শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নিজস্ব সংবাদদাতা, ঈশ্বরদী পাবনা :
পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে নিয়মিত জুয়ার জমজমাট আসর বসছে। কৃষক, শ্রমিক, বিভিন্ন পেশাজীবীসহ উঠতি বয়সের যুবকরা এতে সামিল হচ্ছে। জুয়ার আসরের পাশেই দেদাড়ছে বিক্রি হচ্ছে মাদক। সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত গ্রামে গ্রামে জুয়ার আসরে উড়ছে হাজার হাজার টাকা। আর এর নেপথ্যে মদদ রয়েছে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের। উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের বয়রা, সুলতানপুর, মারমী, দরগাহাট এলাকায় মাদক সেবন ও জুয়ার আড্ডা বেড়েই চলেছে। মাদক, জুয়া সাথে রয়েছে আবার বয়রা পাকার মাথায় অবৈধ সমিতি দ্বারা উচ্চ সুদের কারবার, সমিতিটির নেই কোন সরকারী নিবন্ধন। মাঝে মধ্যেই শোনা যায় ঈশ্বরদীর বিভিন্ন স্থানে থানা পুলিশ মাদকসেবী ও জুয়ারীদের গ্রেফতার করলেও, এ এলাকার জুয়ারী ও মাদকসেবীরা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলেই শুরু হয় এ এলাকার মাদক ও জুয়ারীদের আড্ডা। মাদকসেবী ও জুয়ারীদের কারণে গ্রামের সহজ সরল খেটে খাওয়া মানুষ দিন কাটাচ্ছে আতঙ্কে। মাদক ও জুয়ারীদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ দিতে সাহস পাননা নিকটস্থ থানায় । খোজ খবর নিয়ে দেখা যায়, এলাকার ওহাব মিয়ার ভ্যান চুরী, বয়রা মজনু শেখের গরু চুরি, দরগা বাজারের মমিন মিয়ার ছাগল চুরিসহ নানা অপকর্মের খবর। সরেজমিনে দেখা যায়, মাদকসেবী ও জুয়ারীরা তাদের উক্ত কাজের স্পট হিসেবে ব্যবহার করে বয়রা পুকুর পাড়, চেতন গুরুর বাগান, আবু বক্কারের লিচু বাগান, সুলতানপুর কলি বাড়ি গভীর নল নলকূপের পাশে রহিম সরদারের পুকুড় পাড়ের পরিত্যক্ত ঘর, আঠারো কাদা বিল সংলগ্ন, ফখরুলের প্রজেক্টের পাশে, শমসের শেখের বাড়ির পিছনে ক্যানালের পাশে ও রাতে দরগা বাজার স্কুল ফিল্ডে, এ ছাড়াও আটঘরিয়া থানার পশ্চিম পাড়াসিধাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে। আরো জানা যায় জুয়া আড্ডায় আটঘরিয়া ও ঈশ্বরদীর বিভিন্ন এলাকা থেকেও জুয়ারীদের আগমন ঘটে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি বলেন , আমি একবার মাদক ও জুয়ারীদের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমার ঘরের ডুয়া ও বেড়া কেটে টিভি নিয়ে গেছে, চুরি যাওয়া টিভি আমি আর ফিরে পাইনি। এরপর থেকে আমি ভয়ে আর এসব ব্যাপারে কথা বলিনা। ওরা যদি আমার পরিবারের ক্ষতি করে বসে? আরেকজন বলেন, সন্ধ্যা হলেই আমাদের এলাকাতে শুরু হয় মাদক, জুয়া ও কিস্তির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের যাতায়াত। আমাদের এখানে বেশ কিছু উচ্চ সুদের সমিতি রয়েছে । জুয়ারী ও মাদকসেবীরা জুয়া খেলে, হেরে গেলে এখান থেকে সুদের টাকা ঋণ নিয়ে আবার খেলে। মাদকসেবী ও জুয়ারীরা রাতে তাদের নিজ বাড়িতে গিয়ে বউ সাথে ঝগড়া বিবাদ শুরু করে, একারণে আমাদের গ্রামের ৪/৫ জনের বউ বাবার বাড়ি চলে গেছে এসব জ্বালা যন্ত্রনা সৈর্য্য করতে না পেরে। আরেকজন বলেন, আমাদের এলাকাতে সন্ধ্যা নামলেই বাহিরের মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাই। দেখা যায় বিভিন্ন এনজিও কর্মীরাও সন্ধ্যার পরে এলাকাতে এসে জুয়া, মাদক সেবন, ক্যারাম খেলায় ব্যস্ত থাকে মাঝ রাত পর্যন্ত। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ জোয়া,মাদক সেবনে অর্থের যোগান আসছে স্থানীয় নিবন্ধনহীন গ্রাম্য সমিতি থেকে। তাছাড়াও অর্থের যোগান দিতে চুরি-ছিনতাই, মাদক বিক্রয়সহ নানান আপকর্ম করছে বয়স্ক থেকে শুরু করে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা । মাদকের মতোই জুয়ার ছোবলে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে অনেকে। জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ঘরে ঘরে চলছে পারিবারিক কলহ। উঠতি বয়সী যুবক বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের নিয়ে যত উদ্বেগ অভিভাবকদের। জুয়া বন্ধে এ গ্রামে পুলিশের তৎপরতা না থাকায় দিন দিন সমাজে এ ক্ষতিকর কর্মের প্রবণতা বেড়েই চলেছে। আমরা গ্রামবাসী এর প্রতিকার চাই।