সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২০ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
রাজশাহীর পুঠিয়ায় যত্রতত্র ইটভাটা স্থাপন করে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র, ইট পোড়ানোর লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের সার্টিফিকেট ছাড়াই ইটভাটার মালিকরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মানছে না ইট পোড়ানোর সঠিক বিধিমালা।
ইটভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুত আইন ২০১৩-এর ৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে কাঠ ব্যবহার করেন, তাহলে ওই ব্যক্তি তিন বছরের কারাদন্ড অথবা তিন লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার ১৭টি ইটভাটার মধ্যে মেসার্স মদিনা ব্রিকস, মডার্ন ব্রিকস, সুপার ব্রিকস নামের ইটভাটাগুলো ইট পোড়ানোর জন্য জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়াচ্ছে। ভাটার আশপাশে কাঠ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় বায়ুদূষণ হচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।
এদিকে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী, ইটভাটার মাটি সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু কোন রকম অনুমতি ছাড়াই এ উপজেলায় গত কয়েক বছর ধরে প্রতি মৌসুমে কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কেটে নিচ্ছে ইটভাটার মালিকরা। তবে শিলমাড়িয়া, ভাল্লুকগাছী এবং বেলপুকুরিয়া এলাকার কৃষিজমির মাটি সবচেয়ে বেশি কাটা হচ্ছে। মূলত ভাটার মালিক এবং মোল্লাপাড়া ও পচামাড়িয়া এলাকার হান্নান, হাসেম, লতিফসহ আরও কয়েকজন মাটিখেকো দালালদের প্রলোভনে পড়ে কৃষকরা জমির টপ সয়েল বা উপরিভাগের মাটি বিক্রি করছেন। এর ফলে ফসলি জমির উর্বরাাশক্তি হ্রাস পাচ্ছে।
সূত্রমতে, পুঠিয়ায় চারটি ভাটার লাইসেন্স আছে আর বাকিগুলোর কোনো লাইসেন্স নেই। কীভাবে চলে প্রশ্ন করা হলে ইটভাটার মালিকরা জানান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং বন বিভাগ থেকে শুরু করে প্রতিটি সেক্টর ম্যানেজ করেই ভাটা পরিচালনা করা হয়ে থাকে। আর এসব ম্যানেজ করে থাকেন উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি নাসির উদ্দিন মন্ডল ও সেক্রেটারি বেলাল মন্ডল। পুঠিয়া উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সেক্রেটারি বেলাল মন্ডল বে-আইনিভাবে কাঠ পোড়ানোর কথা স্বীকার করে বলেন, কয়লার সঙ্কট তাই সবগুলো ভাটাতেই কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব মালিকের আছে। সরকার দুই বছরের মধ্যে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো ভাটাগুলো বন্ধ করে দিবে। তাই কারও কাগজপত্র নবায়ন নাই। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ বসাক বলেন, গাছ পোড়ানোর বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে সব ভাটায় অভিযান চালিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক নীল রতন সরকার বলেন, আমরা খুব শিগগিরই এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবো। অবৈধভাবে ইটভাটা চালানোর কোনো সুযোগ নাই।