মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
হারুন উর রশিদ সোহেল,রংপুর:
সারাদেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ এবং জাতীয় সংসদে শিক্ষকদের জন্য ১০% আসন বরাদ্দ, সহ পূর্নাঙ্গ উৎসবভাতা, ৫০% বাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন দাবিতে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম ভুইয়ার নির্শেদনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসাবে গতকাল রোববার দুপুরে শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোট রংপুর জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজনে নগরীর কাচারী বাজার এলাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট রংপুর বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব ও মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি রংপুর জেলা কমিটির আহবায়ক মাওলানা মোহা: ইনামুল হক মাজেদীর সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন, ঐক্যজোটের রংপুর জেলা কমিটির আহবায়ক মোস্তফা হারুন অর ইয়াতিমুল হাসান লিটন, সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি রংপুর জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মাও: অধ্যক্ষ আব্দুল আলিম, সদস্য সচিব মাও: হোসেন সোহরাওয়ার্দী, যুগ্ম সদস্য সচিব যাথাক্রমে মাও: আবু তালেব, মাও: আবুল কাশেম, মাও: আব্দুল মমিন জিহাদী, এসময় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি রংপুর জেলা কমিটির সদস্য মাও: আব্বাস আলী, মাও: ইউনুস আলী, মাও: ছোরত আলী খন্দকার, ঐক্যজোটের রংপুর জেলা কমিটির সদস্য মাসুদুর রহমান বিএসসি, মো: লাল মিয়া, আব্দুল খালেক মন্ডল, জুয়েল মন্ডল, দুলু মন্ডল, বাবলু মিয়া প্রমুখ। এসময় শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি,কারিগরি শিক্ষক সমিতিসহ ঐক্যজোট ভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের রংপুর জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।পরে রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানের মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারিদের চাকুরি জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত স্বারকলিপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী ডা.দিপু মনি বরাবরে প্রদান করা হয়।স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড হলেও দেশের শিক্ষক সমাজ অবহেলিত, বিভিন্নভাবে তারা হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। আজ তাদের চাকরির নিরাপত্তা,আর্থিক সচ্ছলতা,সামাজিক মর্যাদা নেই। শিক্ষকরা সভ্য জাতি গঠনের কারিগর তাই শিক্ষকদের অভুক্ত রেখে জাতির উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কারণে শিক্ষকরা তাদের পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হয়ে চাকরি হারিয়ে অনেকে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সরকারি-বেসরকারি স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক কর্মচারীদের সমযোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও বেতন স্কেলে ও আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধার দিক থেকে পার্থক্য রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি স্কুল কলেজে একই সিলেবাসে পড়ানো হয়। কিন্তু সরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক কর্মচারীরা তাদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা ও বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট পেয়ে থাকেন। অথচ বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন স্কেলের ২৫ শতাংশ এবং কর্মচারীদের শতকরা ৫০ শতাংশ উৎসবভাতা প্রদান করা হয়। বেসরকারি-শিক্ষক কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া বাবদ ১ হাজার টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা করে প্রদান করা হয়। এর বাইরে রাজনীতির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা বিধি মোতাবেক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে পারছেন না। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতারাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে থাকেন। আগে শিক্ষকসহ অন্যান্য পেশার সাথে জড়িতরা জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতেন। কিন্তু বর্তমানে ব্যবসায়ী ও আমলারা রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেন। ফলে সুদখোর, মুনাফা কারবারি, কালোবাজারি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষকদের মহান জাতীয় সংসদে ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করলে সংসদ আরও বেশি অলংকৃত হবে।শিক্ষক নেতারা আরও বলেন,আর্থিক সচ্ছলতা,চাকরির নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা না থাকায় অনেকে আজ এ পেশায় আসতে চান না। এ অবস্থায় শিক্ষক ও শিক্ষাকে বাঁচাতে হলে এখন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। এই দাবি এখন সময়ের দাবি। এই দাবি পূরণে সরকারের অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন নেই। ছাত্র বেতন,সেশন চার্জ,প্রতিষ্ঠানের সম্পদ থেকে গৃহীত অর্থ,রিজার্ভ ফান্ড ও সাধারণ তহবিলের অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হলে এ থেকে বেসরকারি-শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করা সম্ভব।শিক্ষক নেতারা সারাদেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ এবং জাতীয় সংসদে শিক্ষকদের জন্য ১০% আসন বরাদ্দ, সহ পূর্নাঙ্গ উৎসবভাতা, ৫০% বাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন দাবি ও মহানগর শিক্ষকদের মহানগর ভাতা প্রদানের দাবি জানান। অন্যথায় আগামী ১ লা আগস্ট ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে বৃহত্তম কর্মসূচীর ঘোষণা দেয়ারও হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে।