admin
- ৪ মার্চ, ২০২৩ / ১১৬ Time View
Reading Time: < 1 minute
সারাবাংলা ডেক্স:
স্বাধীনতা-উত্তর পাবনায় প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগমন এবং একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দ্বারা নির্যাতিত ও সম্ভ্রম-হারানো নারীদের “বীরাঙ্গনা” খেতাবে ভূষিত করেন।
১৯৭২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এলেন পাবনা জেলার নগরবাড়ির উত্তরে বসন্তপুর গ্রামে। সেখানে সেদিন তিনি উদ্বোধন করলেন মুজিববাঁধ নির্মাণের কার্যক্রম। উক্ত মুজিববাঁধ নির্মাণ উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল এক জনসভা। জনসভায় এতো মানুষের সমাগম হয়েছিল- এতো মানুষ আর পাবনার কোনো জনসভায় হয়নি। বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতার প্রাক্কালে দেখা গেল জনসভার একদিকে খানিকটা হৈ চৈ হচ্ছে। কয়েকজন মহিলা বঙ্গবন্ধুর কাছে আসতে চাচ্ছেন, কিন্তু তাঁদের বাধা দেয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু নির্দেশ দিলেন তাঁদের আসতে দিতে। তাঁরা ছুটে এসে বঙ্গবন্ধুর পায়ে লুটিয়ে পড়লেন। একজন জানালেন, তাঁর খুব সুখের সংসার ছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাঁকে লাঞ্জিত করে। তাঁর স্বামী এখন আর তাঁকে সংসারে নিতে চাচ্ছেন না। আশপাশের মানুষজনও টিটকারি দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর কথা খুবই মনোযোগ দিয়ে শুনলেন।
সবশেষে বঙ্গবন্ধু উঠলেন মঞ্চে বক্তৃতা দিতে। প্রথমেই তিনি বললেন, “আজ থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দ্বারা নির্যাতিত মহিলারা সাধারণ মহিলা নয়। তাঁরা এখন থেকে বীরাঙ্গনা খেতাবে ভূষিত হবেন। কেনো না, দেশের জন্য তাঁরা ইজ্জত দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের থেকে তাঁদের অবদান কম নয়, বরং কয়েকধাপ উপরে, যা আপনারা সবই জানেন, বুঝিয়ে বলতে হবে না। তাই তাঁদের বীরাঙ্গনা মর্যাদা দিতে হবে এবং যথারীতি সম্মান দেখাতে হবে। আর সেই স্বামী বা পিতাদের উদ্দেশ্যে আমি বলছি যে আপনারাও ধন্য। কেনো না এ ধরনের ত্যাগী ও মহৎ স্ত্রীর স্বামী বা মেয়ের পিতা হয়েছেন।”
তথ্যসূত্র : বীরাঙ্গনা ১৯৭১ (পৃষ্ঠা :৪৩-৪৪)