ৫ অগাস্ট পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করুক, কারণ সবকিছুই তো বন্ধ।” “এ সময়ে সবচেয়ে কঠোরতম অবস্থানে আমরা থাকব। এছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই।
গত ১৫ থেকে ২২ জুলাই লকডাউন শিথিল করে সরকার। বিধি-নিষেধ শিথিল করায় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার মধ্যে এবার সরকার আরও কঠোর থাকবে বলে জানান তিনি।
বিধিনিষেধে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে কঠোরতম অবস্থানে থাকবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
কোভিড-১৯ মহামারীর গত দেড় বছর পর গত এপ্রিল থেকে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। মে মাসে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও জুলাই মাসে আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলে।
জুন মাসে যেখানে ১ লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। জুলাইয়ের ২০ দিনেই তা ২ লাখ ছাড়িয়ে যায়। জুনে ১ হাজার ৮৮৪ জনের মৃত্যুর বিপরীতে জুলাই মাসের ২০ দিনেই সাড়ে ৩ হাজার মৃত্যু হয়েছে।
লকডাউন শিথিলের পর ঈদযাত্রায় হারিয়েছিল স্বাস্থ্যবিধি। এই পরিস্থিতিতে লকডাউন শিথিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছিল কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণের লকডাউনে এতদিন শিল্প কারখানা চালু থাকলেও সাময়িক শিথিলতার পর ২৩ জুলাই থেকে যে লকডাউন আসছে, তাতে শিল্প-কারখানাও বন্ধ রাখতে বলেছে সরকার।
তবে কোরবানির পশুর চামড়া সংশ্লিষ্ট খাত, খাদ্যপণ্য এবং কোভিড-১৯ প্রতিরোধে উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান ঈদের পর ‘কঠোর’ বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকছে।
কঠোর লক ডাউনে যা যা থাকছেঃ-
০১। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। তবে সরকারি কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থলের এলাকায় অবস্থান করবেন এবং দাপ্তরিক কাজ ভার্চুয়ালি সম্পন্ন করবেন।
০২। সব ধরনের শিল্প কারখানা বন্ধ থাকবে, যা এতদিন লকডাউনের মধ্যে খোলা রাখার অনুমতি ছিল।
০৩। সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) সকল প্রকার যন্ত্র চালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
০৪। শপিংমল/মার্কেটসহ সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
০৫। সকল পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
০৬। জনসমাবেশ হয় এই ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিক পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
০৭। জরুরি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক, কভার্ডভ্যান কার্গো ভেসেল এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।
০৮। আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার৷ বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি) খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহণ, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলী, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্যালসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র দেখিয়ে চলাচল করতে পারবে।
০৯। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।
১০। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত (অনলাইন/টেকওয়ে) খাবার বিক্রি করতে পারবে।
১১। বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থল বন্দর এবং সংশ্লিষ্ট অফিস নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে।
১২। কঠোর বিধিনিষেধের বাইরে থাকবে চামড়া, খাদ্য ও ঔষধ খাত।
১৩। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন /সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবে বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৪। তবে যারা করোনাভাইরাসের টিকার তারিখ পেয়েছেন, তারা টিকা কার্ড দেখিয়ে নির্ধারিত দিনে টিকাকেন্দ্রে যাতায়াত করতে পারবেন।
১৫। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে এবং বিদেশগামী যাত্রীরা তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমনের টিকেট দেখিয়ে গাড়ি ব্যবহার করে যাতায়াত করতে পারবেন।
১৬। বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকতার কার্যালয় খোলা রাখার বিষয়ে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
১৭। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
১৮। ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
১৯।স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদে নামাজের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্দেশ দেবে।
২০। ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ে টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
২১। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যাক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করবে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দেবে।
২২। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার নিয়োগ ও টহলের অধিক্ষেত্র , পদ্ধতি ও সময় নির্ধারণ করবেন। সেই সঙ্গে স্থানীয় বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com