শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন

News Headline :
পাবনায় “তারুণ্যের উৎসব ২০২৫”: আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে নবাগত জেলা প্রশাসকের কর্মদিবস শুরু!! গোবিন্দগঞ্জে ত্যাগী নেতাদের মাঝে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ ১২০ শিক্ষার্থীদের পথচলা পুরাতন কাঠের তৈরি সাঁকো ভাঙ্গলেই সমস্যা হবে শেরপুরে নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকে দুর্বৃত্তদের আগুন লাগানোর চেষ্টা মাদক সমাজের ক্যান্সার এটা প্রতিরোধে প্রশাসনের অনিহা-শিমুল বিশ্বাস গণমাধ্যমে বিকৃত তথ্য প্রচার ইসলামপুরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর পক্ষ থেকে প্রতিবাদী ব্রিফিং কৃষি অফিসের সামনে থেকে প্রণোদনার সার-বীজ পাচার রাজনৈতিক দলের পদধারী কেউ প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির কোনো পদে থাকতে পারবে না-সারজিস আলম গাবতলীতে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের দাবিতে শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ এই জনপদকে যারাই পদদলিত করেছে বাঙ্গালি তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছে-শিমুল বিশ্বাস

শীতে অসহায় দিনমুজুররা গ্রাম থেকে কাজের আশায় এসে ফিরছেন খালি হাতে

Reading Time: 2 minutes

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
রাজশাহী মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান শহিদ কামারুজ্জামান চত্বর। এখানে ভোর থেকে জটলা বেঁধে থাকে দিনমজুররা। এই স্থানসহ আরও কয়েকটি স্থান থেকে দিনমজুরদের দৈনিক চুক্তিভিত্তিক রাজমিস্ত্রীর কাজে নিয়ে যান অনেকে। তবে বেশ কয়েকদিন থেকে তীব্র শীতের মাঝে তারা আর কাজ পাচ্ছেন না। শনিবার (২০ জানুয়ারি) শহিদ কামারুজ্জামান চত্বর ঘুরে এমনই দেখা গেছে। পুঠিয়া উপজেলার মহেন্দ্রা গ্রাম থেকে ভোরে সাইকেল চালিয়ে এসেছেন দিনমজুর আব্দুল সালাম। গত চারদিন থেকে তিনি কোনো কাজ পাচ্ছে না। ভোর ছয়টায় এসে দুপুর ১২টার দিকে তিনি খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। তার দিনের রোজগারে চলে পুরো পরিবারের খরচ।
তিনি বলেন, প্রতিদিন ভোরবেলায় কাজের আসায় এখানে আসছি। ফজরের আগে সাইকেল নিয়ে বের হচ্ছি। এখানে এসে ছয়টায় পৌঁছাচ্ছি। দুপুর পর্যন্ত বসে থেকেও কেউ কাজে নিচ্ছে না। সেভাবে কাজও পাওয়া যাচ্ছে না। ওদিকে বাড়িতে আমার আশায় সবাই বসে থাকে। একটা কাজ পেলে হয়তো বাড়িতে চুলা জ্বলবে, না হলে জ্বলবে না। শুধু আব্দুস সালাম নয়, তার মতো শতাধিক দিনমজুর এই শীতে কাজ পাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন। দিনমজুররা প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন এলাকায় কাজের জন্য বসেও থাকছেন। কাজ না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তাদের। এই দিন মজুররা বলছেন, শীতের কারণে আমাদের কাজ পাওয়া যাচ্ছে না। আবার এই সময় জমিতেও কাজ নাই। আগামী বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ্যর আগে কাজ পাওয়া সম্ভব না। তখন শুধু ধান কাটার জন্য শ্রমিক নেওয়া হয়। শনিবার সকালে রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, মোটরসাইকেল বা যানবাহন থামলেই দিনমজুররা সেখানে ভিড় করছেন। অনেকটা কাজ পাওয়ার আশায় ছুটে যাচ্ছেন। কিন্তু কাজ না পাওয়ায় হতাশা নিয়ে আবার ফিরে আসছেন। নিজেদের মধ্যে আলোচনাও করছেন। পুঠিয়ার বেলপুকুর এলাকা থেকে বাইসাইকেল চালিয়ে নগরীর কামারুজ্জামান চত্বরে এসেছেন মুনতাজ আলী। তিনি প্রায় ২০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে আসেন প্রতিদিন। তিনি বলেন, শীত শুরু হওয়ার পর তারা খুবই দুর্বিষহ জীবন পার করছেন। কোনো কাজ না পেয়ে গত আটদিন বাড়ি ফিরে গেছি। আবার রান্নাবান্না করার মতো কিছু না থাকায় কাজের সন্ধানে এসেছি। আমি নিত্যপণ্য নিয়ে বাড়ি না ফিরলে আমার পরিবারের সদস্যদের অনাহারে থাকতে হবে। মনতাজ বলেন, তিনি কোনো সরকারি ভাতা পান না। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক না থাকলে কোনো সাহায্যও করে না। বেশির ভাগ সময় চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা বিত্তবানরা সরকারি ভাতাসহ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকেন। আমাদের কাছ থেকে তারা শুধু ভোট চান। ভোটের পর তারা আমাদের ভুলে যান।
চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর গ্রামের আরেক শ্রমিক লোকমান আলী বলেন, দিন দিন তাদের কাজের ক্ষেত্র কমে যাচ্ছে। রাজশাহী জুট মিল বন্ধ করে বিপুল সংখ্যক মানুষ বেকার হয়ে গেছে। রাজশাহী সুগার মিল বছরে মাত্র কয়েকদিন চলে। এছাড়া এ অঞ্চলে ভারী কোনো শিল্প নেই। কাজের খোঁজে কোথায় যাবেন এমন প্রশ্ন করেন তিনি। পবা উপজেলার হরিয়ান এলাকা থেকে আসা হজরত আলী বলেন, দশ বছর ধরে তিনি কাজের সন্ধানে রাজশাহী শহরে আসছেন কিন্তু আগে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হননি। গত সপ্তাহে মাত্র দু’দিন কাজ পেয়েছিলাম বলে জানান। নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া। কাজ না থাকলে আমাদের মতো মানুষ বাঁচবে কী করে? সকাল ৮টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত দেখা যায়, যেখানে প্রায় দুশো দিনমজুরের মধ্যে মাত্র ১৬ জনকে কাজে নেওয়া হয়। বাকিরা বেলা পর্যন্ত বসে থেকে চলে যায়।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজীব খান বলেন, আগামী দিনগুলোতে এ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে। তাপমাত্রাও ধীরে ধীরে কমবে। এ মাসের শেষে আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে তাপমাত্রা।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com