রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন

News Headline :
ডিমের মূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে মধ্যস্বত্ব ভোগীরা বড় সমস্যা- মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টা কুষ্টিয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এর ১৩৪তম তিরোধান দিবস ২০২৪ উদযাপনের আজদ্বিতীয় দিন ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে তোপের মুখে ছাত্রলীগ নেতা কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে লালন মেলা হতে চুরি হওয়া ১৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার ন্যায় বিচার পেলে আওয়ামী লীগের জীবনের স্বাদ মিটে যাবে-নওগাঁ জামায়াত আমির রাবি’তে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগের ২ নেতা গ্রেফতার ফুলবাড়ীতে বিএনপি‘র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২ পাবনার ঈশ্বরদীতে সন্ত্রাসীদের গুলি ল্যাংড়া বিপু গুলিবিদ্ধ পাবনায় স্বপনের অফিস ভাংচুর করলেন শিমুল সমর্থক হামলা-পাল্টা হামলা পাবনা র‌্যাবের অভিযানে পর্নগ্রাফি মামলার পলাতক আসামী গ্রেফতার

পাবনায় পুলিশ পরিচয়ে ফেন্সিডিল আটক আবার পুলিশের সহযোগিতায় মুক্ত, সুষ্ঠ তদন্তে বেড়িয়ে আসতে পারে অনেক অজানা কাহিনী

Reading Time: 3 minutes

নিজস্ব সংবদদাতা. ঈশ্বরদী পাবনা:
পাবনার ঈশ্বরদীতে মটরসাইকেলে বহন করা ২’শ পিস ফেন্সিডিলসহ ২জনকে আটক করেছে পুলিশ পরিচয়ে পুলিশের সোর্স । পরে ফেন্সিডিলসহ বহনকারীকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলে নগদ ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহনের অভিযোগ  উঠেছে পুলিশের সোর্স আশিক ও  এএসআই সাফিরুল এর বিরুদ্ধে। ফেন্সিডিল আটকের সময় সোর্সের হাতে ছিল ওয়কিটকি ও পুলিশের হ্যান্ডকাফ।
গত ( ১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১১.২২ মিনিটে একটি ফোন কলে ঘটনার বিবরণে জানা যায় , বাঘা থেকে ছেড়ে আসা একটি T V S মটরসাইকেলে থাকা দুটি ব্যাগ ভর্তি ২’শ পিচ ফেন্সিডিলসহ দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ পরিচয়ে পুলিশের দু্ই সোর্স। আটককৃত ২’শ পিস ফেন্সিডিল ভাগাভাগির সাথে এএসআই সাফিরুলের সম্পৃক্ততা উঠে আসে ঐ কথোপকথনের মাধ্যমে। আমাদের প্রতিবেদক ওই দিন রাত ১১.২৮ মিনিটে ঈশ্বরদী থানার কর্তব্যরত ডিউটি অফিসারের নিকট ফোন দিয়ে এএসআই সাফিরুলের মোবাইল নাম্বার টি চাওয়া হয়। নাম্বার না দিয়ে একপর্যায়ে তিনি বলেন আমিই এএসআই সাফিরুল। এসময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয় আপনি  (১৬ সেপ্টেম্বর) শুক্রবার ভোরে আড়মবাড়ীয়াতে ফেন্সিডিল আটকের সময় সেখানে  গিয়েছিলেন কি?
তিনি বলেন আমি ট্রেনিং এ ছিলাম সিরাজগঞ্জে। আমি ঈশ্বরদীতে এসেছি শুক্রবার দিবাগত রাত ৯ টায়। এদিকে এএসআই সাফিরুলের সাথে কথা বলার পর রাত ১২. ২২ মিনিটে আবারো বাঘা থেকে একজন বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ফোন দিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন আপনি এএসআই সাফিরুলকে কি বলছেন ? সে আমাকে ফোন দিয়ে বলছেন সাংবাদিক লাগিয়ে আমার কিছুই করতে পারবেন না। বিষয়টি এখানেই শেষ করে দেন। তা না হলে আপনি বিপদে পড়বেন। আমি যে তথ্য দিয়েছি তা শতভাগ নিশ্চিত সত্য। এদিকে এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার রহস্য উন্মোচন করার লক্ষ্যে এই প্রতিবেদক দু’দিন ধরে একাধীক সুত্র মতে গভীর অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধানে উঠে আসে জানা-অজানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যা আশ্চর্য ও আতংকিত হওয়ার মতো । ঘটনার সুত্র ধরে ১৮ সেপ্টেম্বর আড়মবাড়ীয়া বাজারে গিয়ে দেখা মিলে এক সময়ের বিখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ন্যাংড়া বিপুর । ২’শ পিস ফেন্সিডিল আটকের সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে,  তিনি এসব বিষয়ে এড়িয়ে যান। একপর্যায়ে জানায়, এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে বলেই, আমাদের সামনে বিভিন্ন মহলে ফোন দিতে থাকে। তাছাড়া ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত তার অপর সহযোগী একই এলাকার মহাসিনের পুত্র আশিকের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন আশিক তো এএসআই  সাফিরুল এর সোর্স । আশিকের ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে ফোন রিসিভ করেননি তিনি। উপরোক্ত ঘটনার সুত্র ধরে পরদিন (১৯ সেপ্টেম্বরে) বাঘার উদ্দেশ্য রওনা দেন এই প্রতিবেদক। সেখানে গিয়ে কথা হয় বাঘার একজন সাংবাদিকের সাথে। তার সাথে কথা হলে তিনি ফেন্সিডিল আটকের বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত করে বলেন ঘটনাটি সত্য  তবে তাকে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঈশ্বরদী থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা। এজন্য সন্মানী পেয়ে যাবেন বলেও জানান। অপর একটি সূত্র থেকে ঈশ্বরদীতে ফেন্সিডিল বহনকারী দুই ব্যাক্তির নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়। তারা হলো মোঃ সাহেব আলী (২৭) অপর জন একই এলাকার মোঃ শিমুল (২৭)। উভয় কলি গ্রাম বাঘা, রাজশাহী। সেখানে গিয়ে কথা হয় ফেন্সিডিল বহনকারী সাহেব ও শিমুলের সাথে। তাঁরা বলেন সাহেব আলীর নিজস্ব T V S একটি মটরসাইকেল যোগে দুটি ব্যাগ ভর্তি ২’শ পিস ফেন্সিডিল তারা ঈশ্বরদীতে নিয়ে আসছিলেন। এসময় তাদের মটরসাইকেলটি ঈশ্বরদী ইয়ারপোর্ট মোড় এলাকায় গতিরোধ করে, ন্যাংড়া বিপু, পুলিশের সোর্স আশিক সহ ৩/৪ জন। আটককৃত ব্যাক্তিদের হাতে পুলিশের হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে দেয় আশিক ও ন্যাংড়া বিপু। তাদের কাছে ছিল পুলিশের ওয়াকিটকি। একপর্যায়ে আটককৃতদের ইয়ারপোর্ট এলাকার পরিত্যক্ত এপেক্স কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ফেন্সিডিল ছেড়ে দেয়ার কথা বলে নগদ টাকা দাবি করেন।  শুরু হয় দর কষাকষি।  দরকষাকষিতে বনিবনা না হওযায় ঈশ্বরদী থানার এএসআই সাফিরুলকে খবর দেন পুলিশের সোর্সরা।  খবর দাতাকে এএসআই সাফিরুল বলেন মালের গায়ে কোন শালা হাত দিলে খবর আছে। ঐদিন বিকেলে পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সোর্স দের সাথে দেনদরবার করে মিমাংসা করেন। এদিকে ফেন্সিডিল বহনকারীরা তাদের পরিচিত ঈশ্বরদীর জনৈক একজনের কাছ থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা ঈশ্বরদী ইসলামীয়া ব্যাংকের একাউন্ট এর বুথ থেকে তুলে পুলিশের সোর্স আশিকের হাতে দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন একটি  সুত্র । টাকা পাওয়ার পর ফেন্সিডিল বহনকারীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার অফিসার্স ইনচার্জ অরবিন্দ সরকারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানি না। আপনি জানাচ্ছেন এর জন্য ধন্যবাদ। বিষয়টি আমি দেখছি। এদিকে এএসআই সাফিরুল আমাদের আরেক প্রতিবেদককে মোবাইল ফোনে জানান, এরকম কোন ঘটনা্য় ঘটেনি। তবে বিষয়টির জন্য ওসির সাথে কথা বলতে বলেন।
এই ঘটনা জানাজানি হলে ঈশ্বরদী বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন উঠেছে, গত মাসে ভুয়া ডিবি সেজে কয়েকটি ছিনতাই এর ঘটনা ঘটেছে। এসব ছিনতাই এর সাথে কথিত পুলিশের সোর্স ন্যাংরা বিপু ও আশিক গংরা কি জড়িত?  পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনা সুষ্ঠ তদন্ত করলে বেড়িয়ে আসতে পারে অনেক অজানা কাহিনী।  বিষয়টি তদন্ত পুর্বক দোষিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ঈশ্বরদীতে  নানা মহলের জোর দাবি উঠেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com