শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
রাজশাহীর পুঠিয়ায় দীর্ঘদিন থেকে পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ ভবনগুলো তদারকি করছেন না কর্তৃপক্ষ। যার কারণে ওই ভবনগুলোতে এলাকার চিহ্নিত বখাটে যুবকরা দিনের বেশির ভাগ সময় সেখানে অবস্থান করছে।
স্থানীয়রা বলছেন, একেকটি পরিত্যক্ত ভবনের একেক রূপ। সেখানে বেশিরভাগ সময় চলে মাদকের আড্ডা ও অসামাজিক কাজ। বাখাটেদের উৎপাতে চরম আতঙ্কে রয়েছেন আশে পাশের সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১৬টি পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে। এর মধ্যে পুঠিয়া চারআনী রাজপরগণা, পুঠিয়া স্টেডিয়াম ভবন, ঝলমলিয়া ডাক বাংলো, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের অধিনে ৫টি গণমিলনায়তন, রাজশাহী চিনিকলের পুঠিয়া সাবজোন এলাকায় একটি আবাসিক কোয়ার্টার ও পৌরসভাসহ ইউনিয়ন এলাকায় ৫টি আখ ক্রয়কেন্দ্রের স্থায়ী ভবন।
সরোজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পরিত্যক্ত ভবনগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বেশিরভাগ অংশ জরাজীর্ণ। ভবনের ভেতর ও বাহিরে আগাছায় পরিপূর্ণ। ভবনগুলো পুরোপুরি অরক্ষিত। সেগুলোর দরজা-জানালা অনেক আগেই খুলে পড়ে গেছে। প্রতিটি ভবনের ভিতরে লোকজন অবাধে যাতায়াত করছে। আবার কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় স্থানীয় কিছু লোকজন ভবনের ইট ও নির্মাণকৃত বিভিন্ন সামগ্রী খুলে নিয়ে যাচ্ছে।
রুবেল হোসেন নামের স্থানীয় একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, চারআনী রাজপরগনা এলাকার পুরো অংশ অরক্ষিত। সেখানে দিনের বেশিরভাগ সময় মাদক ব্যবসায়ীদের আড্ডা বসে। মাঝে মধ্যে বখাটে ছেলেরা সেখানে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকে। পরগণার সাথে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কাজ চলে কিন্তু তারা কোনো প্রতিবাদ করেন না। অপরদিকে পুঠিয়া সাবজোন অফিসের সাথে আবাসিক কোয়ার্টার, স্টেডিয়াম ভবন ও ডাক বাংলোর প্রায় একই অবস্থা।
নাম প্রকাশ না করা সর্তে ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন, সমাজ সেবা অফিসের ইউনিয়ন গণমিলনায়তন ও আখ ক্রয় কেন্দ্রের একেকটি পরিত্যক্ত ভবনের ভেতরে ভয়ঙ্কররূপ দেখা যায়। সেখানে এলাকার চিহ্নিত বখাটেরা গোপন আড্ডা খানা গড়ে তুলেছে। স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতার মদদে তারা দিনে-রাতের বেশিরভাগ সময় সেখানে মাদক-জুয়ার আসরসহ আসামাজিক কাজ করে। তাদের দাপটের কারণে সমাজের লোকজন কোণঠাসা হয়ে থাকেন। এ বিষয়গুলো মাঝে মধ্যে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভা ও থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। তবে কোনোভাবেই অসামাজিক কাজ প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না।
রাজশাহী চিনিকলের পুঠিয়া উপজেলা সাবজোন কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান বলেন, আমাদের ভবনগুলোতে অসামাজিক কার্যক্রম হচ্ছে এমন অভিযোগ এখনো কেউ করেননি। আর যেহেতু পরিত্যক্ত ভবনগুলোর দরজা-জানালা নেই তাই সেখানে যেকোনো কিছুই হতে পারে। তিনি বলেন, নানামুখি জটিলতার কারণে বর্তমানে চিনিকলের অবস্থা খুবই খারাপ। তার ওপর কর্মচারিদের বেতন ঠিকমত দিতে পারেন না। এর মধ্যে পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ ভবনগুলো এই মুহূর্তে রক্ষণা-বেক্ষণ করা হয়তো সম্ভব নয়। তবে ওই ভবনগুলোর বিষয়ে আমাদের কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।
তবে প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা বলেন, পুঠিয়া রাজবাড়ির বেশিরভাগ অংশে আমাদের নিরাপত্তা কমীরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। আর চারআনী রাজবাড়ি নিয়ে আইনি কিছু জটিলতা আছে। তবে সেখানে এখনো আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়নি। আশা করা যায় অল্প সময়ের মধ্যে আমরা সেখানে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করতে পারবো।
এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহরাওয়াদী হোসেন বলেন, সামাজিক অবক্ষয় রোধে ইতিমধ্যে চিহ্নিত পরিত্যক্ত ভবনগুলোতে নজরদারী করা হচ্ছে। তাছাড়া ওই গ্রæপগুলো ভবনে অবস্থান কালিন সময়ে স্থানীয়দের সহযোগিতা পেলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে।