শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা:
আমার যা জানি সেটা ভুল, যা শুনিছি সেটাও ভুল। আসলে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য নেতারা মিথ্যা বলতেও দ্বিধাবোধ করে না। নেতাদের মুখ থেকেই শুনে আসছি “আমার সরকার মসজিদের বিদ্যুত বিল মওকুফ করেছে”। আসলেই কি তাই? না ৯২ থেকে ২০২২সাল এই ৩০ বছরের মসজিদের বিদ্যুতের বকেয়া বিল দিতে হবে। অন্যথায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এমনটি বলা হচ্ছে বিদ্যুত বিভাগের পক্ষ থেকে। প্রতিটি মসজিদের বিদ্যুত বিল বকেয়া আদায়ের জন্য কর্তৃপক্ষ নোটিশ পাঠিয়েছে কমিটি বরাবর। পাবনা পৌর এলাকার প্রায় ১৫০টি মসজিদের বিদ্যুত বিল পরিশোধের জন্য মসজিদ কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদককে ডেকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিদ্যুত বিভাগের কর্মরত কর্তা ব্যাক্তিরা। স্থাণীয় একাধিক মসজিদ কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যুত অফিসের কর্তা ব্যাক্তিরা মতবিনিময়ের নামে প্রতিটি মসজিদ কমিটি বরাবর চিঠি প্রেরন করেন। পরে মসজিদ কমিটির লোকজন বিদ্যুত বিভাগের কর্তা ব্যাক্তিদের সাথে স্বাক্ষাত করতে গেলে তাদেরকে জানানো হয় ১৯৯২ সালের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রতিটি মসজিদে সর্বনি¤œ ১০ লাখ থেকে ২০ লাখ বকেয়া রয়েছে। এ বকেয়া বিদ্যুত বিল খুব শিঘ্রই সরকারি রাজস্বে জমা দিতে হবে। বকেয়া পরিশোধ করা না হলে মসজিদের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকিও দেওয়া হয়। বিষয়টি মসজিদ কমিটির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও আজ শুক্রবার জুুম্মার নামাজের পর পৌর এলাকায় অবস্থিত বেশিরভাগ কমিটির সভাপতি মুসুল্লিদের মধ্যে তা উপস্থাপন করেন। বিপুল পরিমান বিদ্যুত বিল কিভাবে পরিশোধ করা যায় সে বিষয়ে কমিটির সদস্যরা আলোচনায় বসেন।
এ বিষয়ে নেসকো লিঃ পাবনা বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ ২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুবুল হক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মসজিদে পুরোপুরি বিদ্যুত বিল মওকুফের কোন আইন নেই। ধর্ম মন্ত্রানালয় অনুমোদিত প্রতিটি মসজিদ ১শ ইউনিট পর্যন্ত বিনা খরচে বিদ্যুত ব্যবহার করতে পারবে। এর বেশি ব্যবহার করা হলে বিদ্যুত বিল পরিশোধ করতে হবে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিগত দিনে কেন মসজিদে বিদ্যুত বিল প্রদান করেন নাই। উত্তরে তিনি বলেন, আগামীকাল অফিসে আসেন বিস্তারিত আপনাকে জানাবো। এদিকে বিদ্যুত অফিস নেসকোতে কর্মরত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এরশাদ সরকারের আমলে ২শ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুত বিল মওকুফ ছিল। পরবর্তিতে ৯২সালে বিএনপি সরকার ২শ ইউনিটের পরিবর্তে ১শ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুত ব্যবহারের সুবিধা দিয়ে গেছেন। বর্তমানে সেই আইনটি চালু রয়েছে। এদিকে বেশিরভাগ মসজিদ কমিটির সদস্যগণ অভিযোগ করে বলেন, বিগত সময়ে বিদ্যুত অফিস আমাদেরকে কোন বিদ্যুত বিল প্রদান করেন নাই। আমরা জানি মসজিদগুলো বিদ্যুত বিলের আওতার বাহিরে। হঠাত করে বিদ্যুত বিভাগের কর্তৃপক্ষ বিপুল পরিমান বিদ্যুত বিল দাবি করায় আমাদের মাথায় বজ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে। মসজিদ কমিটির বেশিরভাগ সদস্যদের অভিযোগ বিদ্যুত বিভাগ যদি নিয়মিত বিদ্যুত বিল আমাদের কাছে প্রেরন করতো এবং নিয়মিত তাগাদা দিত তাহলে আমরা আগে থেকেই বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করতাম। হঠাত করে ডেকে নিয়ে বিপুল পরিমান বিদ্যুত বিল দাবি করায় আমরা হতাশ হয়েছি। সরকারের কাছে দাবি পুর্বের সকল বিদ্যুত বিল মওকুফ করে, রাষ্টের আইন অনুযায়ী এখন থেকে প্রতিমাসের বিল প্রতিমাসে প্রেরন করার অনুরোধ জানান। সেই সাথে আমাদের কাছে প্রেরনকৃত বিল যথা সময়ে আমরা বিদ্যুত বিভাগে জমা দিবো। সে ক্ষেত্রে যদি অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে তারা মসজিদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারে। ৩০ বছরের বকেয়ার দায়ে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে অমানবিক হবে বলে ধর্মপ্রান মুসুল্লিগণ মনে করেন।