মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৬ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মোঃ হেলাল উদ্দিন সরকার, ধুনট বগুড়া :
বগুড়ার দই বললে সবাই বুঝতে পারে কেমন দই। কেউ যদি বগুড়ায় বেড়াতে আসে অথবা কেউ বগুড়া থেকে অন্য জেলার কোনো আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান, তাহলে আত্মীয় শোনা মাত্রই দই নিয়ে যাওয়ার কথা অবশ্যই বলবে। বগুড়ার মাটি ও আবহাওয়ার কারনে দই উৎপাদন হয় সকলের পছন্দের। এখানে এমন কোনো উপজেলা বা ইউনিয়ন নেই, যেখানে দুই একটা দইয়ের দোকান পাওয়া যাবে না। যে কোনো মজলিস বা অনুষ্ঠানে খাবার দাবার এর পর দই পরিবেশন একটা রেওয়াজে পরিনত হয়েছে। বহু বছর আগে থেকেই বগুড়ার এই ঐতিহ্য অনেকেই লালনপালন করে আসছে। তেমনি আজ রাস্তায় দই বিক্রেতা হারুনের সাথে সন্ধ্যার পর দেখা হলো। ওর বাড়ি বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার শেরপুর হাট ফুলবাড়ি গ্রামে। পিতার নাম নায়েব আলী প্রামানিক। বংশ পরম্পরায় ওরা এভাবেই রাস্তায় দই বিক্রি করে। একটু কৌতুহল নিয়ে হারুনকে কিছু বিষয় জানতে চাইলে, একটু হেসে আনন্দিত মনে একের পর এক আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে লাগলো। কথাচ্ছলে জানতে পারলাম, এক কেজি দই তৈরী করতে – দুধ লাগে দেড় কেজি, খাওয়ার সোডা পাঁচ গ্রাম, আড়াইশো গ্রাম চিনি প্রয়োজন। একটা দুই কেজির দইয়ের খুটি (পাত্র) কিনতে বারো থেকে পনেরো টাকা পরে। সবকিছু মিলিয়ে কেজি প্রতি দই বিক্রি করে দশ টাকা লাভ হয়, লাভ কম করে বিক্রয় বেশি করে বলে জানায়। হারুন বলে প্রতিদিন তারা তিন মণ দুধের দই তৈরি করে। বর্তমানে চিনি ও দুধের দাম বেড়ে যাওয়াতে একটু কষ্ট হচ্ছে লাভ করতে। তবে দইয়ের অর্ডার করলে বা থাকলে কেজি প্রতি দেড়শ টাকা চুক্তি করে, চুক্তি মোতাবেক দই পৌঁছে দিয়ে আসে। রাস্তায় এখন ওরা দই ৭০ টাকা কেজি , খিরসা ৪০০টাকা কেজি, ঘি ১০০০/১৫০০টাকা কেজি বিক্রয় করে আসতেছে। হারুনের নিকট থেকে আরো একটু গল্পচ্ছলে জানতে চাইলে জানলাম, তিন কেজি দুধে এক কেজি খিরসা, বারো কেজি দুধে এক কেজি ঘি ওরা তৈরি করে। পরিশেষে হারুনকে জিজ্ঞেস করলাম কেমন আছে, হেসে উত্তর দিলো খুব ভালো আছে এ ব্যবসা করে, জমিজমা বেশ পরিমাণ কিনেছে, বাড়িঘর ও করেছে বেশ সুন্দর করে। হারুন আরও একটা আশার কথা বললো – দই মিষ্টি তৈরী সাধারণত হিন্দু ধর্মের লোকজন ভালো পারে বা ব্যবসা করে থাকে, কিন্তু আমরা মুসলমান হয়েও কোনো অংশে কম নই পিছিয়ে নেই।