শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
আঃ খালেক মন্ডল,গাইবান্ধা:
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা বীনা রাণীর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্ণীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে ভূক্তভোগীরা পৃথক দু’টি অভিযোগ বিভিন্ন দপ্তরে দাখিল করেছেন। অভিযোগ এবং ভূক্তভোগী সুত্রে জানা যায়, উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসটি উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী এলাকায় অবস্থিত। ইউনিয়ন উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা বীনা রাণী গত ১০/০১/২০২২ তারিখে এ অফিসে যোগদান করেন। যোগদানের পর হতেই নিরাপত্তাহীনতার অজুহাত দেখিয়ে প্রতিদিন তাঁর স্বামী প্রদীপ বাবুকে সাথে নিয়ে অফিসে আসেন। মূলতঃ বীনা রাণী সু-কৌশলে তাঁর স্বামীর মাধ্যমে নামজারি, খতিয়ান লেখা ছাড়াও বিভিন্ন কাজের বিনিময়ে আর্থিক লেনদেন করে থাকেন। টাকা ছাড়া কোন কাজই করতে চায় না।উক্ত ইউনিয়ন ভূমি অফিসের আওতাভুক্ত ভূক্তভোগী মরাদাতেয়া গ্রামের ভূমিহীন রাজ কুমার ও তার স্ত্রী অরুণ বালা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সহকারি কমিশনার (ভুমি) পলাশবাড়ী কর্তৃক ৪২৫০/২০১৯ নম্বর দলিল মূলে গত ৩১/০৭/২০১৯ তারিখে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তাহা নামজারিসহ খাজনা পরিশোধ পূর্বক জমি ভোগদখল করা ছাড়াও জমির নামজারী কেস নং-১৩৭৯ (ওঢ-ও)/২০২২-২৩ খারিজ খতিয়ান নং- ৭৪৩, হোল্ডিং নং- ৭৪৩ প্রস্তুত করে নেয়। উক্ত জমি সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে একই গ্রামের আজাদুল ইসলাম জেলা ও দায়রা জজল আদালতে ল্যান্ডসার্ভে টাইবুন্যাল মোকদ্দমা ৫৩৪/১৯ দায়ের করেন। তৎকালীন উপ-ভূমি সহকারি কর্মকর্তা ডিএম মোমিনুল ইসলাম এবং জসবন্ধু পাল সরকারি স্বার্থ আছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল ছাড়াও আদালতে যোগাযোগ করেন। বর্তমান তহশীলদার বীনা রাণী সরকারি স্বার্থ রক্ষার্র্থে আদালতে যোগাযোগ না করে বাদী পক্ষের সাথে যোগসাজসে মোটাঅংকের অর্থের বিনিময়ে গত ০২/১০/২০২২ তারিখে আদালতে উপস্থিত না হয়ে বিবাদীকে কোন প্রকার নোটিশ প্রদান না করে একতরফা ভাবে জমি কর্তন পূর্বক বিআরএস খতিয়ান প্রস্তুতের আদেশ প্রদান করেছেন। ওই আদেশের প্রেক্ষিতে আজাদুল ইসলাম গংরা রাজ কুমার গংদেরকে জীবননাশের হুমকিসহ জমি দখলের পায়তারা করছে। রাজু কুমার এব্যাপারে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার (ভূমি) বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন। অপরদিকে; জেলা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কার্যালয়ের স্বারক নং-২০২২/৪৭৮(২), তারিখ ৩১/০৩/২০২২ইং মোতাবেক জমি সংক্রান্ত একটি মামলা একই ইউপি’র হনিরাবাড়ী গ্রামের মৃত- বাচ্চা মিয়ার পুত্র মো. ভোলা মিয়া সাথে একই গ্রামের মৃত রহিম উদ্দিনের পুত্র মো. আবুল কালাম আজাদের সহিত ২৩১/২০২২ পিটিশন মামলা চলমান। মামলাটি সরেজমিনে তদন্ত জন্য হরিনাথপুর ইউনিয়ন উপ-সহকারী (ভুমি) কর্মকর্তা বীনা রাণীর উপর ন্যস্ত করেন। উপ-সহকারী কমকর্তা বিনা রাণী মোটাঅংকের অর্থের বিনিময়ে উক্ত পিটিশন মামলা সঠিকভাবে তদন্ত না করে মনগড়া তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করায় ভুক্তভোগীরা বিপাকে পড়েন। ভুক্তভোগী ভোলা মিয়া উপায়ন্তর না পেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতিকার চেয়ে অসাধু-অর্থলোভী উপ-সহকারী ভুমি কর্মকর্তা বীনা রাণীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে নিমিত্তে গত ০৭/০৮/২০২৩ তারিখে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। তহশীলদার বীনা রাণী ভোলা মিয়ার নামে খারিজ খতিয়ান নং-১১৪৩, হোল্ডিং নং- ১১৪৩ মোতবেক বাংলা সনের ১৪৩০ পর্যন্ত গত ২৩/০৮/২০২২ তারিখে ভুমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে নেন।ভূক্তভোগী অন্যান্যরা জানান, তহশীলদার বীনা রাণী উক্ত ভূমি অফিসে যোগদানের পর থেকে একের পর এক অনিয়ম-দূর্ণীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করেই যাচ্ছেন। ভূক্তভোগীরা প্রতিবাদ করতে চাইলেই প্রতিদিন তাঁর সাথে থাকা স্বামী প্রদীপ বাবু জেলা শহরের লোক হিসেবে পরিচয়ে দিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। দীর্ঘদিন যাবৎ উক্ত তহশীলদার বীনা রাণীর আচরণে এলাকার সাধারণ ভূক্তভোগী মহল অতিষ্ট।অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা বীনা রাণীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, অভিযোগের বিষয়ে সঠিক কোন কিছু জানা নেই।এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুল হাসান-এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, মৌখিক ভাবে বিষয়টি আমি অবগত আছি।এলাকার সাধারণ মানুষসহ ভূক্তভোগী পরিবারগুলো উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।