নিজস্ব সংবাদদাতা, শাজাহানপুর বগুড়া :
অফিসে আসা যাওয়ার নির্ধারিত সময় মেনে চলছেন না বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা। মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশনা মোতাবেক সরকারি মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জনস্বার্থে সকাল ৯টায় অফিসে আসার নিয়ম থাকলেও উপজেলা প্রশাসনের দ্বায়িত্বহীনতা ও তার দাপটে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিয়ম অমান্য করে চলছেন। প্রতিদিন বেলা ১১টার আগে অফিসে আসেন না।এমনটি জানিয়েছেন তার অধিনস্থ অফিস সহকারী নজরুল ইসলাম আকাশ। এছাড়াও ওই মহিলা বিষয়ক অফিসার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম,প্রশিক্ষণার্থী বাছাইয়ে দুর্নীতি সহ দায়িত্বে অবহেলাসহ নানা অভিযোগ উঠছে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কিশোর কিশোরী ক্লাবের জেন্ডার প্রমোটর তাকিয়া খাতুন অভিযোগ করে বলেন আমাদের ক্লাব গুলোর বাজেট বরাদ্দ আমাদের হাতে দেয় না।আর কত বাজেট থাকে এগুলো বিষয় কিছুই জানাই না। সম্প্রতি বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্লাবগুলোর সম্ভবত ১ হাজার টাকা মত বাজেট ছিল।এখানে শুধ একটা ব্যানার ছাড়া আর কিছুই দেয় নি। কিশোর কিশোরী ক্লাবের এক শিক্ষক বলেন,প্রতি সপ্তাহে ক্লাস শেষে ২০টাকা করে নাস্তা দেওয়া হয়। অনেক সপ্তাহে আবার ক্লাস হয় না,কখনো উপস্থিত ৮/১০জন থাকে। অনুপস্থিত থাকলে নাস্তা টাকা দেওয়া হয় না।সে টাকা গুলো কোথায় যায় এ বিষয়ে আমরা জানি না। গত বুধবার ২১ডিসেম্বর উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পরিচালিত আইজি ফ্যাশন ডিজাইনার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ক্লাসে তথ্য সংগ্রহ জন্য প্রবেশ করতে চাইলে অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরে সেখানে হাজিরা খাতায় বেশকিছু অসংগতি দেখা যায়। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়,যদি কেউ প্রশিক্ষণে বাদ পড়ে তার পরিবর্তন টাকার বিনিময়ে অন্য জনকে নেওয়ার দাবি করেন। গত ব্যাচের সেলাই প্রশিক্ষণার্থী সাজেদা বেগম বলেন, আমাদের সন্মানী ভাতা ১২ হাজার টাকার স্থলে রেবেকা সুলতানা ম্যাডাম ৬হাজার টাকার দিতে ধরছিল পরে সকলের তোপের মুখে ১২ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয়। প্রতিদিন বেলা ১১ টার পরে অফিস আসার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা বলেন,আমি উপজেলা পরিষদের ক্যাম্পাসেই থাকি। বাসা থেকে আমার অফিসে আসতে সময় লাগে মাত্র ২মিনিট।তার মানে আমি ২৪ঘন্টা অনডিউটিতে আছি। প্রমিক্ষণে ১২ হাজার টাকার স্থলে ৬হাজার টাকার কথা সত্য নয়। করোনাকালিন সময়ে সব পেমেন্ট কমানো হয়েছিল। অফিস থেকে ভুল করে ৬হাজার টাকার চিঠি করা হয়েছিলো। পরে সম্পূরক করে টাকা উত্তোলন করে ১২হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। ৯টি ক্লাবের প্রত্যেকটির জন্য ১হাজার টাকা করে বরাদ্ধ ছিলো।সেই টাকা থেকে তাদের জন্য প্যানা করে দিয়েছি এবং বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে খরচ করেছি। আইজি ফ্যাশনডিজাইনার প্রশিক্ষণে,পুরাতন হাজিরা খাতা শেষ করে নতুন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে হবে। অনেক সময় কেউ কেউ প্রশিক্ষনে হাজির হয়না। তখন সেখানে অন্যজনের নাম বসিয়ে দেয়া হয়। জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর উপ পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিস সরাসরি সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেখভাল করেন।ওনার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে ইউএনও কে জানানোর পরামর্শ দেন। এ বিষয়ে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা জানান, এ সম্পর্কে আমার জানা নেই। কারণ এখন অবদি কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। অফিস সময় বিষয় সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে সরকারি নিয়মানুযায়ী অফিস পরিচালনা করার জন্য। তবে যে কোন বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করলে আমি যথাযথ ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।