সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন

News Headline :
পাবনা প্রেসক্লাবের অনিয়ম তদন্তে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কমিটি গঠন মহানগরীতে স্বর্ণের দোকানে চুরির অভিযোগে জনতার হাতে আটক নারীকে পুলিশে সোপর্দ পাঁচ শতাধিক নবীন শিক্ষার্থীকে বরণ করলো হাবিপ্রবি ছাত্রশিবির মানুষকে যারা কষ্ট দেয় তাদেরকে পরিহার করুন : এ.কে.এম. আমিনুল হক যুবদল নেতা বাঁধনের আয়োজনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত রাজশাহী মহানগরীতে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পিংকু-সহ গ্রেফতার ৮ জুড়ীতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে বিজিবির হাতে আটক ৮ পাবনার ঈশ্বরদীতে যুবলীগ কর্মী মানিক হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামি গ্রেফতার গোবিন্দগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ২৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রংপুর বিএনপি ও আহবায়ক সামুর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে জোরপূর্বক ভিডিও ধারণ করে অপপ্রচারের অভিযোগ মামলার বাদির

দুই বাংলার হাজার হাজার ভাষাপ্রেমী বেনাপোল নোমান্সল্যান্ডে

Reading Time: 2 minutes

নিজস্ব সংবাদদাতা, বেনাপোল:

বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয় দুই বাংলার হাজার হাজার ভাষা প্রেমীদের মিলন মেলা। কাঁটাতারের বেড়া ভুলে সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায়। মানুষের ঢল থামাতে দু’দেশে বিএসএফ এবং বিজিবি বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে নোম্যান্সল্যান্ডে নির্মিত অস্থায়ী শহিদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যগন। ভৌগলিক সীমারেখা ভুলে কেবলমাত্র ভাষার টানে দুই বাংলার মানুষ একই মঞ্চে তুলে ধরলেন বাংলা ভাষার জয়গান। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বেনাপোল চেকপোস্ট নোম্যান্সল্যান্ডে মঙ্গলবার সকাল ফুলের ডালিতে ভরে যায়। বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমাদের প্রাণ কাঁদে। তাই তো বারবার ছুটে আসি দুই দেশের বাঙালী বাংলাভাষী মানুষের পাশে। ভাষা দিবসের এই দিনে থাকে না কোন জড়তা। জয় বাংলা ধ্বনি দিতে আমাদেরও মন চায়। আমরা চাইনা কাঁটাতারের বেড়া। মিলে মিশে একাকার হয়ে থাকতে চাই যেমনটি করেছেন আমাদের পূর্ব পুরুষেরা। এভাবেই মনের আকুতি প্রকাশ করছিলেন বারাসাত থেকে আসা দীলিপ বাড়ুই, হাবড়ার নমিতা দে সহ অনেকেই। দুপুর ১১ টার দিকে বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য এমপি, যশোর-১ (শার্শা) আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধিদল নোম্যান্সল্যান্ডে শহিদ বেদীর পাদদেশে পৌঁছালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বিধায়ক শ্রীমতি বীনা মন্ডল,বনগাঁও পৌর চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ, সাবেক সাংসদ মমতা ঠাকুরের নেতৃত্বে ভারত থেকে আসা হাজার হাজার বাংলা ভাষী মানুষ বাংলাদেশিদের ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে নেয়। এ সময় ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল,২১ উদযাপন কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু ও সচিব শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, এবং ভারতের পক্ষে বিশেষ অতিথি বনগাও পৌর সভার মেয়র গোপাল শেঠসহ অনুষ্ঠানে উভয় দেশের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো অংশ নেয়। একপর্যায়ে দু’দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তাগন অস্থায়ী শহিদ বেদীতে পুর্স্পাঘ নিবেদন করেন।শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর উভয় দেশেরবিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো শত:স্ফূর্তভাবে অংশ নেয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। দুই দেশের জাতীয় পতাকা, নানা রং এর ফেস্টুন, ব্যানার, প্লে­কার্ড, আর ফুল দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় নোম্যান্সল্যান্ড এলাকা। দুই বাংলার মানুষের এ মিলন মেলায় উভয় দেশের সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহের আমেজ সৃষ্টি হয়। একে অপরকে আলিঙ্গন করে সকল ভেদাভেদ যেন ভুলে যায় কিছু সময়ের জন্য। ফুলের মালা, মিস্টি ও ফুল বিনিময় করে উভয় দেশের আবেগপ্রবণ অনেক মানুষ বাঙালীর নাড়ির টানে একজন অপরজনকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। ক্ষণিকের জন্য হলেও স্তব্ধ হয়ে যায় নোম্যান্সল্যান্ড এলাকা।
এর আগে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ৫২-এর ভাষা আন্দোলন ও ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তিনি বলেন, এদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র বিকশিত হয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ আজ মাথা চড়া দিয়ে উঠেছে। দুই দেশের নেতৃত্বে এই জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা হবে। তাদের ভাষা ও ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের দুই দেশের মধ্যে উপস্থিত সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিতকে আরো শক্তিশালি করবে। এদিকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবীব জানান ২০০২ সাল থেকে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল চেকপোস্টের জিরো পয়েন্টে মাতৃভাষা দিবস পালন করে আসছে দু‘বাংলার মানুষ। সমগ্র অনুষ্ঠানে নেয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে উভয় দেশের সীমান্ত ও চেকপোষ্ট এলাকায়। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত বিজিবি ও বিএসএফ। তবে জিরো পয়েন্টে অনুষ্ঠান চলাকালিন সময়ে উভয়ে দেশে ১ ঘন্টা পাসপোর্ট যাত্রী চলাচল বন্ধ ছিলো। এতে আটকা পরা প্রায় ১ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী নানাবিধ হয়রানীর শিকার হয়। চরম ভোগান্তির শিকার হয় চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীরা। নো-ম্যান্স ল্যান্ডের অস্থায়ী শহিদ বেদীতে পুষ্প অর্পণ শেষে আটকে পরা পাসপোর্ট যাত্রীদের দ্রুত যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com