বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১১ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
এবিএম ফজলুর রহমান:
কোন কর্মসুচি ছাড়াই নিরবেই কেটে গেল পাবনা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান, দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ শহিদুল্লাহ বাচ্চুর ২৫তম মৃত্যু দিবস। তার হত্যা রহস্য আজ উদঘাটিত হয়নি। এতে করে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে পরিবারের মধ্যে।
১৯৯৭ সালের এই দিনে পাবনা সদর উপজেলার টেবুনিয়া কৃষি খামারের নিজ গাড়ীর মধ্যে আততায়ীর গুলিতে তিনি নিহত হন। দীর্ঘ ২৫ বছরেও এই হত্যা মামলার বিচার হয়নি। এ ব্যাপারে তার দল ও পরিবার থেকেও হত্যার বিচার দাবী করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি শহরে মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা পর পর দুই বার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাচিত পৌরসভা চেয়ারম্যান শেখ শহিদুল্লাহ বাচ্চুর ১৯৯৭ সালের ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় নিজ গাড়ীর মধ্যে গুলিতে তিনি নিহত হন। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে পাবনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। অন্ত ১০ বার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ ও পরিবর্তন করা হয়।
বিএনপি জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৫ সালে ২২ নভেম্বর সিআইডি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, পাবনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি সাবেক সভাপতি আলহাজ আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, পাবনা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বিশু, পাবনা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মোশারোফ হোসেন, পাবনা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামীলীগ নেতা কামরুল হাসান মিন্টু, পাবনা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফরিদুল ইসলাম ডালু, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল বারী বাকী, আনোয়ার হোসেন সুর্য, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক মরহুম আজিজুর রহমান আরজু, গয়েশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন মুতাই, মাসুদ, মনা কমিশনারসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করা হয়। এর মধ্যে ২০০৬ সালে জাপা নেতা আজিজুর রহমান আরজু সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন। বিএনপি শাসনামলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে পাবনা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বিশুর নাম প্রত্যাহার করা হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, পাবনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি সাবেক সভাপতি আলহাজ আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, পাবনা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মোশারোফ হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল বারী বাকী, আনোয়ার হোসেন সুর্য, মোতাহার হোসেন মুতাই, মাসুদ, মনা কমিশনারসহ ১১ জনের নাম রাজনৈতিক হয়রানী বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়।
বর্তমানে পাবনা পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র ও আওয়ামীলীগ নেতা কামরুল হাসান মিন্টু, পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফরিদুল ইসলাম ডালু ও চাটমোহর উপজেলার সাইপাই গ্রামের আব্দুল মান্নান চার্জশীটভুক্ত আসামী রয়েছেন।
বর্তমানে মামলাটি কি অবস্থায় আছে তা তার কোন হদিস বা তথ্য কারো জানা নেই। পাবনা সদর থানা ও জেলা পুলিশ অফিসও বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত নন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাবনার একজন প্রবীন রাজনীতিবিদ সমকাল‘কে বলেন, এই মামলার আর বিচার পাওয়া যাবেনা। মরহুম বাচ্চুর স্ত্রী ফৈজিয়া বাচ্চু এ ব্যাপারে সমকাল‘কে কিছু বলতে চাননি। শুধু বলেছেন, স্বামীকে হারিয়েছি সন্তানদের আর হারাতে চাইনা।
পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরে জানা যায় তিনি বিদেশ আছেন। পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মোশারোফ হোসেন সমকাল‘কে বলেন, শেখ বাচ্চু ছিল আমাদের সবার রাজনৈতিক গুরু। মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নিয়ে করায় প্রকৃত আসামীদের বাদ পড়ে যায়। তাই এই অবস্থা।