বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৯ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
সাঁথিয়া পাবনা, প্রতিনিধি:
অনিয়ম ও দুর্ণীতিবাজ চরিত্রহীণ ,লম্পট আখ্যা দিয়ে সাঁথিয়া সরকারী প্ইালট মডেল ্উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার দেবনাথের অপসারণ দাবী করছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তারা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। এ সময় উভয় পাশে যানজট বেধে যায়।
ঘন্টাব্যাপী এ বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার দেবনাথ একজন দুর্ণীতিবাজ চরিত্রহীন। তিনি একজন শিক্ষক হয়ে কি করে দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে কু- রুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর কথা বলেন। আমরা এর বিচার চাই। তারা বলেন,শুধু তাই নয়, এই প্রধান শিক্ষক বহিরাগত ছাত্রদের বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করিয়ে প্রতিবাদী ছাত্রদের মারধোর করায়। তাঁর নিকট বিচার দিলে -তিনি ধমক দিয়ে সরিয়ে দেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, অবিলম্বে এই চরিত্রহীন লম্পট প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চাই এবং বিদ্যালয়ে আমাদের নিরাপত্তা চাই। দ্রুত এই শিক্ষকের অপসারণ করা না হলে আমরা আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এ ঘটনায় এলাকার সুধিমহল, অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অবিলম্বে এর সুষ্ঠ বিচার দাবী করেন।
অভিযোগে জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী সাঁথিয়া সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে কয়েকদিন আগে বহিরাগতরা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের ইভটিজিং করে। ছাত্ররা প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের মারধোর করে। কয়েকদিন আগে আলামিন নামে এক শিক্ষার্থীর জামা ছিঁড়ে দেয় বহিরাগতরা। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষককে জানালে তিনি তার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো ছাত্রদের গালমন্দ করে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি নিয়ে গত বুধবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করতে পাঠান। মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা আব্দুল কাদের সরজমিনে ওই বিদ্যালয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর কথা বলার অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী নিজেই এবং এর বিচার চান ওই শিক্ষার্থী। এ সময় তিনি ছাত্রদের আশ^স্ত করেন এবং বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট জানাবেন বলে জানান। পরে দুপুরের দিকে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম জামাল আহমেদ বিদ্যালয়ে যান এবং ছাত্র/ছাত্রীদের শান্ত থাকতে বলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করে,ভয়ভীতি দেখায়। বিদ্যালয়টির কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,প্রধান শিক্ষক কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এককভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে মাত্রাতিরিক্ত টাকা আদায় করে আত্মসাত করছেন।বিদ্যালয়ে সাধারণবিভাগের গণিত শিক্ষককে বাদ রেখে প্রাইভেট পড়ানোর উদ্দেশ্যে তিনি নিজে এবং ভোকেশনাল শাখার গণিত শিক্ষক বাবুল কুমার পালকে দিয়ে সাধারণ বিভাগের ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম/১০ম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছেন। ক্লাসরুটিনে অন্যান্য শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও তিনি চরম বৈষম্য করে থাকেন বলে তারা অভিযোগ করেন। কোন শিক্ষক এর প্রতিবাদ করলে তাদেরকে তিনি বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ অশালীন মন্তব্য করেন বলে জানান ওই শিক্ষকরা। তারা জানান,গত ২০১৮ সালে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি তাকে পদচ্যুত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ বরাবর পত্র দিয়েছিল।কিন্তু অদৃশ্যকারণে তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। ওই বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হাফিজুল কবীর জানান,আমি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কল্যাণ ট্রাস্টের ফান্ডে আড়াই লাখ টাকা রেখে এসেছিলাম। আমি চলে আসার পর আর কোন শিক্ষার্থীকে এ খাত থেকে সুবিধা দেয়া হয়নি।বিদ্যালয়টির একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়,এ বিপুল পরিমাণ টাকা তিনি অত্মসাত করেছেন। এ ব্যাপাারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার দেবনাথ সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তড়িঘরি করে বলেন, এসব কিছু জানি না,আািম বাইরে আছি।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম জামাল আহমেদ বলেন, বিষয়টি শুনেছি। আলোচন্রা মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে।