শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৬ অপরাহ্ন

News Headline :
ডিমের মূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে মধ্যস্বত্ব ভোগীরা বড় সমস্যা- মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টা কুষ্টিয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এর ১৩৪তম তিরোধান দিবস ২০২৪ উদযাপনের আজদ্বিতীয় দিন ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে তোপের মুখে ছাত্রলীগ নেতা কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে লালন মেলা হতে চুরি হওয়া ১৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার ন্যায় বিচার পেলে আওয়ামী লীগের জীবনের স্বাদ মিটে যাবে-নওগাঁ জামায়াত আমির রাবি’তে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগের ২ নেতা গ্রেফতার ফুলবাড়ীতে বিএনপি‘র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২ পাবনার ঈশ্বরদীতে সন্ত্রাসীদের গুলি ল্যাংড়া বিপু গুলিবিদ্ধ পাবনায় স্বপনের অফিস ভাংচুর করলেন শিমুল সমর্থক হামলা-পাল্টা হামলা পাবনা র‌্যাবের অভিযানে পর্নগ্রাফি মামলার পলাতক আসামী গ্রেফতার

রংপুরের কাউনিয়ায় কিশোর গ্যাং হামলায় কলেজছাত্র নিহত গ্রেফতার ৩

Reading Time: 3 minutes

হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর ব্যুরো :
@ ঘটনার জড়িতদের গ্রেফতারসহ কঠোর শাস্তি দাবি, @ সন্তান হারিয়ে দিশেহারা

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা সদরে ফুটবল খেলা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা আশিকুর রহমান আশিক (১৮) নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এসময় আরো ৫জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বিকেলে নিহত আশিকুর রহমানের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এর আগে শুক্রবার রাতে কাউনিয়া উপজেলার সদরের বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, উপজেরার বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের মৃত খায়রুল ইসলাম কালুর ছেলে আতিকুর রহমান (১৯), সাহাবাজ গ্রামের নুরুল ইসলাম ছেলে আল মামুন (২১) ও গংগানারায়ন গ্রামের শাহ আলমের ছেলে রেজাউল হাসান রাহি (২১)। নিহত আশিক উপজেলার হরিশ্বর রেল স্টেশন কলোনীর দোলাপাড়া তফেল উদ্দিনের ছেলে। তার বাবা রাজমিস্ত্রীর পাশাপাশি কৃষি কাজ করতেন। আশিক কাউনিয়া ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি মেঝো ছিলো বলেন পরিবার জানায়।
এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে নিহত আশিকুরের মা আবেদা খাতুন বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ কাউনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ৪ থেকে ৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। এদিকে সন্তান হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিহত করে ছাত্র আশিকের পরিবার। এঘটনায় জড়িত মুলহোতাসহ অন্যদের গ্রেফতারসহ কঠোর শাস্তি দাবি জানিয়েছেন তারা। স্থানীয়রা এঘটনার জন্য কিশোর গ্যাং লিডার আতিকুল ও মামুন গ্রæপকে দায়ি করেছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার (১৯ মে) বিকেলে উপজেলার কাউনিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় কিছু তরুনরা ফুটবল খেলার আয়োজন করে। ফুটবল খেলা চলাকালে আতিকুর ও আশিকুরের মধ্যে বাকবিতন্ডা ঝগড়া হয়। খেলা শেষে আশিকুর বাড়ী চলে যায়। পরে সন্ধায় আশিকুর উপজেলার সদর বাসস্ট্যান্ড মোড় এলাকায় আসলে খেলার মাঠে বিতন্ডাকে কেন্দ্র করে আতিকুর ও আরো কয়েকজন কিশোর একত্রিত হয়ে দেশীও অস্ত্র দিয়ে তার উপর অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। হামলায় মাথায় রক্তজখম হয়ে আশিকুর রাস্তায় পড়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসক তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। রাত সাড়ে দশটার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশিকুর মারা যায়। হাসপাতালের চিকিৎসক জানায়, ধারালো কিংবা ভারী কোন কিছু দিয়ে আশিকুরের মাথায় আঘাত করা হয়েছে। আঘাতে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা চিহ্নিত। এরা সিনিয়রদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং নেশা আসক্ত। এদের ব্যপারে পুলিশও অবহিত। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান অনেকেই। নিহতের মা আবেদা খাতুন বলেন, আমার ছেলেকে যারা ডেকে নিয়ে গিয়ে নৃর্শংসভাবে হত্যা করেছে। তার আমি দৃষ্ঠান্ত শাস্তি চাই। আর যেন কোন মায়ের বুক খালি না হয়। আশিকের চাচাতো ভাই আলমগীর মিয়া জানান, কাউনিয়ার বেশিরভাগ লোকই জানে আতিকুল ও মামুনসহ কিশোর গ্যাংয়ের ছেলেরা সব সময় নেশার ওপরেই থাকে। তারা নেশাখোর। তারাই আমার ভাইকে এভাবে পিটিয়ে মারলো। তিনি আরো বলেন, শুধু ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করেই নয়, সামান্য ঘটনা বা ১০ টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে ক্ষোভ থাকতেই পারে। কারণ এসব ছেলেরা যারা আমার ভাইকে মেরেছে তারা নেশাখোর। সব সময় তারা নেশা নিয়েই ব্যস্ত থাকে। সে কারণেই তারা মেরেছে। এদেরকে আবার অনেকেই টাকা পয়সা দিয়ে পালে। তারা সিনিয়র। শুধু এদেরকেই নয়, যারা টাকা দিয়ে এদের পালে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে হবে।
কাউনিয়া থানার ভারপ্তপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ জানান, ফুটবল খেলায় বাকবিতন্ডাকে কেন্দ্র করে তরুন দুই গ্রæপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। সংঘর্ষে আশিকুর নামে এক কিশোর আহত হয়। রাতে রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশিকুর মারা যায়। শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে আশিকুরের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে নিহত আশিকুরের মা আবেদা খাতুন বাদী হয়ে ৮ জন তরুনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা দায়ের করেছেন। ঘটনার সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।
এ বিষয়ে রংপুরের পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী জানান, এ ঘটনায় ইতোমধ্যেই গ্রেফতারকৃতদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। উঠতি বয়সিদের মধ্যে বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাÐ। তদন্ত শেষ হলেই বোঝা যাবে এর নেপথ্যে আরো কি আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com