শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২১ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর ব্যুরো:
@ ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে পড়বে বাড়তি চাপ, @ চরম ক্ষুদ্ধ সুধিজন, যাত্রী ও সাধারণ মানুষ, @ দুর্ঘটনার আশংকা
আসন্ন ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো ও ফিরতি যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে নয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সেই বিশেষ ট্রেন বরাদ্দের তালিকায় রংপুর নেই। এর ফলে আবারও বঞ্চনার শিকার হয়েছেন উত্তরের রংপুরবাসী। এদিকে ঈদে স্পেশাল ট্রেন নয় পাচ্ছে ৩টি বগি রংপুরবাসী । প্রতিবারের মতো মতো এবারও ‘রংপুর এক্সপ্রেস’-এর সঙ্গে তিনটি বগি যুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রংপুরের সুধীজন ও সাধারণ মানুষ। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অবিলম্বে ঈদে রংপুরের জন্য ঈদ স্পেশাল ট্রেন বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন।
এর ফলে নির্মাণাধীন ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বাড়তি চাপ পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বেপরোয়া গাড়ির গতির কারণে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন অনেকেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০ সালে শুরু হয় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের চারলেনের সম্প্রসারণকাজ। গত কয়েক বছর ধরে চলছে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়সগ ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চারলেনের উন্নয়নকাজ। কাজে ধীরগতির কারণে গত ঈদগুলোতেও বিড়ম্বনায় পড়েন রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা। যানবাহনের চাপ বাড়ায় নিয়ন্ত্রণে বিপাকে পড়ে জেলা ও ট্রাফিক পুলিশ।উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জসহ মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের দুটি লেনে দাঁড়িয়ে থাকে হাজার হাজার গাড়ি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এবারও একই দুর্ভোগে পড়তে হবে এই মহাসড়কে যাতায়াতকারীদের। এবারও একই পরিস্থিতির শঙ্কায় রয়েছেন চালক ও যাত্রীরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদযাত্রায় বিশেষ ট্রেনের বরাদ্দ নেই রংপুরের মানুষের জন্য। অথচ নয় জোড়া ট্রেন এবার চলবে দেশের বিভিন্ন জেলায়। রেলপথে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা না থাকায় গত কয়েকবারের মতো এবারও ঈদযাত্রায় চাপ পড়বে নির্মাণাধীন ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ওপর। গত কয়েক বছরের চিত্রে দেখা গেছে, হেঁটে অথবা ট্রাকে, কাভার্ডভ্যানে কনটেইনারবাহী যানবাহনে মানুষ ঢাকার পথে রওনা দিয়েছেন। এবারও একই চিত্র দেখা যাবে বলে মনে করছেন তারা। যাত্রীরা বলেন, রেল নিয়ে আমাদের দুঃখ রাখার জায়গা নেই। বিভাগীয় সদর দফতর, একটি মেট্রোপলিটন সিটি শহর রংপুর। সবদিক থেকে এই শহরটির গুরুত্ব বেড়েছে। ৩০ লাখের বেশি মানুষ এই জেলায় বাস করে। অথচ সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই রেলের। অনেক অপেক্ষার পর একটা আন্তঃনগর ট্রেন পেয়েছি। অথচ পঞ্চগড়, নীলফামারী, দিনাজপুর থেকে একাধিক আন্তঃনগর ট্রেন আসে। আমাদের আছে সেসব ট্রেনের কয়েকটি কানেক্টিং ট্রেন।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে ঈদ স্পেশাল ট্রেন বরাদ্দ হলেও রংপুরের যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ হয়নি। এটা রংপুরবাসীর জন্য খুবই কষ্টের ব্যাপার। অনতিবিলম্বে ঈদ স্পেশাল ট্রেন বরাদ্দ দিয়ে ঘরমুখো ও ফিরতি যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব করবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রির প্রেসিডেন্ট রেজাউল ইসলাম মিলন বলেন, ঈদ এলেই দেশের অনলাইনে ঈদ স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা হলেও রংপুর সবসময় উপেক্ষিত থাকে। যার ফলে বৃহত্তর রংপুরের যাত্রী সাধারণ ট্রেনের ছাদসহ ট্রাকে ও বিভিন্ন পরিবহনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে থাকে। এর ফলে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকারও হন।
এ বিষয়ে রংপুর রেল স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট শঙ্কর গাঙ্গুলী বলেন, হয়তো আশপাশের জেলাগুলো থেকে বেশকিছু আন্তঃনগর ট্রেন চলছে; তাই রংপুর থেকে স্পেশাল ট্রেন দেয়া হচ্ছে না। তবে অন্যবারের মতো এবারও রংপুর এক্সপ্রেসের সঙ্গে দু-তিনটি বগি যুক্ত করা হবে। সওজের সাসেক-২ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প ব্যবস্থাপক সাইমুম আতিক জানান, হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে ৫০ জনের একটি দল আছে। যারা দ্রæততম সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে, রাস্তা চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালে। কিন্তু করোনাসহ নানা কারণে এটি ২০২৪ সালে শেষ হবে বলে আশা করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।