শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৬ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
রাজশাহী মহানগরীতে হোটেল ড্রিম হ্যাভেনে নারী খুনের ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করা সহ খুনি মো: মিঠুন আলীকে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার মো: মিঠুন আলী নাটোর জেলার সদর থানার আগদিঘা গ্রামের মো. মকবুল হোসেনের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১২ টায় আরএমপি সদরদপ্তর কনফারেন্স রুমে আরএমপি পুলিশের পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টায় রাজপাড়া থানার লক্ষীপুর মোড়ের ড্রিম হ্যাভেন হোটেলের ম্যানেজার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রাজপাড়া থানা পুলিশকে জানায়, তার হোটেলের একটি রুমে তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকলেও ভিতরে একজন মহিলা অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে।
সংবাদ পেয়ে রাজপাড়া থানা পুলিশের একটি টিম দ্রæত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তালাবদ্ধ ৪র্থ তলার ৪০৩ নম্বর রুমে তালা ভেঙ্গে একজন অজ্ঞাত মহিলাকে খাটের উপর অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় নারী পুলিশ অফিসারের সহায়তায় পর্যবেক্ষণ করে জানতে পারে, সে বেশ কয়েক ঘন্টা পূর্বে মাারা গেছে।
এরপর সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিটের সহযোগিতায় রাজপাড়া থানা পুলিশ অজ্ঞাতনামা মহিলার নাম ঠিকানা সনাক্ত করা-সহ মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করে। মৃতের পরিচয় নিশ্চিত করে মৃত জয়নব বেগমের(৪০)আত্মীয় স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করা হয়। সংবাদ পেয়ে মৃতের আত্মীয় স্বজন এসে লাশ সনাক্ত করে এবং বড় ভাই মো. তছলেম প্রামানিক (৪৫) বাদী হয়ে রাজপাড়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ কমিশনার মো: আবু কালাম সিদ্দিক এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় রাজপাড়া থানা পুলিশের একটি টিম মামলার রহস্য উদঘাটন-সহ আসামী সনাক্তপূর্বক গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে।
পরবর্তীতে উপ-পুুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) জনাব মো: সাজিদ হোসেনের তত্ত¡াবধানে অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক মো: মাইদুল ইসলাম, এসআই কাজল কুমার নন্দী ও সঙ্গীয় ফোর্স হোটেলের ভিডিও ফুটেজ এবং রেজিস্টার পর্যালোচনা করেন।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, হোটেলের পুরুষ রেজিস্টারে মিজানের নাম এবং মহিলা রেজিস্টারে জুলেখার নাম। তাদের উভয়ের ঠিকানা গোদাগাড়ী এবং সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। গত ১৭ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০ টায় তারা ড্রিম হ্যাভেন হোটেলের ৪র্থ তলার ৪০৩ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে। একই দিন দুপুর ২ টায় মিজানকে রুমে তালা দিয়ে মুখ আড়াল করে হোটেল ত্যাগ করতে দেখা যায়।
এরপর থানা পুলিশের ওই টিম আরএমপি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহযোগিতায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামীর নাম ঠিকানা ও তার অবস্থান সনাক্ত করে।
গত (১৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ৮ টায় নাটোর জেলার সদর থানার আগদিঘা গ্রামের অভিযান চালিয়ে আসামী মো: মিঠুনকে তার নিজ বাড়ী হতে গ্রেফতার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, মৃত জয়নব বেগমের সাথে তার ৩ মাসের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। গত দুই সপ্তাহ ধরে জয়নব তাকে বিয়ের জন্য চাপ ও হুমকি প্রদান করে আসছে। তাই সে পূর্ব পরিকল্পনা করে গত (১৭ এপ্রিল) জয়নাবকে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে মিথ্যা নাম ঠিকানা ব্যবহার করে মহানগরীর লক্ষীপুর মোড়ে ড্রিম হ্যাভেন হোটেলে উঠে। এরপর সে হোটেল কক্ষে জয়নব বেগমকে বালিশ চাপা দিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যা করে হোটেল থেকে পালিয়ে যায়।
এ ব্যপারে গ্রেফতাকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।