শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪২ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নুরুজ্জামান লিটন নওগাঁঃ
ধানের মাঠ হাসলে, হাসে কৃষকের মুখ।ধান উঠবে ঘরে কিছুদিন পরে,সেইলক্ষ্যে ধানের যত্ননিতে দিনভর পরিশ্রম করছেন নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার কৃষকরা। এরইমধ্যে কৃষকের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাজ।
হঠাৎ করেই ধানের আগা পুড়ে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। উপজেলায় বেশিরভাগ মাঠে এই রোগ দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করেও মিলছে না আশানুরূপ কোন ফল। এই দায়ভার কে নিবে,প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।
সরেজমিনে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, আমন ধানের জমিতে পোকার আক্রমণে ধান গাছের পাতা হলুদ ও লাল বর্ণ ধারন করেছে। দেখলে মনে হবে যেন কেউ যেন আগুন দিয়ে এসব ধান ক্ষেত পুড়িয়ে দিয়েছেন।
কৃষকগন অভিযোগ করেন, এসিআই ক্রপের এসিমিক্স প্রয়োগে এমনটি হয়েছে।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে উপজেলার কাদিবাড়ি গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, আমার পাঁচ বিঘা জমির ধানগাছ কমবেশি আগা পুড়ে যাচ্ছে। বেশির ভাগ আক্রান্ত হয়েছে তিন বিঘা জমিতে। দুইবার মাজরা পোকার ঔষধ এসিমিক্স প্রয়োগ করেও কোন ফল মিলছে না। দিনদিন আক্রান্তের মাত্রা বেড়েই চলেছে।
জিধিরপুর মাঠের কৃষক আয়নাল হক বলেন, আমি এবছর দুই বিঘা ৫শতক জমিতে গুটিস্বর্ণা ধান চাষ করেছি। ধানের থোপও খুব ভালো হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে ১৫-২০ দিন আগে জমির এক কোনায় কিছু ধানগাছের পাতা পোড়া রোগ দেখা দেয়। পরে এক সার দোকানির পরামর্শে এসিমিক্স কীটনাশক ক্রয় করে জমিতে স্প্রে করিছি। এখন দেখছি প্রায় পুরোজমির ধানই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
আর এক কৃষক বলেন, আমি চুনাপুকুর মাঠে মাজরা পোকার জন্য এসিমিক্স প্রয়োগ করেছি জমিতে ধানের পাতা পোড়া রোগ দেখা দিয়েছে।
ঐতিহাসিক পাহাড়পুরের গোয়ালভিটার কৃষক আলহাজ্ব আব্দুস ছামাদ বলেন, আমরা আগে থেকেই পোকামাকড়ের জন্য এসিমিক্স কীটনাশক ব্যবহার করে আসছি কিন্তু এবার এসিমিক্স ব্যবহারে সুফল পায়নি।দ্বারিশন মাঠের কৃষক রফিকুল ইসলাম হোসেন বলেন, এবার এসিমিক্স কীটনাশক যারা আমন ধানের জমিতে দিয়েছে তাদের প্রত্যেকের এমন হয়েছে।
উপজেলা কষি অফিস সুত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় আমন ধানের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার ২শত হেক্টর জমি। আর অর্জিত হয়েছে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫শত হেক্টর জমি। তবে তারা আরো জানান অর্জিত লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি আফিসার কৃষিবিদ জনাব হাসান আলী সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমাদের কাছে কৃষকরা পরামর্শ নিতে আসেনা। কীটনাশক দোকানে গিয়ে ঔষধ নিয়ে আসে। কীটনাশক দোকানদার যা বলে সেই ভাবে ঔষধ প্রয়োগ করে। এতে করে কৃষকেরা প্রকৃতভাবে প্রতারিত হচ্ছে।
দোকানীর দেওয়া কীটনাশকগুলো কাজ না করলে পুনরায় আবার কীটনাশক কিনতে হচ্ছে। এতে কৃষকদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন। কৃষকরা দোকানীর পরামর্শ না নিয়ে আমাদের কাছে এসে পরামর্শ নিলে এই সমস্যায় পড়তে হতোনা।
অপরদিকে এলাকার কৃষকদের অভিযোগ কৃষি অফিসের বিএসরা মাঠে আসেননা।কোন সরকারি কৃষি কর্মকর্তাকেই কোন কৃষক কোনদিন দেখেননি,চেনেন ও না।