মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪২ অপরাহ্ন

News Headline :
ডিমের মূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে মধ্যস্বত্ব ভোগীরা বড় সমস্যা- মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টা কুষ্টিয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এর ১৩৪তম তিরোধান দিবস ২০২৪ উদযাপনের আজদ্বিতীয় দিন ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে তোপের মুখে ছাত্রলীগ নেতা কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে লালন মেলা হতে চুরি হওয়া ১৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার ন্যায় বিচার পেলে আওয়ামী লীগের জীবনের স্বাদ মিটে যাবে-নওগাঁ জামায়াত আমির রাবি’তে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগের ২ নেতা গ্রেফতার ফুলবাড়ীতে বিএনপি‘র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২ পাবনার ঈশ্বরদীতে সন্ত্রাসীদের গুলি ল্যাংড়া বিপু গুলিবিদ্ধ পাবনায় স্বপনের অফিস ভাংচুর করলেন শিমুল সমর্থক হামলা-পাল্টা হামলা পাবনা র‌্যাবের অভিযানে পর্নগ্রাফি মামলার পলাতক আসামী গ্রেফতার

খানমরিচ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ দুদকে অভিযোগকারী ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষ্যগ্রহণ

Reading Time: 2 minutes

সেলিম মোর্শেদ রানা, পাবনা :
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আছাদুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত ও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে পাবনা দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত কার্যালয়ে অভিযোগকারী ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ৩টায় পাবনা দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত কার্যালয়ে এ স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। অভিযোগকারী আটজন ইউপি সদস্য চেয়ারম্যানের নানা অনিয়মের তদন্তপ‚র্বক শাস্তি দাবি জানিয়ে গত ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রয়ারী পাবনা দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক ও পাবনার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। ইউপি সদস্যদের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, গত অর্থবছরে খানমরিচ ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে ২০৭ জন শ্রমিকের ব্যাংক স্বাক্ষর জাল করে ১৪ লাখ ৪৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন ইউপি চেয়ারম্যান আছাদুর রহমান। এ ছাড়া ইউনিয়নের ৫২১ জন ভিজিডি কার্ডধারী নারীকে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার সময় তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৫০ টাকা করে আদায় করেন তিনি। টাকা দিতে না পারলে তাঁদের চাল দেন না। এভাবে প্রতি মাসে ২৬ হাজার ৫০ টাকা পকেটে পোরেন তিনি। এমনকি ইউনিয়নের ঘোষবেলাই গ্রামের চায়না দাস, দাসবেলাই গ্রামের হাজেরা খাতুনের ভিজিডি কার্ডের চাল চেয়ারম্যান নিজেই ভোগ করেন। এই কর্মসৃজন ও ভিজিডি খাতে অনিয়ম করে গত চার বছরে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান আছাদুর রহমান। এরপর ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পেও নানা অনিয়ম করেছেন তিনি। আর্থিক সচ্ছলতা থাকা সত্তে¡ও নিজস্ব লোকদের সরকারি ঘর পাইয়ে দিয়েছেন চেয়ারম্যান। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তা নির্মাণেও তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ইউনিয়নের শ্রীপুর থেকে পরমানন্দপুর, বড়পুকুরিয়া থেকে দুধবাড়িয়া, বৈদ্ধমরিচ থেকে কাজীপাড়া এবং মাদারবাড়িয়া থেকে রঘুনাথপুর পর্যন্ত সরকারি টাকায় রাস্তা পুননির্মাণের সময় গ্রামের জনগণ, মসজিদ, মাদরাসা ও সামাজিক তহবিল থেকে জোর করে লাখ লাখ টাকা আদায় করেন। এমনকি মাদারবাড়িয়া ও রঘুনাথপুর গ্রামের জমির মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জবরদখল করে রাস্তা নির্মাণ করেছেন তিনি। এ ছাড়া ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া থেকে সমাজগ্রাম পর্যন্ত কর্মসৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তা পুনর্র্নিমাণ করে একই রাস্তায় আরেকটি প্রকল্প দেখিয়ে দুই টনেরও বেশি চাল আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। অভিযোগে আরো জানা যায়, সরকারি সেবা দিতেও চেয়ারম্যান আছাদুর রহমান অবৈধভাবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা নেন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উত্তরাধিকার সনদ দিতে তাঁর নির্দেশে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। জন্মনিবন্ধন করতে সরকারি ফি ১৫০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত নেন। গ্রাম আদালতে বিচার পেতে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা আদায় করেন। এসব অনিয়ম করে চেয়ারম্যান গত চার বছরে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ ইউপি সদস্যদের। অভিযোগকারী ইউপি সদস্যরা আরও বলেন, ‘চেয়ারম্যান আছাদুর রহমান চার বছর ধরে ইউপি সদস্যসহ গ্রামের সাধারণ মানুষের ওপর শোষণ ও নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। নামমাত্র কাজ করে সব প্রকল্পের টাকা নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। এত দিন ভয়ে এ বিষয়ে আমরা কেউ মুখ খুলতে পারিনি। এখন আমরা সবাই একজোট হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিচার চাচ্ছি।’ তবে সে-সময়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে সব অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান আছাদুর রহমান বলেন, তাঁর বিরোধী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মহল ষড়যন্ত্র করে ইউপি সদস্যদের দিয়ে এই অভিযোগ করিয়েছে। তদন্তে সঠিক তথ্য-প্রমাণাদি তুলে ধরে এসব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করবেন বলে জানান তিনি। দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয় পাবনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযোগকারী খানমরিচ ইউপি সদস্যদের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে খানমরিচ ইউপি চেয়ারম্যানের বক্তব্য গ্রহণ করা হবে। অভিযোগ সত্য প্রমানিত হলে আইনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com