শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ পূর্বাহ্ন

News Headline :
ইউপি চেয়ারম্যানের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়কের মাটি সরে গিয়ে দূর্ভোগে জনগণের সেবা দেওয়ার জন্যই সরকার আমাকে পাঠিয়েছেঃ-নওগাঁর নবাগত ডিসি রাজশাহীতে শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে শুটার রুবেল পাবনায় সাংবাদিকের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত ও মতবিনিময় করলেন নবাগত জেলা প্রশাসক মধুপুরে বৈষম্যবিরোধী ও কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে  বিএনপির দোয়া  মাহফিল অনুষ্ঠিত  পাবনার হেমায়েতপুরে কারামুক্ত বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংবর্ধনা ও আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্বোধন বাঘাইছড়িতে বিএনপির দুই নেতা বহিষ্কার ডোমারে সীরাতুন্নবী (সাঃ) মাহফিল অনুষ্ঠিত পাবনার সুজানগরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পথসভা অনুষ্ঠিত

রাজশাহী নগরীর পাড়া-মহল্লায় মাদকের ছড়াছড়ি

Reading Time: 3 minutes

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
দেশের মাদকপ্রবণ এলাকার মধ্যে অন্যতম ট্রানজিট পয়েন্ট রাজশাহী। রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী, বাঘা, চারঘাট ছাড়াও নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা মাদকপ্রবণ হয়ে উঠেছে। তবে পুলিশ মাদকের বড় কোন চালান উদ্ধার দেখাতে পারছেনা। প্রতিদিন পুলিশের নিয়মিত অভিযানেও তেমন বড় কোন উদ্ধার হচ্ছেনা। তবে ফেনসিডিলের চেয়ে এখন সবচেয়ে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে মরণনেশা ইয়াবা ও গাঁজা। তবে দামি হলেও ব্যপক চাহিদা রয়েছে হেরোইনের। জেলা ও নগরীর অনেক পাড়া-মহল্লাতেই এখন মাদক বিক্রি হচ্ছে। অল্প পরিশ্রমে বেশি অর্থ কামানোর সুযোগ থাকায় অনেকেই মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়েছে।যেসব এলাকায় মাদকের ব্যবসা হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো, রাজশাহী মহানগরীর দামকুড়া থানার হরিপুর, জাঙ্গালপাড়ায় একাধিক মাদক মামলার ওয়ারেন্টভ‚ক্ত আসামী মাদকের গডফাদার মাসুম ও তার দুই ও রফিকুল এরা সব সময়ই থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে। কাশিয়াডাঙ্গা থানার গুড়িপাড়ায় ২৪ ঘন্টাই পাওয়া যায় সব ধরনের মাদক। নগরীর বোয়ালিয়া থানা এলাকার পাচানিমাঠ, পঞ্চবটি, খরবোনা, কেদুরমোড়, হাদিরমোড়, শহীদ মিনার এলাকার কমেলা, তালাইমারীতে রয়েছে টিপু’র ছেলে শামীম। তবে বোয়ালিয়া থানার মধ্যে বড় ধরনের কোন মাদক কারবারি না থাকলেও খুচরা মাদক কারবারি ও সুদ-কারবারিতে ভরা। এদের প্রায় অধিকাংশই পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা। ঘনবসতি’র কারনে তাদের পুলিশ চেষ্টা করেও তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনা।মতিহার থানা অঞ্চলে মধ্যে রয়েছে জাহাজঘাট, সাতবাড়িয়া, ডাসমারী স্কুল মোড় এলাকার জাকা, পালা। মালেকের মোড়ের মালেকের ছেলে, সুরাপানের মোড় ও চর-শ্যামপুর, মিজানের মোড় কাঁদো, মেরি, আসলাম, রবিউল, মিঠু, কামরুল, এলাকায় বড় মাপের মাদক-কারবারি থাকলেও রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে। মতিহার থানার তালিকায় ২৭০ জন মাদক কারবারি দেখা যায় ২০২২ সালে বর্তমানে আরও নতুন নতুন মাদক-কারবারি বেড়েছে।কাটাখালি থানা অঞ্চলে বড় বড় মাদক কারবারি রয়েছে যারা রিতি মতো ট্রাক, যাত্রীবাহি বাস, মাইক্রো, প্রাইভেটকার যোগে মাদকের বড়বড় চালান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার করে থাকে। এছাড়া শ্যামপুর, বেলঘরিয়া, নওদাপাড়া, চৌমহিনি, টাংগন এসব এলাকায় ২৪ ঘন্টাই হাত বাড়ালে মেলে মাদক। রাজশাহী শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সি ব্যক্তি, তরুণ ও যুবকেরা দ্রæতগামী মোটরসাইকেল হাকিয়ে গিয়ে সেবন করছে মাদক। অপরদিকে, মাদকের রাজধানী গোদাগাড়ী হতে কেটি কেজি হেরোইনের চালান যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গোদাগাড়ী থানা অঞ্চলে অনেক বড় বড় মাদক কারবারি রয়েছে। তার মধ্যে অন্যত্তম মাদক মাফিয়া, শীষ মোহাম্মদ ও তার ভাই হায়দার রাজশাহীতে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছে। রাজশাহীতে থেকেই গোদাগাড়ীর মাদক নিয়ন্ত্রণ করছে। সম্প্রতী হায়দারের গোদাগাড়ীর বিলাসবহুল বাড়ির বসত ঘরে কোটি ৪০ লাখ টাকা মূল্যের হেরোইন উদ্ধার হয়েছিলো। জানা গেছে, কিছুদিন পলাতক থাকার পর তারা এখন জামিনে মুক্ত আছে। এছাড়া চারঘাট থানা অঞ্চলে পুরোটাই ভাসছে মাদকে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করা এসব মাদকদ্রব্য বিভিন্ন কৌশলে ট্রাক অথবা বাসে পৌঁছে যাচ্ছে নিজ গন্তব্যে। এরপর ভাগ ভাগ হয়ে বিভিন্ন খুচরা মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে। মাদক সহজলভ্য হওয়ায় কিশোর গ্যাং সদস্যরাও মাথা চাড়া দিয়েছে। তারা কথিত বড় ভাইদের আদেশে যেকোন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা অধিকাংশই যুবক ও ধনী পরিবারের সন্তান।খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, এসব মাদক ব্যবসায়ীরা নগরের বিভিন্ন থানার অসাধু কিছু পুলিশ সদস্যদের ছত্রছায়ায় ব্যবসা করে আসছে। এসব মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের কিছু অসাধু সদস্যদের নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে এসব কারবার চালাচ্ছে। ইতিপূর্বেও এসব পুলিশ সদস্যদের একাধিক অভিযোগ উঠছে। কিছু পুলিশ সদস্যদের বদলি হলেও অনেকের বিরুদ্ধে এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যদিও আরএমপির উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। কোন মাদক ব্যবসায়ী বা কোন পুলিশ সদস্য এর সাথে জড়িয়ে পড়ে তাহলে কোনভাবে ছাড় দেয়া হবে না।পুলিশের একটি সূত্র বলছে, যারা পুলিশ কন্সটেবল থেকে এএসআই ও পরে পদোন্নতি পেয়ে এসআই হয়েছেন তারাই বেশি অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছেন।র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাবের মতো বড়ো বড় চালান ধরার চেষ্টা করতে পুলিশের প্রতি আহবান জানান তারা।রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জামিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের নতুন পুলিশ কমিশনার স্যার আরএমপি’তে যোগদান করেই মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। কোন মাদক ব্যবসায়ীকেই ছাড় দেয়া হবেনা। মাদক উদ্ধারে আরএমপির পুলিশের অভিযান চলছে। পর্যায়ক্রমে সকল মাদক ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে মাদক নিমূলে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com