রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২০ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
নিজস্ব সংবাদদাতা, রাজশাহী :
পাওনাদারকে মারধর করে ইউনিফর্ম পরে এসে দেখে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সোর্স আলিমের বিরুদ্ধে। এঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (৩০জুন) রাত ৮টার দিকে নগরীর চন্দ্রীমা থানার শিরোইল কলোনির ৪ নং গলির শেষ মাথায় এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যপারে ভুক্তভোগীর শ্বশুর জিন্নাফ আলী বাদি হয়ে চন্দ্রিমা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের বরাত দিয়ে জানা যায়, গত চার বছর পূর্বে জিন্নাফ আলীর কাছ থেকে তার ছেলে আতিকুল হাসানের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরির জন্য নগদ চার লাখ টাকা নিয়েছিলেন শিরোইল কলোনী ৪ নং গলির ফজল আলী নামের এক ব্যক্তি। চাকরি দিতে ব্যার্থ হলে দুই লাখ টাকা ফেরতও দিয়েছেন তিনি। এবং বাকি দুই লাখ টাকার অগ্রনী ব্যাংক লিমিটেডের একটি চেক প্রদান করেন। ঈদের পরের দিন সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করার কথাছিলো ফজল আলীর। শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে জিন্নাফ আলীর জামাই মাহফুজ আলী মানিক (৩১) পাওনা টাকা চাইতে গেলে টাকা দিতে অস্বীকার করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ফজল আলী ও পুলিশের সোর্স আব্দুল আলিম। মানিক গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে আলিম ধাক্কা দিয়ে মাটির ওপর ফেলে দেয় এবং তারা ব্যাপক মারধর করে। পরে স্থানীয়রা মানিককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ(রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি রামেকের ২ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্থানীয় প্রতক্ষ্যদর্শী সোহান, সুমন, শামীম, ও দোকানদার পারভেজ আলী জানান, মানিককে মারধর করার পর পুলিশের সোর্স আব্দুল আলিম প্রকাশ্যে ইউনিফর্ম পড়ে এসে দেখে নেয়ার হুমকিসহ তার শ্বশুর জিন্নাফ আলীকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। ইউনিফর্ম পরে আসার বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। খোজ নিয়ে জানাগেছে, আব্দুল আলিম পুলিশের কথিত সোর্স। তার বিরুদ্ধে নারী দিয়ে ব্ল্যাক মেইলসহ ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে বাইরে থেকে আসা লোকজনদের হয়রানি করার অভিযোগ পুরোনো। নিজ বাড়িতে অজ্ঞাত পরিচয়ের তিনটি মেয়ে রেখে মিনি পতিতালয় বানিয়েছেন আব্দুল আলিম। দিন-রাত অজ্ঞাত ব্যক্তি-সহ সাদা পোশাকে প্রশাসনের লোকজনেরও যাতায়াত রয়েছে তার বাড়িতে। এ ব্যাপারে (রাসিক) ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন বলেন, আলিম একজন পুলিশের কথিত সোর্স। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে আমার কাছে। তার বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে কয়েকটি মেয়ে রেখে চালাচ্ছে অসামাজিক কার্যকোলাপ। তাদের দিয়ে দেহ ব্যবসাসহ সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে ব্ল্যাক মেইল করা হচ্ছে। এছাড়াও বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাকে একাধিকবার নিষেধ করার পরও বন্ধ হচ্ছে না তার পুরোনো কার্যকলাপ। তিনি আরও বলেন, আলিমের সার্বিক বিষয়গুলি নিয়ে আরএমপি পুলিশ কমিশনার মোঃ আনিসুর রহমানকে অবগত করবো এবং তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ারজন্য অনুরোধ জানানো হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিরোইল কলোনী ৪ নং গলির এক ব্যক্তি বলেন, আলিম তার বাসার দুটি নারী ভাড়াটিয়া দিয়ে আমাকে ফাসিয়ে ৪০ হাজার টাকা আদায় করেছে। নিজের ইজ্জতের ভয়ে এতোদিন মুখ বন্ধ করেছিলাম। ৪ নং গলির আকলিমা বেগম নামের এক সিডিসি সদস্য জানান, পুলিশের সোর্স আলিম একদিন হঠাৎ আমাকে ফোন করে বলে আমি নাকি মাদকের ব্যবসা করি। তাই ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। নইলে গ্রেফতার করার হুমকি প্রদান করে সে। এঘটনায় আকলিমা বাদি হয়ে আলিমের বিরুদ্ধে চন্দ্রীমা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। হাজরাপুকুর এলাকার সাদ্দাম হোসেন বলেন, ইয়াবা দিয়ে আমাকে ফাসানোর ব্যার্থ চেষ্টা করছিলো পুলিশের সোর্স আলিম। ওই সময় স্থানীয়দের তোপের মুখে আমাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। এব্যাপারে চন্দ্রিমা থানার ওসি তদন্ত মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন, উভয় পক্ষের অভিযোগ পাওয়া গেছে, তবে তিনি দাবি করে বলেন আলিম থানার সোর্স না। তবে আলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওসি।