সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১১ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
রংপুর ব্যুরো:
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় সালিশের নামে লিফলেট ছাপিয়ে এক ব্যক্তিকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মামলা করলে শনিবার প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রোববার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের ধুমগাড়া চর গ্রামে সালিশের নামে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
তবে ভূক্তভোগীর পরিবার বলছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে মনির হোসেন ও আব্দুর রউফ পরিকল্পিতভাবে আমার বাবার ওপর অপবাদ দিয়ে তার বিরুদ্ধে সালিশ করে তাকে জুতার মালা পরিয়ে ঘুরিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেফতার এবং শাস্তি দেয়া না হলে এলাকায় বড় ধরনের সংঘাত হতে পারে। পুলিশ, এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ভুট্টু মিয়া পেশায় একজন বাবুর্চি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয় রাতে পুত্রবধূর ঘরে প্রবেশ করেছে। এই অভিযোগ তুলে গত ২৯ জুলাই সালিশ ডাকা হয়। ধুমগাড়া মসজিদ কমিটির নামে এলাকায় লিফলেট বিতরণ করা হয় এবং সামাজিকভাবে তাকে একঘরে করার ঘোষণা দেয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে গলায় জুতার মালা দিয়ে ঘোরানো হয়। স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানায়, এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালিয়ে গত শুক্রবার বিকেলে ধুমগাড়া জামে মসজিদের সামনে একটি খোলা মাঠে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে মসজিদ কমিটির সদস্যরা সালিশ বসানো হয়। স্থানীয় প্রভাবশালি আবদুর রউফ সালিশে নেতৃত্ব দেন। সেখানে আরেক প্রভাবশালী স্থানীয় মাতাব্বর মনির হোসেন তাকে জোর করে জুতার মালা গলায় পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয়। এ সময় উত্তেজনা দেখা দিলে পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মসজিদ কমিটির আবদুর রউফ বলেন, স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে সালিশ বসেছিল। তিনি জুতা পড়ানোর নির্দেশ দেননি। ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির পুত্রবধূ বলেন, ওই দিন রাতের অন্ধকারে কেউ একজন তার ঘরে ঢুকেছিলেন। ওই সময় তার স্বামী ঘরে ছিলেন না। হঠাৎ ঘরে অন্য কাউকে দেখে তিনি চিৎকার দিলে ওই লোক পালিয়ে যায়। এদিকে স্থানীয় কয়েকজন জানান, মনির হোসেনের সাথে টাকা-পয়সা নিয়ে বিরোধের জের ধরে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সালিশের নামে নির্যাতন করা হয়েছে। ঘটনাটি পরিকল্পিত ও মিথ্যা। তাছাড়া ভুক্তভোগী একজন সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ। সার্বিক বিষয়ে জানতে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার ওসি রেজাউল করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শনিবার ভুক্তভোগীর পরিবার দুজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্ত মনির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে। রোববার আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক তদন্তে পুত্রবধূর ঘরে ঢোকার বিষয়টি মিথ্যা বলে জানা গেছে।